এবার বিক্রমাসিংহের পদত্যাগ দাবি, কাল ভোর ৫টা পর্যন্ত শ্রীলঙ্কাজুড়ে কারফিউ
কিছুতেই কমছে না শ্রীলঙ্কায় চলমান অস্থিরতার উত্তাপ। এবার বিক্ষোভকারীরা প্রধানমন্ত্রী বিক্রমাসিংহের পদত্যাগ দাবি করছেন।
এর মাঝে পরিস্থিতি সামলাতে আগামীকাল ভোর ৫টা পর্যন্ত সারা দেশে কারফিউ জারি করা হয়েছে।
এর আগে ১৩ জুলাই মালদ্বীপে পালিয়ে যান অর্থনৈতিক সংকটে জর্জরিত শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে। তারপর দেশব্যাপী জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে।
কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি, শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ঢুকে পড়ে সেখানকার দখল নেয় বিক্ষোভকারীরা।
জরুরি অবস্থা অমান্য করে, টিয়ার গ্যাস সহ্য করেই জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেদ করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ঢুকে পড়েছেন বিক্ষোভকারীরা।
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ায় প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহেকে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট নিযুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্টের স্পিকার।
তবে নতুন দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরই বিক্রমাসিংহে শ্রীলঙ্কার সামরিক বাহিনীকে 'শৃংখলা ফিরিয়ে আনার জন্য যা যা করা দরকার, তা করার' ক্ষমতা দিয়েছেন।
বিক্রমাসিংহের পদত্যাগও বিক্ষোভকারীদের অন্যতম প্রধান দাবি।
সেনাবাহিনীকে 'শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার' আদেশ প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে এক টেলিভিশন ভাষণে বলেছেন, তিনি সামরিক বাহিনীকে 'শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য যা যা করা দরকার, তা করার' নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীর অফিস এবং অন্যান্য রাষ্ট্রীয় ভবন দখলকারী বিক্ষোভকারীদের এসব জায়গা ছেড়ে দিতে ও কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করতে আহ্বান জানান তিনি।
বিক্রমাসিংহে আরও বলন, 'আমরা আমাদের সংবিধান ছিঁড়ে ফেলতে পারি না। ফ্যাসিস্টদের ক্ষমতা দখল করতে দিতে পারি না আমরা। গণতন্ত্রের জন্য এই ফ্যাসিবাদী হুমকির অবসান ঘটাতে হবে আমাদের।'
কলম্বোতে কর্মরত বিবিসির একজন সংবাদদাতা বলেছেন, বিক্রমাসিংহের সর্বশেষ এই ভাষণ ইঙ্গিত হতে পারে যে সেনাবাহিনী রাজধানীর নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করতে চলেছে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সোফায় ছবি তুলছেন বিক্ষোভকারীরা
বিবিসি জানায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একটি সভাকক্ষে ঢুকে বিক্ষোভকারীরা চেয়ার ও ডেস্কে দাঁড়িয়ে শ্রীলঙ্কার পতাকা নেড়ে চিৎকার করছেন, গান গাইছেন, স্লোগান দিচ্ছেন।
কক্ষের বাইরে একদল সশস্ত্র সৈন্য থাকলেও বিক্ষোভকারীদের আটকানোর কোনো উদ্যোগ নেননি।
অনেক প্রতিবাদকারী সোফায় বসে ছবি তুলছেন।
আরও এক রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ
শ্রীলঙ্কার নতুন একটি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন সম্প্রচার কেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেছে। এই নিয়ে দেশটির দুটি রাষ্ট্রীয় টিভি চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ হলো।
দ্বিতীয় চ্যানেলটির সম্প্রচার বন্ধ হওয়ার মাত্র এক ঘণ্টা আগেই দেশটির বৃহত্তম রাষ্ট্রীয় টিভি চ্যানেল রূপাভাহিনি-র ভবনে দখল করে নেন বিক্ষোভকারীরা।
- সূত্র: বিবিসি