মুক্তি দেওয়া ২ জিম্মিকে গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল ইসরায়েল: হামাস

যুদ্ধবিদ্ধস্ত গাজা উপত্যকায় জিম্মি আরও দুই ইসরায়েলিকে মুক্তি দিতে চাইলেও ইসরায়েল সরকার তাদের ফেরত নিতে অস্বীকৃতি জানায় বলে দাবি করেছে ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। যদিও হামাসের এমন দাবিকে 'মিথ্যা প্রচারণা' বলে উল্লেখ করেছে ইসরায়েল।
হামাসের সশস্ত্র শাখা আল-কাসাম ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু ওবেইদা জানান, দুই ইসরায়েলির মুক্তির বিষয়ে গত শুক্রবার কাতারের মাধ্যমে ইসরায়েলকে জানানো হয়। উল্লেখ্য, এদিন গাজায় জিম্মি মার্কিন নাগরিক জুডিথ তাই রানান ও তার মেয়ে নাটালিকে মুক্তি দেওয়া হয়।
এক টেলিগ্রাম বার্তায় গতকাল শনিবার (২১ অক্টোবর) ওবেইদা বলেন, "মানবিক কারণে দুই ইসরায়েলি নওরিত ইতশাক ও ইয়োখেফেদ লিফশিতজকে আমরা মুক্তি দিতে যাচ্ছি। বিনিময়ে আমরা কিছু প্রত্যাশা করি না। বিষয়টি আমরা আমাদের কাতারি ভাইদের জানিয়েছি।"
তবে এই দুই ইসরায়েলির মুক্তির বিষয়টি মিথ্যা বলে দাবি করেছে ইসরায়েল। এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় বলে, "আমারা হামাসের মিথ্যা প্রচারণায় কান দেব না। জিম্মিদের ঘরে ফিরিয়ে আনতে আমরা সব উপায়ে পদক্ষেপ নেবো।" তবে এ বিষয়ে কাতার তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি।
পরবর্তীতে আরেকটি বিবৃতিতে ওবেইদা জানান, তারা আজ রোববারেও ওই দুই জিম্মিকে মুক্তি দিতে প্রস্তুত রয়েছেন।
হামাসের মুখপাত্র খালেদ আল-কাদ্দৌমি আল জাজিরাকে বলেন, ইসরায়েলি সরকার যুদ্ধবন্দিদের মুক্তির বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছে না। দুই জিম্মিকে ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়টি তারা প্রত্যাখ্যান করেছে। এর কারণও তারা জানায়নি।
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারির উদ্ধৃতি দিয়ে একটি জার্মান পত্রিকা জানিয়েছে, "গাজায় সকল যুদ্ধবন্দির শীঘ্রই মুক্তির ব্যাপারে আশাবাদী কাতার। তিনি বলেছেন, আমি প্রতিশ্রুতি দিতে পারছি না যে আজ, আগামীকাল কিংবা পরশুর মধ্যে বন্দিরা মুক্তি পাবেন। তবে আমরা এমন একটি উপায় অবলম্বন করতে যাচ্ছি যাতে করে খুব শীঘ্রই জিম্মিরা, বিশেষ করে বেসামরিক নাগরিকরা মুক্তি পাবেন।"
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে আকষ্মিক হামলা চালায় হামাস। এ সময় তারা প্রায় ২১০ জনকে তুলে নিয়ে যায়। তাদের মধ্যে ইসরায়েলি সেনাসহ নারী, শিশু, বৃদ্ধ ও অন্যান্য দেশের নাগরিকও রয়েছেন।
হামাসের এ হামলায় প্রায় ১,৪০০ জন নিহত ও সাড়ে তিন হাজার জন আহত হন। জবাবে ইসরায়েলেও গাজা উপত্যকায় ব্যাপক হামলা শুরু করে। টানা দুই সপ্তাহ ধরে চলা এ হামলায় এ পর্যন্ত প্রায় ৪,৪০০ জন নিহত এবং অন্তত ১৩,৫০০ হাজার জন আহত হয়েছে। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে উপত্যকার প্রায় ২৪ লাখ মানুষের জীবন।