বাইডেনের তহবিল সংগ্রহের বক্তৃতার মাঝখানে গাজায় ‘যুদ্ধবিরতি’র দাবি এক ধর্মীয় নেতার

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের তহবিল সংগ্রহের একটি ক্যাম্পেইনে বক্তৃতার মাঝখানে গাজায় যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন ইহুদি এক ধর্মীয় নেতা(রাবায়)। গতকাল (বুধবার) প্রায় ২০০ সমর্থকের উপস্থিতিতে এমন ঘটনা ঘটে।
জেসিকা রোজেনবার্গ নামের ঐ ইহুদি ধর্মীয় নেতা ক্যাম্পেইনে অনেকটা চিৎকার করে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানান। এমনকি এই ঘটনার ফলে ক্যাম্পেইনের স্বাভাবিক কার্যক্রমেও বিঘ্ন ঘটে।
ইহুদি ধর্মীয় নেতা জেসিকা বলেন, "একজন রাবায় হিসেবে আমি আপনাকে এখনই যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাই।"
জবাবে বাইডেন নিজেও চলমান সংঘাতটির কিছু সময় বিরতিকে সমর্থন করেন। তিনি বলেন, "বিরতির মানে হচ্ছে বন্দীদের মুক্ত করার জন্য সময় দেওয়া"। কিছুদিন আগে বাইডেন প্রশাসনের পক্ষ থেকেও এমন কথা বলা হয়েছিল।
এক্ষেত্রে উল্লেখ্য যে, এই বিরতি আনুষ্ঠানিক যুদ্ধবিরতির তুলনায় কম সময়ব্যাপী হয়ে থাকে৷ তবে সেখানেও মানবিক উদ্বেগগুলিকে মোকাবেলা করার প্রচেষ্টা থাকে।
এদিকে বহু প্রতীক্ষার পর কিছুদিন আগে রাফাহ ক্রসিং দিয়ে ত্রানবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশ করে। যদিও সেখানে ত্রানের পরিমান ছিল প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।
এ সম্পর্কে বাইডেন বলেন, "আমিই সেই লোক যে সিসির সাথে কথা বলে তাকে রাফাহ ক্রসিং খুলে দিতে রাজি করিয়েছিলাম।"
এক পর্যায়ে জেসিকা 'এখনই যুদ্ধবিরতি চাই' বলে স্লোগান দিতে থাকে এবং তখন নিরাপত্তা রক্ষীরা তাকে সভাস্থল থেকে বের করে দেয়। অন্যদিকে ক্যাম্পেইনে থাকা অন্যরা স্লোগান দিতে থাকেন যে, "আরও চার বছরের জন্য বাইডেনকে (প্রেসিডেন্ট হিসেবে) চাই।"
জেসিকা একাই নয়, বরং ইউরোপ থেকে শুরু করে সারা বিশ্বজুড়েই গাজায় যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে মিছিল ও বিক্ষোভ হচ্ছে৷ তারই ধারাবাহিকতায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও এই দাবিতে বিক্ষোভ-মিছিল হয়েছে।
রোজেনবার্গ মূলত জিউইশ ভয়েস ফর পিসের হয়ে কাজ করেন। সেখানে এক নিউজ রিলিজের মাধ্যমে বলা হয়, "আমরা গাজায় বন্দী ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য প্রেসিডেন্টের কাছে আহ্বান জানাই। আর আমরা যখন যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছি, তার মানে হচ্ছে আমাদের নামে এবং আমাদের ট্যাক্স দিয়ে এই যুদ্ধ আমরা চাই না।"
এদিকে ফিলিস্তিনের টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি 'প্যালটেল' গতকাল (বুধবার) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) একটি পোস্টের মাধ্যমে জানিয়েছে, অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় যোগাযোগ এবং ইন্টারনেট পরিষেবা সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
প্যালটেল গাজার সর্ববৃহৎ টেলিযোগাযোগ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। এছাড়াও উপত্যকাটিতে খাদ্য, পানি ও বিদ্যুতের অভাবের ফলে তীব্র মানবিক বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে।
ইসরায়েলের হামলায় গাজায় এ পর্যন্ত ৮,৩০০-এর ওপর মানুষ নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে অন্তত ৩ হাজার ৪৫৭ জনই শিশু।
এ পরিস্থিতিতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নাকচ করে দিয়ে বলেছেন, 'এখন যুদ্ধের সময়'। তার মতে, যুদ্ধবিরতি করলে তা থেকে 'শুধু হামাসই লাভবান হবে'।