অপরিণামদর্শী নীতির কারণে বাংলাদেশ এখন দিল্লির গলার কাঁটা, এখন যা করতে পারে
দক্ষিণ এশিয়ায় বন্ধুহীন ভারত, খামখেয়ালি যার পররাষ্ট্রনীতি, প্রতিবেশীদের সাথে সম্পর্কের ক্ষেত্রে দশকের পর দশক ধরে একতরফাভাবে কেবল ভারতীয় স্বার্থ আদায়কে রাখা হয়েছে। আর নয়াদিল্লির একচোখা এই দৃষ্টিভঙ্গীর সবচেয়ে বড় শিকার বাংলাদেশ। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে বাংলাদেশের রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রবেশ করে ভারতের স্বার্থরক্ষাকারী গোষ্ঠী। তার ওপর ১৫ বছরের সীমাহীন ও লাগামছাড়া দুর্নীতি দেশের অর্থনীতিকে রিক্ত করেছে। জনসাধারণের জীবনযাপনকে করে তুলেছে দুর্বিষহ। এরমধ্যেই ঘটেছে গণঅভ্যুত্থান। তাতেই সাউথ ব্লকে এখন আহাজারির রোল। এই প্রেক্ষাপটে, ভারতের জন্য ঘটে যাওয়া পরিবর্তন ও বাংলাদেশের সাথে সম্পর্কোন্নয়নের প্রস্তাব দিচ্ছেন কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ। মার্কিন থিঙ্ক ট্যাঙ্ক র্যান্ড কর্পোরেশনের নিরাপত্তা বিশ্লেষক ডেরেক গ্রসম্যানের লেখা এমনই একটি নিবন্ধ প্রকাশ করেছে হিন্দুস্তান টাইমস। ডেরেক সেখানে ভারতের জন্য উদ্ভূত নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরার পাশাপাশি– কার্যকর সুসম্পর্ক বজায় রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। তার মতে, দিল্লি যদি তা করতে পারে– তাহলে পরিস্থিতির উন্নতির আশা রয়েছে। একইসাথে ভূরাজনীতির ঝুঁকিগুলোও হ্রাস পাবে।
নিবন্ধটির বাছাইকৃত অংশ অবলম্বনে এবং বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ঘটনার ধারাবর্ণনায় কিছু ব্যাখ্যা যুক্ত করে এটি টিবিএসের পাঠকদের তুলে ধরা হলো–
গত ৫ আগস্ট ভূরাজনৈতিক এক দুঃস্বপ্ন ছিল ভারতের জন্য। ওইদিন দিল্লির অনুগত শেখ হাসিনা— ছাত্রদের নেতৃত্বে এক গণঅভ্যুত্থানের মুখে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান। বর্তমানে সেদেশেই তিনি অবস্থান করছেন। বাংলাদেশে ক্ষমতা গ্রহণ করেছে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার। যে সরকারকে দিল্লি মানতে পারেনি, এবং তাদের নীতি নিয়ে দিল্লির আপত্তি স্পষ্ট। এই সরকারের নীতির বিষয়েও তার আছে উদ্বেগ, যা দিনকে দিন আরো বেড়েছে।
তবে ভারতের উদ্বেগ বা শঙ্কার জায়গাগুলো কিছুক্ষেত্রে যৌক্তিক হলেও— প্রতিকূলতা কাটিয়ে ওঠার সুযোগ আছে তার। বিশেষত যদি সঠিক পদক্ষেপ নেয়।
বাংলাদেশের জুলাই বিপ্লব ভারতের মাথাব্যথা কেন
ভারতের দৃষ্টিভঙ্গিতে এতে তাদের অনেক সমস্যা হয়েছে। টানা ১৫ বছরের বেশি সময়– কারচুপি ও ভোটারবিহীন নির্বাচন করে ক্ষমতায় ছিলেন শেখ হাসিনা। যেখানে নয়াদিল্লির প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সমর্থন ছিল। আর এই সময়টাকে ভারত ও আওয়ামী লীগের সরকার দাবি করেছিল- দুই দেশের সম্পর্কের কথিত 'সোনালী অধ্যায়' হিসেবে। যখন শেখ হাসিনা ভারত যখন যা চেয়েছে তাই দিয়ে গেছেন। তাতে বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষিত হলো কি-না এটি তার কাছে কোনোদিনই গুরুত্ব পায়নি। ফলে এই সময় দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য, আঞ্চলিক সংযোগ (প্রকৃতপক্ষে একতরফা ট্রানজিট) , সীমান্ত নিরাপত্তা ও সন্ত্রাসবাদ-সহ বহু বিষয়ে ভারতের সুবিধামতো সব চুক্তি ও সমঝোতা হয়েছে।
