হাসান নাসরুল্লাহকে হত্যায় কোন ধরনের বোমা ব্যবহার করেছে ইসরায়েল
ইসরায়েলের বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন মধ্যপ্রাচ্যের প্রতিরোধ সংগঠন হিজবুল্লাহ'র প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ। হিজবুল্লাহ'র এই মহাসচিব মুসলিম জাহানে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দীর্ঘ-লড়াই সংগ্রামের জন্য সুবিদিত ছিলেন।
শনিবার তার শাহাদাতের সংবাদ নিশ্চিত করেছে হিজবুল্লাহ। সংগঠনটি এক বিবৃতিতে বলেছে, 'হিজবুল্লাহর মহাসচিব সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ তার মহান, অমর শহীদ সহযোদ্ধাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। তিনি তাদেরকে প্রায় ৩০ বছর ধরে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।'
গতরাতে দক্ষিণ বৈরুতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত হন তিনি। এই হামলায় ইসরায়েল কোন ধরনের বোমা ও বিস্ফোরক ব্যবহার করে– সেসম্পর্কে জানতে সামরিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক এলিজাহ ম্যাগনিয়ারের সাথে কথা বলেছে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা।
তিনি জানান, 'এই হামলায় ৮৫ টন বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়েছে বলে আমাদের জানায় ইসরায়েলি বিমানবাহিনী। সেটাই ছিল এসম্পর্কে আমাদের প্রথম পাওয়া তথ্য। প্রতিটি বোমার ওজন ছিল এক টন করে। তাই এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি তথ্য।'
'এসব বোমার আঘাতে বৈরুতে এক ধরনের ভূকম্পন তৈরি হয়। আমি সেখানকার অনেক অধিবাসীর সাথে কথা বলেছি, (ভূকম্পনের কারণে) যাদের সবার মনে হয়েছে যেন পাশের বাড়িতেই হামলাটি করা হয়েছে। বৈরুতের মতো একটি ঘনবসতির শহরের জন্য তা সত্যিই ভয়াবহ।'
কোন ধরনের বোমা ব্যবহার করা হয়—
ইসরায়েলি বিশ্লেষক এলিজাহ ম্যাগনিয়ার বলেন, আমাদের কাছে দুই ধরনের বোমা ব্যবহারের সুযোগ ছিল, অথবা এই দুটি ধরনের বোমা একইসাথে ব্যবহার করা যেত।
"সেক্ষেত্রে আমেরিকার তৈরি ও ইসরায়েলের অস্ত্রভাণ্ডারে থাকা জিবিইউ-৩১ জেড্যাম (জয়েন্ট ডাইরেক্ট এট্যাক মিউনিশন) ব্যবহার করা হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র এ ধরনের হাজার হাজার বোমা সরবরাহ করেছে, ইতোমধ্যেই গাজার অসংখ্য লক্ষ্যবস্তুতে এসব বোমা ফোলা হয়েছে। অন্য বোমাটি হচ্ছে, ইসরায়েলের অস্ত্র উৎপাদক রাফায়েলের তৈরি স্পাইস-২০০০।"
এলিজাহ বলেন, আমার মনে হয় এই দুই ধরনের বোমা ব্যবহার করা হয়েছে। আর তার ফলেই হামলার পর যে ধরনের ধ্বংস আমরা দেখেছি সেটা হতে পারে– যেখানে বিস্ফোরণের শক্তিতে একটি বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়েছে, যার মধ্যে ধসে পড়েছে আশেপাশের ভবন। আর ঠিক এজন্যই এমন ধ্বংসস্তূপ থেকে সব মরদেহ খুঁজে বের করা বা উদ্ধার করতে অনেক অনেক সময় লাগবে।