খতনা করাতে গিয়ে মৃত্যু: বিএমডিসিকে ৩ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশ
রাজধানীর মালিবাগে খতনা চলাকালে চতুর্থ শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় জে এস ডায়াগনেস্টিক অ্যান্ড মেডিকেল চেক-আপ সেন্টারের তিন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলকে (বিএমডিসি) নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) এ বিষয়ে বিএমডিসিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল ও ক্লিনিক শাখার পরিচালক ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসানের সই করা এক চিঠিতে এ নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
বিএমডিসি'র ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার বরাবর দেওয়া চিঠিতে বলা হয়েছে, খতনার সঙ্গে জড়িত জে এস ডায়াগনেস্টিক অ্যান্ড মেডিকেল চেক-আপ সেন্টারের চিকিৎসক ডা. ইশতিয়াক আজাদ, ডা. মাহবুব মোর্শেদ ও ডা. এসএম মোক্তাদিরের বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার এবং এ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য এই দপ্তরকে অবহিত করার অনুরোধ করা হলো।
মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) মালিবাগের জেএস ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড মেডিকেল চেকআপ সেন্টারে খতনা করতে গিয়ে আহনাফ তাহমিন আইহাম নামে চতুর্থ শ্রেণির এক শিক্ষার্থী মারা যায়।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে হাতিরঝিল থানায় মামলা করেন।
পরে পুলিশ তদন্ত শুরু করে হাসপাতালের দুই চিকিৎসক এসএম মুক্তাদির ও মাহবুব মোর্শেদকে গ্রেপ্তার করে।
বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এই ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি সিলগালা করে দেয়।
মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাতে অর্থোপেডিক ও ট্রমা সার্জন ডা. এস এম মুক্তাদিরের তত্ত্বাবধানে আহনাফের বাবা-মা তাকে খৎনার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করেন। অস্ত্রোপচারের জন্য রাত ৮টার দিকে আহনাফকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। ঘণ্টাখানেক পর খবর আসে আহনাফ মারা গেছে।
আহনাফের বাবা ফখরুল আলম বলেন, 'আমি চিকিৎসককে সম্পূর্ণ অ্যানেস্থেসিয়া ব্যবহার না করার জন্য বিশেষভাবে নির্দেশ দিয়েছিলাম। আমার সতর্কতা সত্ত্বেও ডা. মুক্তাদির ফুল অ্যানাস্থেসিয়া দিয়েছেন। অ্যানাস্থেসিয়া প্রয়োগের পর আহনাফের আর জ্ঞান ফেরেনি।
তিনি বলেন, খৎনার জন্য ফুল অ্যানাস্থেসিয়া দেওয়া কেন জরুরি ছিল? এর আগেও এটি ব্যবহারের কারণে আরও একটি ছেলে মারা গিয়েছিল। এ কারণেই আমি ডাক্তারের কাছে অনুরোধ করেছিলাম, তাকে ফুল অ্যানাস্থেসিয়া না দেওয়ার অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু তিনি আমার অনুরোধ রাখেননি।
এর আগে গত ৮ জানুয়ারি ঢাকার সাতারকুলের ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ফুল অ্যানেসথেসিয়া নিয়ে খতনা করার পর আয়ান নামে পাঁচ বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়।
আয়ানের বাবা মো. শামীম আহমেদ অভিযোগ করেন, ৩১ ডিসেম্বর থেকে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত ইউনাইটেড হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় চিকিৎসাজনিত অবহেলায় তার ছেলের মৃত্যু হয়েছে।