হাসিনা এখন মসনদে নেই। তাই আগের মতো ঘনিষ্ঠ ও ফলপ্রসূ সম্পর্ক বজায় থাকাটাও অনিশ্চিত। যেমন এরমধ্যেই সীমান্ত নীতিতে পরিবর্তন আনার বার্তা দিচ্ছে ঢাকা। অভিযোগ আছে, হাসিনার আমলে সীমান্তরক্ষী বিজিবিকে পৃষ্ঠপ্রদর্শন করতে বলা হতো। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ইতোমধ্যেই বলেছেন, এখন থেকে আর তা হবে না। অভ্যুত্থানের কিছুদিন পরেই ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফকে বাংলাদেশ সীমান্তে একটি কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণে বাধা দিয়েছে বিজিবি।
ভারতকে সন্তুষ্ট রাখতে ইসলামী রাজনীতি ও ধর্মীয় পরিচয়ের ওপর খড়্গহস্ত হয়েছিলেন হাসিনা। জামায়াতে ইসলামী, হেফাজতে ইসলামসহ ছোট-বড় বিভিন্ন ইসলাম ভিত্তিক রাজনৈতিক দল ও সংগঠনকে দমনের হাতিয়ার করা হয় কথিত- 'সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলাকে'।
বাংলাদেশের নতুন সরকার– ইসলামী রাজনীতিকে বাধা দিচ্ছে না। এতেও ক্ষোভ বাড়ছে নরেন্দ্র মোদির উগ্র হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকারের। বাংলাদেশের ইসলামী রাজনীতি সন্ত্রাসবাদী আক্রমণের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে বলে প্রচার করছে ভারত সরকার ও গণমাধ্যম।
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সারাদেশেই দলটির অনেক নেতা-কর্মীর বাড়িতে হামলা হয়, যাদের মধ্যে হিন্দু সম্প্রদায়ের ব্যক্তিরাও ছিলেন। বিচ্ছিন্নভাবে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনাও ঘটেছে– তবে প্রতিবেশীরাই তাদের রক্ষায় এগিয়ে আসেন। তবে ভারতীয় গণমাধ্যম ও সরকার শুধুমাত্র সাম্প্রদায়িক হামলার প্রচার চালায়। এবং বাংলাদেশে সংখ্যালঘু বিশেষত হিন্দুদের নিরাপত্তার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে, প্রধান উপদেষ্টাকে ফোন করে হিন্দুদের রক্ষার আহ্বানও জানান মোদি। পরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকেও বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের নালিশ করেছেন।
ভারতের এই ধরনের অপপ্রচারকে সিংহভাগ বাংলাদেশি ভালোভাবে নেননি। দীর্ঘদিনের বঞ্চনা ও অন্যায়ের কারণে– এদেশে ভারতবিরোধী যে মনোভাব গড়ে উঠেছে– সেটি কমাতেও তা সাহায্য করেনি। তাছাড়া, শেখ হাসিনাকে অচিরেই ফেরত চাইতে পারে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি এরমধ্যে বলেছে, "হাসিনাকে বৈধভাবে হস্তান্তর করতে হবে। দেশের মানুষ তার বিচার দেখতে চায়। তাকে এই বিচারের মুখোমুখি হতে দিতে হবে।"
এদিকে অতিবৃষ্টির পানি জমিয়ে হঠাৎ করেই ডম্বুর বাধের গেইট খুলে দিয়ে বাংলাদেশের বিশাল অঞ্চলে আকস্মিক বন্যা সৃষ্টির অভিযোগ আছে ভারতের বিরুদ্ধে। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে নাখোশ দিল্লি প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়েই একাজ করেছে – বলে বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ বিশ্বাস করে। আকস্মিক এই বন্যায় অন্তত ৫৭ জনের মৃত্যু ও ১৪ হাজার কোটি টাকার সম্পদের ক্ষতি হয়েছে। এই বন্যা মানুষের মধ্যে ভারত সম্পর্কে আরো নেতিবাচক ধারণাকেই উস্কে দিয়েছে।
