জাপানে অফিস খুলছে ন্যাটো
ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ঘনিষ্ঠ অংশীদার অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া ও নিউজিল্যান্ডের সাথে সহযোগিতা জোরদার করতে জাপানে একটি লিয়াজোঁ অফিস খোলার পরিকল্পনা করছে ন্যাটো। খবর দ্য গার্ডিয়ান-এর।
আজ বুধবার (৩ মে) নিক্কেই এশিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ন্যাটো ও জাপান পারস্পরিক সহযোগিতা উন্নয়নের পরিকল্পনা করছে। এর আওতায় সাইবার হুমকি, মিথ্যা প্রচারণা মোকাবিলাসহ উদীয়মান এবং হুমকি সৃষ্টিকারী প্রযুক্তিকে মোকাবিলা করা হবে।
আগামী বছরেই জাপানের রাজধানী টোকিওতে খুলতে পারে ন্যাটোর লিয়াজোঁ অফিস, যা হবে এশিয়ায় প্রতিরক্ষা জোটটির এ ধরনের প্রথম দপ্তর স্থাপনের ঘটনা। এই অফিসের মাধ্যমে জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ সহযোগীদের সঙ্গে নিয়মিত শলাপরামর্শ করতে পারবে ন্যাটো।
নিক্কেই এশিয়া জানায়, জাপান ও ন্যাটোর কর্মকর্তারা এ পরিকল্পনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এই পরিকল্পনার বিষয়ে চীন তীব্র নিন্দা জানাতে পারে। এর আগে চীনা সরকার এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে পশ্চিমা সামরিক জোট সম্প্রসারণের বিষয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছিল।
বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত হতে দ্য গার্ডিয়ান-এর পক্ষ থেকে ন্যাটোর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। ন্যাটোর মুখপাত্র ওনা লুঙ্গেস্কু চলমান ঘটনাবলির বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাতে অস্বীকৃতি জানান।
তবে তিনি বলেন, লিয়াজোঁ ব্যবস্থা যাতে 'ন্যাটো এবং তার অংশীদারদের চাহিদা পূরণ করতে পারে, তা নিশ্চিত করতে নিয়মিত এর মূল্যায়ন করা হয়'।
'যেমনটা ফেব্রুয়ারি মাসে টোকিওতে সেক্রেটারি জেনারেল বলেছেন, ন্যাটোর অংশীদারদের মধ্যে জাপানের চেয়ে নিবিড় ও সক্ষম আর কেউ নেই।'
তিনি বলেন: 'আমরা একই মূল্যবোধ, আগ্রহ ও উদ্বেগ শেয়ার করি। এর মধ্যে রয়েছে ইউক্রেনকে সমর্থন করা এবং কর্তৃত্ববাদী সরকারগুলোর সৃষ্ট নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জগুলোর সমাধান করা। এছাড়া আমাদের সম্পর্ক ক্রমশ শক্তিশালী হচ্ছে।'
গত বছর প্রকাশিত ন্যাটোর 'কৌশলগত ধারণা'য় বলা হয়, যদিও 'ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর জন্য প্রধানতম ও প্রত্যক্ষ হুমকি এখনো রাশিয়াই', তবে চীন ইউরো-আটলান্টিক নিরাপত্তায় 'সিস্টেমিক চ্যালেঞ্জ' তৈরি করেছে।
ন্যাটোর অভিযোগ, চীন 'বিদ্বেষপূর্ণ হাইব্রিড ও সাইবার অপারেশন পরিচালনা করেছে' এবং 'নিজের কৌশল, উদ্দেশ্য ও সামরিক গঠন সম্পর্কে সবাইকে অন্ধকারে রেখেছে'।
জবাবে চীন 'আদর্শগত ভেদ তৈরির মাধ্যমে একে অপরকে মুখোমুখি দাঁড় করানোর উসকানি' না দেওয়ার জন্য ন্যাটোকে আহ্বান জানিয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ গত বছর মাদ্রিদে ন্যাটো সামিটে অংশ নেন। এশিয়া প্যাসিফিক পার্টনার্স (এপি৪) জোট — অস্ট্রেলিয়া, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও নিউজিল্যান্ডলের নেতারা পর্যবেক্ষকের ভূমিকায় ছিলেন।
আগামী জুলাইয়ে লিথুয়ানিয়ায় পরবর্তী ন্যাটো সামিটে অংশ নেওয়ার আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন আলবানিজ।
জাপানে নিযুক্ত ড্যানিশ রাষ্ট্রদূত পিটার টাকসো-জেনসেন নিক্কেই এশিয়াকে বলেন, ট্রান্স-ইউরোপীয় নিরাপত্তায় চীনের প্রভাব নিয়ে সৃষ্ট উদ্বেগের অর্থ হলো 'ন্যাটোর জন্য এ অঞ্চলের অংশীদারদের সঙ্গে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা গুরুত্বপূর্ণ'।
তিনি বলেন, প্রস্তাবিত নতুন এ ন্যাটো লিয়াজোঁ অফিস হবে 'জাপান ও ন্যাটোর মধ্যে সম্পর্ক দৃঢ়করণে একটি স্পষ্ট ও প্রকৃত পথ'।