মৃত স্বামীর শুক্রাণু থেকে ৬২ বছর বয়সি নারীকে মা হওয়ার অনুমতি দিলেন আদালত
আদালতের কাছ থেকে মৃত স্বামীর সংগ্রহ করা শুক্রাণু থেকে সন্তানের জন্ম দেওয়ার অনুমতি পেয়েছেন ৬২ বছর বয়সি এক নারী। ঘটনাটি ঘটেছে অস্ট্রেলিয়ায়।
প্রথম সন্তান জন্ম দেওয়ার প্রায় ৩৫ বছর পরে ফের সন্তানের জন্ম দিতে চেয়েছিলেন এক অস্ট্রেলিয়ান দম্পতি। তার জন্য শুক্রাণুও সংগ্রহ করা হয়েগিয়েছিল। তবে সারোগেসির আগেই ঘটে মারাত্মক ঘটনা। সন্তানের নিষিক্তকরণের আগেই মারা যান স্বামী।
স্বামীর মৃত্যুর পরে তার সংরক্ষণ করা শুক্রাণু দিয়ে সারোগেসির মাধ্যমে মা হতে চান ওই নারী। তবে এতে আপত্তি করে হাসাপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এক আইনি নথি অনুসারে জানা গেছে, ওই ষাটোর্ধ্ব দম্পতির দুটি সন্তান ছিল। ২০১৯ সালে এক গাড়ি দুর্ঘটনায় তারা তাদের ৩১ বছরের পুত্রকে হারান, অন্যদিকে ৬ বছর আগে পানিতে ডুবে মারা যান তাদের ২৯ বছরের কন্যা। তাই শেষ বয়সে ফের সন্তানের জন্ম দেওয়ার কথা ভাবেন এই দম্পতি।
বিভিন্ন হাসপাতালে গিয়ে তারা খোঁজ নিতে থাকেন যে ৬১ বছর বয়সি ব্যক্তির শুক্রাণু গর্ভধারণের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে কি না। তবে সন্তানের জন্ম দেওয়ার আগেই মারা যান ওই নারীর স্বামী।
তখন একাই সন্তানের মা হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই নারী। হাসপাতালে গিয়ে মৃত স্বামীর শুক্রাণু সংরক্ষণের দাবি জানান তিনি। কিন্তু এতে রাজি হয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ফলে ওই নারী পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। আদালতকে জরুরি আদেশের আবেদন করেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে গবেষকরা জানিয়েছেন যে মৃত্যুর এক থেকে দুই দিনের মধ্যে প্রজনন টিস্যু সংগ্রহ করা উচিত। নইলে সেই শুক্রাণু দিয়ে আর গর্ভধারণ সম্ভব নয়।
আদালতের বিচারক ফিওনা সিওয়ার্ড এ বিষয়ে মত দিয়েছেন যে শুক্রাণু সংগ্রহ এবং সংরক্ষণ করা যেতে পারে, তবে এটি নিষিক্তকরণের জন্য ব্যবহার করার আগে পৃথক আদালতের একটি আদেশ নিতে হবে হবে।
গত ২১ ডিসেম্বর শুক্রাণু সংরক্ষণের আদেশ দেয় আদালত। পরে এই খবর প্রকাশ্যে আসে।
অস্বাভাবিক হলেও অস্ট্রেলিয়ায় মৃত সঙ্গীদের কাছ থেকে শুক্রাণু সংগ্রহের খবর এর আগেও শোনা যায়। মৃত স্বামীর শুক্রাণু থেকে সন্তান ধারণের প্রচেষ্টার ঘটনা এই প্রথম নয়। এর আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে।
২০২৩ সালের জুনে একজন অস্ট্রেলিয়ান নারীকে তার ২৯ বছর বয়সী স্বামীর শুক্রাণু উদ্ধারের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল, যিনি একটি ভাঙা জানালার কাঁচে ধমনীতে আঘাত পেয়ে মারা গিয়েছিলেন।