আর সবশেষ ও সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তার কারণ হলো– চীন। দিল্লির ভয়, নতুন সরকারের সাথে খাতির জমিয়ে ভূকৌশলগত সুবিধা নিজের ঘরে তুলবে চীন। তাছাড়া, ইতোমধ্যেই চীনা অস্ত্রের দ্বিতীয় বৃহৎ আমদানিকারক বাংলাদেশ। এখন ঢাকা যদি নয়াদিল্লিকে প্রতিপক্ষ মনে করে, তাহলে সেখানে নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সম্পর্ক আরো দৃঢ় করার সুযোগ পাবে বেইজিং। ভারতকে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যেই ব্যস্ত রাখতে– বহু দশক ধরেই পাকিস্তানকে কাজে লাগাচ্ছে চীন। যদিও ভারতের পূর্ব সীমান্তে বাংলাদেশকে একইভাবে ব্যবহার করতে পারেনি বেইজিং। তবে ভারত দায়িত্বশীল আচরণ করা না শিখলে সেই ঝুঁকিও থেকে যাচ্ছে।
চট্টগ্রাম, মোংলা, সোনাদীয়া-সহ বাংলাদেশে বেশকিছু সমুদ্র বন্দর উন্নয়ন কাজ বাগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছে চীন। উদ্দেশ্য ছিল একটাই বঙ্গোপসাগরে তার উপস্থিতি নিশ্চিত করা। ভারত মহাসাগরে 'স্ট্রিং অব পার্ল' খ্যাত তার কৌশলের বাস্তবায়ন, যেখানে এই বন্দরগুলোর নেটওয়ার্ক কাজ করবে। এতে চীনা নৌবাহিনীও যে সুবিধা পাবে, তার দৌলতে কোণঠাসা রাখা যাবে ভারতকে। ইতোমধ্যে ভারত মহাসাগরে পাকিস্তানের গোয়াদার, শ্রীলঙ্কার হাম্বানটোটা ও মিয়ানমারে চাওকপিউ বন্দর নির্মাণ ও পরিচালনা কাজ করেছে চীন।
নয়াদিল্লির আরো শঙ্কা বাংলাদেশের তার করা অবকাঠামো প্রকল্পগুলো চীনের দখলে যেতে পারে। এমনকী ভবিষ্যতে প্রকল্প গ্রহণের বিষয়েও ঢাকা হয়তো বেইজিংকে অগ্রাধিকার দেবে। হাসিনা যতদিন ক্ষমতায় ছিলেন, তখন বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ চীনকে দেওয়া হলেও – ভারতই ছিল তার পছন্দের অংশীদার। কিছু বৃহৎ প্রকল্পের কাজ তারপরেও চীন পায়, যেহেতু ওই ধরনের বিনিয়োগের সামর্থ্য বা মানসিকতা দিল্লির নেই। তাই যেখানে যখন সুযোগ ভারতকে দেওয়া হয়েছে প্রকল্প কাজ। যেমন চীনের সাথে কথা হলেও– তিস্তা জলাধার প্রকল্পের কাজ পরে ভারতকে দেওয়া মনস্থির করেছিলেন হাসিনা।
এখানে ভারতের জন্য বিপদ হলো– বাংলাদেশে চীনের নতুন প্রকল্পও তার জন্য নতুন দুর্বলতার কারণ হবে, বিশেষত যদি তা হয় বঙ্গোপসাগরে বন্দর সংক্রান্ত সুবিধার দিক থেকে।
এতকিছুর পরেও ভারত সফলভাবে এখান থেকে বেড়িয়ে আসতে পারে। বাংলাদেশের সাথে ভারতের দীর্ঘদিনের ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক ও ভাষার সংযোগ আছে। এর আগেও বিভিন্ন সরকারের সময়ে কমবেশি সৌহার্দ্যপূর্ণ ছিল দুই রাষ্ট্রের সম্পর্ক। ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার, এবং বিএনপি– উভয়েই ভারতের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক চেয়েছে। তবে এই সম্পর্ক সমতা ও ন্যায্যতার ভিত্তিতে হতে হবে বলে মনে করেন ড. ইউনূস।
সম্পর্ক উন্নয়নের একটি রাস্তা বাৎলে দিয়ে সম্প্রতি তিনি বলেন, 'বাংলাদেশ তাকে (শেখ হাসিনা) ফেরত না চাওয়া পর্যন্ত যদি ভারত তাকে রাখতে চায়, তবে শর্ত হলো তাকে চুপ থাকতে হবে।'
