৭ বছর পর মিতু হত্যা মামলার আসামি কালু চট্টগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার
সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতু হত্যা মামলার আসামি খাইরুল ইসলাম কালুকে গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই।
শুক্রবার গভীর রাতে চট্টগ্রাম নগরীর আকবরশাহ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারের পর তাকে রাঙ্গুনিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়।
পুলিশের তথ্যমতে, মিতু হত্যাকাণ্ডের পর থেকে দীর্ঘ সাত বছর ধরে পলাতক কালু। আকবর শাহ এলাকায় ব্যক্তিমালিকানাধীন একটি জায়গায় প্রহরী হিসেবে কাজ করতেন তিনি।
রাঙ্গুনিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুব মিল্কী বলেন, মিতু হত্যা ছাড়াও ২০১২ সালে রাঙ্গুনিয়া থানার পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় একটি মামলার পলাতক আসামি ছিলেন কালু। পিবিআই ওই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করে রাঙ্গুনিয়া থানায় হস্তান্তর করেছেন।
মিতু হত্যা মামলা তদন্ত করে অভিযোগপত্র দিয়েছে পিবিআই। সেখানে মিতুর স্বামী সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা বাবুলকেই খুনের পরিকল্পনাকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
খুনের দিন কালু মিতুকে ছুরিকাঘাত করেছিলেন বলে পিবিআইর দাবি।
২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় খুন হন বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতু। বাবুল তার কয়েকদিন আগেই চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় বদলি হয়েছিলেন।
একই বছরের ২৪ জুন রাতে ঢাকার বনশ্রীর শ্বশুরের বাসা থেকে বাবুলকে ঢাকা গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে নিয়ে প্রায় ১৪ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এরপর শুরু হয় নানা গুঞ্জন। তার কিছু দিন পর পুলিশের চাকরিও ছেড়ে দেন তিনি।
বাবুলকে জিজ্ঞসাবাদের দুদিন পর ২৬ জুন মো. আনোয়ার ও মো. মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম নামে দুজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানায় পুলিশ।
তারা আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে বলেন, কামরুল ইসলাম শিকদার মুছার 'পরিকল্পনাতেই' এ হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়। নবী, কালু, মুছা ও ওয়াসিম হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নিয়েছিলেন। নবী ও কালু মিতুকে ছুরিকাঘাত করেন।
খুনের পর মুছার সন্ধান এখনও জানা যায়নি। তার স্ত্রী পান্না আক্তার ২০১৬ সালের ৪ জুলাই চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে দাবি করেছিলেন, ওই বছরের ২২ জুন বন্দর থানার তৎকালীন ওসি মহিউদ্দিন সেলিমের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল বন্দর এলাকায় তার এক পরিচিত ব্যক্তির বাসা থেকে মুছাকে ধরে নিয়ে যান।
তবে পুলিশের পক্ষ থেকে এ দাবি নাকচ করা হয়।
এর তিন মাস পর ২০১৬ সালের ৬ অক্টোবর সিএমপি তৎকালীন কমিশনার ইকবাল বাহার মুছা ও কালুর সন্ধান পেতে পাঁচ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেন।
এ হত্যাকাণ্ডে খোদ বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততার কথা জানিয়ে ২০২১ সালের মে মাসে ওই মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছিল পিবিআই।
তখন বাবুলকে আসামি করে নতুন একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন। বর্তমানে এই মামলাটি বিচারাধীন। বাবুল আক্তারও আছেন কারাগারে।