হারিয়ে যাওয়া গুস্তাভ ক্লিমটের চিত্রকর্ম বিক্রি হলো ৩০ মিলিয়ন ইউরোতে
কিছুদিন আগেই খোঁজ মিলে অস্ট্রিয়ান শিল্পী গুস্তাভ ক্লিমটের আঁকা দুর্লভ একটি চিত্রকর্মের। প্রায় ১০০ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া 'পোর্ট্রেট অফ ফ্রউলিন লিজার' চিত্রকর্মটি ইম কিনস্কি অকশন হাউজে বিক্রি হয়েছে ৩০ মিলিয়ন ইউরোতে। খবর বিবিসি'র।
হারিয়ে যাওয়ার আগে 'ফ্রাউলিন লিজার'-এর প্রতিকৃতিটি এক সময় অস্ট্রিয়ার একটি ইহুদি পরিবারের কাছে ছিল এবং ১৯২৫ সালে শেষবার জনসমক্ষে দেখা গিয়েছিল। এরপর চিত্রকর্মটির ভাগ্যে কী ঘটেছিল তা নিয়ে ধোঁয়াশা থাকলেও নিলামে তোলা মালিকরা জানিয়েছিলেন চিত্রকর্মটি ১৯৬০ সাল থেকে তাদের পরিবারের কাছে ছিল।
চিত্রকর্মটি সম্পর্কে অনেক প্রশ্ন রয়েছে এবং প্রতিকৃতির মহিলাটি কে, পাশাপাশি নাৎসি যুগে চিত্রকর্মটির কী হয়েছিল তা নিয়েও চলছে বিতর্ক। প্রতিকৃতিটি একসময় লিজার পরিবারের ছিল, যারা ভিয়েনার ধনী ইহুদি শিল্পপতি ছিলেন। অনেকেই মনে করছেন ছবির মেয়েটি ধনী ইহুদি শিল্পপতি অ্যাডলফ বা জাস্টাস লিজারের পরিবারের কেউ হবে।
শিল্প ইতিহাসবিদ টোবিয়াস ন্যাটার এবং আলফ্রেড ওয়েডিঙ্গার বলেছেন যে চিত্রকর্মটি অ্যাডলফ লিজারের কন্যা মার্গারেথ কনস্ট্যান্স লিজারের।
তবে ভিয়েনার ইম কিনস্কি অকশন হাউস ধারণা করছে যে চিত্রকর্মটি জাস্টাস লিজার এবং তার স্ত্রী হেনরিয়েটের দুই কন্যার মধ্যে একজন হতে পারে। নিলাম সংস্থাটি এক বিবৃতিতে বলেছে, ১৯২৫ সালের পর চিত্রকর্মটির ঠিক কী হয়েছিল তা এখনও স্পষ্ট নয়।
চিত্রকর্মটির নতুন মালিকদের নামও প্রকাশ করা হয়নি। তবে এটি নতুন ও পুরাতন মালিক এবং অ্যাডলফ এবং হেনরিয়েট লাইজারের আইনি উত্তরাধিকারীদের প্রতিনিধিত্বে ওয়াশিংটন নীতি মেনে বিক্রি হয়েছে। ওয়াশিংটন নীতি হলো মূল মালিকদের বংশধরদের কাছে নাৎসিদের দ্বারা লুট করা শিল্প ফিরিয়ে দেওয়ার একটি চুক্তি।
কিনস্কির আর্নস্ট প্লোয়েল বিবিসিকে বলেন, 'ওয়াশিংটনের নীতি অনুযায়ী পুরো পরিবারের সঙ্গে আমাদের একটি চুক্তি হয়েছে।' আইএম কিনস্কি ক্যাটালগ এই চুক্তিটিকে 'একটি ন্যায্য এবং ন্যায়সংগত সমাধান' হিসেবে বর্ণনা করেছে।
তবে অস্ট্রিয়ান ইহুদি সম্প্রদায়ের প্রেসিডেন্সির নির্বাহী পরিচালক এরিকা জাকুবোভিটস বলেছেন, এখনও অনেক প্রশ্নের উত্তর মেলেনি। তিনি এই পুরো ঘটনা ও প্রক্রিয়াকে একটি নিরপেক্ষ দলের মাধ্যমে খতিয়ে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন।
জাকুবোভিটস বলেছেন, 'শিল্প পুনরুদ্ধার একটি অত্যন্ত সংবেদনশীল বিষয়, সমস্ত গবেষণা সঠিকভাবে এবং বিস্তারিতভাবে করা উচিত এবং ফলাফলটি অবশ্যই বোধগম্য এবং স্বচ্ছ হতে হবে।'
ক্লিমটের শিল্পকর্ম অতীতেও নিলামে বিপুল দামে বিক্রি হয়েছে। তার 'লেডি উইথ আ ফ্যান' চিত্রকর্মটি গত বছরের জুন মাসে ৮৫.৩ মিলিয়ন পাউন্ডে বিক্রি হয়েছিল, যা ইউরোপে নিলামে বিক্রি হওয়া সবচেয়ে মূল্যবান চিত্রকর্মগুলোর একটি।
অনুবাদ: সাকাব নাহিয়ান শ্রাবন