ভারতে শেখ হাসিনার অবস্থান নিয়ে কেউ স্বস্তিতে নেই মন্তব্য করে ড. ইউনূস বলেন, 'ভারতে তার অবস্থান নিয়ে কেউই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছে না। কারণ আমরা তাকে বিচারের জন্য আবার ফিরিয়ে আনতে চাই। তিনি ভারতে আছেন এবং মাঝেমধ্যে কথা বলছেন, যা সমস্যা তৈরি করছে। তিনি যদি চুপ থাকতেন, তাহলে আমরা তা ভুলে যেতাম, তিনি যেমন নিজের জগতে থাকতেন, তেমনি জনগণও তা ভুলে যেত। কিন্তু ভারতে বসে তিনি কথা বলছেন এবং নির্দেশনা দিচ্ছেন। এটা কারো ভালো লাগে না।'
তবে ড. ইউনূস যে সমতা ও ন্যায্যতার ভিত্তিতে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক চেয়েছেন– সেটি করা ভারতের পক্ষে অসম্ভব না হলেও– পুরো বিষয়টি তাদের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে।
নতুন বাস্তবতাকে স্বীকার করে দিল্লির উচিত হবে– পরিণামদর্শী হওয়া। ইউনূসের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের ভালো সম্পর্ক থাকায়– দ্বিপাক্ষিক নানান বিষয়ে কৌশলগত দর কষাকষির জন্য ওয়াশিংটনের মধ্যস্ততা চাইতেই পারে নয়াদিল্লি। তবে চীন ও পাকিস্তানের সাথে মিলে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সরকার পতন ঘটিয়েছে– ভারতের এই ধরনের প্রোপাগান্ডা সেই সম্ভাবনাকে নষ্ট করে আমেরিকাকে দূরে সরিয়ে রাখবে।
বলতে দ্বিধা নেই, বিপ্লব পরবর্তী বাংলাদেশে বহু গুরুতর সমস্যার সম্মুখীন ভারত। তবে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নের সমস্ত উপায় যে তার আছে– সেবিষয়ে নয়াদিল্লির সম্যক অবগত থাকা উচিত। নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বৈঠকের সাইডলাইনে চাইলে ড. ইউনূসের সাথে বৈঠক করতে পারতেন মোদি। বাংলাদেশের এই প্রস্তাবে তিনি সাড়া দেননি, এই ধরনের আচরণ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কোন্নয়নে বাধা হয়ে থাকবে।
তাই দিল্লির পক্ষ থেকে সদিচ্ছার প্রথম পদক্ষেপ হতে পারে– বাংলাদেশ চাইবার আগেই হাসিনাকে ফেরত দেওয়া– যাতে সেখানে তার বিচার করা সম্ভব হয়। এটা বাংলাদেশে ভারতের ভবিষ্যৎ অভিসন্ধি সম্পর্কে সন্দেহ দূর করে– দ্বিপাক্ষিক আস্থা বাড়ানোর সহায়ক হবে। একইসঙ্গে বাংলাদেশকে পাকিস্তান বা আফগানিস্তানের মতো ইসলামী জঙ্গি রাষ্ট্র বলে যেসব প্রচার চালানো হচ্ছে– তারও লাগাম টেনে ধরা উচিত। এই ধরনের চরম নেতিবাচক প্রচার না করেও ভারত সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার বিষয়ে কথা বলতে পারে।
সবচেয়ে বড় কথা, ভারতকে দীর্ঘমেয়াদের কথা ভাবতে হবে।
আফগানিস্তানে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর কাবুলে তার দূতাবাস খোলা রেখেছিল ভারত। একইসময়ে গোপনে তালেবান সরকারের সাথে আলোচনা চালিয়ে গেছে, যেখানে তার দূতাবাস সঙ্গেসঙ্গে বন্ধ করে সরে আসাটাই ছিল প্রত্যাশিত।
আবার মোহাম্মদ মুইজ্জু ক্ষমতায় আসার পরে মালদ্বীপের সাথে ভারতের সম্পর্কের ব্যাপক অবনতি হয়েছিল। পরে সক্রিয় চেষ্টার মাধ্যমেই এর মোড় পরিবর্তন করতে পেরেছে দিল্লি। চীনের বিষয়ে বন্ধুসুলভ মুইজ্জুর সাথে ভারত একটি কার্য-সম্পর্কই শুধু তৈরি করেনি, এমনকী নতুন একটি মুক্ত-বাণিজ্য চুক্তিও খুব শিগগিরই স্বাক্ষর হবে দুই দেশের মধ্যে। অথচ মুইজ্জু 'ইন্ডিয়া আউট' মূল এজেন্ডা হিসেবে রাখেন তার নির্বাচনী প্রচারণায়। সেখান থেকে এমন উন্নতিকে বহুদূর এগিয়ে আসা বলতে হবে। ফলে মালদ্বীপের পররাষ্ট্রনীতিতে ভারত এখনও নিজেকে বড় বিষয় হিসেবে ধরে রাখতে পেরেছে।