বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের ফাঁদে পড়লে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্য পূরণ হবে না: সালমান এফ রহমান
গত ১৫ বছরে অর্জিত অসাধারণ সাফল্য তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান মধ্যম আয়ের ফাঁদ এড়াতে সামনের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় যৌথ প্রচেষ্টার উপর জোর দিয়েছেন।
তিনি বলেন, 'যদি আমরা মধ্যম আয়ের ফাঁদে পড়ে যাই, তাহলে ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত জাতি হওয়ার লক্ষ্য অর্জন করতে সক্ষম হব না।'
মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে 'প্রোডাকশন ট্রান্সফর্মেশন পলিসি রিভিউ অব বাংলাদেশ: ইনভেস্টিং ইন দ্য ফিউচার অব আ ট্রেডিং নেশন'- শীর্ষক প্রতিবেদনটি প্রকাশের অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রতিবেদনটি যৌথভাবে উন্মোচন করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি, ওইসিডি উন্নয়ন কেন্দ্রের পরিচালক রাগনহেলোর এলিন আরনাদোত্তির, এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম এবং বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের সদস্য হাফিজুর রহমান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ (ভিডিও) বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
উদ্বোধনী অধিবেশনে বক্তৃতাকালে সালমান বলেন, বাংলাদেশের এলডিসি স্ট্যাটাস থেকে উত্তীর্ণ হওয়ার পরে একটি বড় ঝুঁকি রয়েছে, যদি উত্তোরণের সঙ্গে যে চ্যালেঞ্জগুলো আসে তা মোকাবিলা করা না হয়।
তিনি বলেন, টাকার অবমূল্যায়ন এবং জ্বালানি ও পণ্যের দাম বৃদ্ধি বিশ্বের অন্যান্য অর্থনীতির মতো বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে।
উপদেষ্টা অভ্যন্তরীণ রাজস্ব সংগ্রহ, কর আদায় ব্যবস্থাকে ব্যাপক কর নেটসহ আধুনিকীকরণ এবং রপ্তানি বহুমুখীকরণের ওপর জোর দেন।
তিনি বলেন, টেক্সটাইল খাতে বৈচিত্র্য আনার বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে।
সালমান বলেন, বাংলাদেশকে আরও দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে হবে এবং এখানে ব্যবসা সহজ করার ক্ষেত্রে আরও কিছু করার প্রচেষ্টা রয়েছে।
জলবায়ু বিষয়ে তিনি বলেন, চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরও বেশি কিছু করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, গত ১৫ বছরে দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বাংলাদেশকে অনেক কিছু অর্জনে সহায়তা করেছে।
রাষ্ট্রদূত হোয়াইটলি বলেছেন, আরএমজির শেয়ার এখন অনেক বেশি এবং আরএমজি সেক্টরের মধ্যে বহুমুখীকরণের সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রতিবেদনে বাংলাদেশে এফডিআই-এর গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুসারে, বাংলাদেশের নীতিগত পদ্ধতির আধুনিকীকরণ করা দরকার এবং এটি নীতি সংস্কারের জন্য পাঁচটি অগ্রাধিকার চিহ্নিত করা হয়েছে।
ওইসিডি উন্নয়ন কেন্দ্র 'প্রোডাকশন ট্রান্সফর্মেশন পলিসি রিভিউ অব বাংলাদেশ: ইনভেস্টিং ইন দ্য ফিউচার অব আ ট্রেডিং নেশন'- প্রতিবেদনটি ইউএনসিটিএডি'র সহযোগিতায় সমন্বয় করেছে এবং প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা এবং বাংলাদেশের ও অন্যান্য মূল অংশীজনদের উপস্থিতিতে এর মূল নীতিগত সুপারিশগুলো নিয়ে আলোচনা করেছে।
সমীক্ষার ফলাফলে দেখা যায়, স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দী পর বাংলাদেশ চিত্তাকর্ষক অগ্রগতি অর্জন করেছে।
বাংলাদেশ দরিদ্রতম দেশ থেকে একটি বিশ্বব্যাপী টেক্সটাইল উৎপাদন কেন্দ্রে রূপান্তরিত হয়েছে এবং দেশীয় ওষুধ উৎপাদনের মাধ্যমে প্রায় সম্পূর্ণরূপে চিকিৎসার চাহিদা মেটাতে সক্ষম।
২০২৬ সালে এলডিসি ক্যাটাগরি থেকে উত্তীর্ণ হবে বাংলাদেশ। ২০৪১ সালের মধ্যে উচ্চ আয়ের দেশ হওয়ার লক্ষ্য রয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই উদ্দেশ্যগুলো পূরণ করতে এবং দীর্ঘস্থায়ী চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে (যেমন- জলবায়ু পরিবর্তন বা সংস্থান সংহতকরণ বাড়ানো) বৈচিত্র্য ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে অর্থনৈতিক রূপান্তরকে ত্বরান্বিত করা প্রয়োজন।