মিতু হত্যা মামলা: বাবুল আক্তারসহ ৭ জনের বিচার শুরু
স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারসহ সাতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন চট্টগ্রামের একটি আদালত।
সোমবার (১৩ মার্চ) বিকেলে চট্টগ্রাম তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. জসিম উদ্দিন এ আদেশ দেন।
এসময় বাবুল আক্তারসহ পাঁচ আসামি আদালতে উপস্থিত থাকলেও কামরুল শিকদার মুসা ও খাইরুল ইসলাম কালু শুরু থেকে পলাতক।
বাবুল আক্তারের সঙ্গে অভিযোগপত্রভুক্ত অপর ছয় আসামি হলেন— এহতেশামুল হক ওরফে ভোলা, মো. মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম, মো. আনোয়ার হোসেন, মো. কামরুল ইসলাম শিকদার ওরফে মুসা, মো. খাইরুল ইসলাম ওরফে কালু ও শাহজাহান মিয়া।
বাবুলসহ অন্যরা আগে থেকেই কারাগারে। ছিলেন চার্জ গঠনের পর তাদের আবার কারাগারে পাঠানো হয়।
চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের পিপি আবদুর রশিদ জানান, রাষ্ট্রপক্ষ থেকে বাবুলসহ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আবেদন করা হয়। অপর দিকে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা আসামিদের নির্দোষ দাবি করে মামলা থেকে অব্যাহতির আবেদন করেন।
আদালত শুনানি শেষে চার্জশীটভূক্ত সাত আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ দিয়ে আগামী ৯ এপ্রিল সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য্য করেছেন বলে জানান তিনি।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবদুর রশিদ আরও জানান, "দীর্ঘদিনের পরিকল্পনায় ঢাকায় বসে স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে হত্যা করান বাবুল আক্তার। হত্যায় অংশ নেওয়া থেকে শুরু করে অস্ত্রের জোগান দেওয়া আর্থিক লেনদেনের বিষয়গুলো তদন্ত কর্মকর্তা স্পষ্টভাবে চার্জশীটে তুলে ধরেছেন।"
অন্যদিকে বাবুল আক্তারের আইনজীবী গোলাম মাওলা মুরাদ বলেছেন, বাবুল আক্তারের সঙ্গে কথা বলে উচ্চ আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
পাশাপাশি বাবুল আক্তারকে ফেনী কারাগারে রাখার আবেদন করা হলেও আদালত বিচার কাজের সুবিধার্থে তাকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখার আদেশ দিয়েছেন। একই সাথে জেল কোড অনুযায়ী চিকিৎসাসহ সকল সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার নির্দেশও দিয়েছেন।
২০১৬ সালের ৫ জুন ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে চট্টগ্রাম নগরের জিইসি এলাকায় বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়।
পরদিন (৬ জুন) বাবুল আক্তার প্রথমে বাদী হয়ে নগরের পাঁচলাইশ থানায় হত্যা মামলা করেন। তদন্ত শেষে পিবিআই ২০২১ সালের ১২ মে এ মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়।
একইদিন বাবুলের শ্বশুর সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় বাবুলসহ আটজনকে আসামি করা হয়।
ওই মামলায় গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর বাবুল আক্তারসহ সাতজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে পিবিআই।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, ২০১৩ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত কক্সবাজার জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থাকাকালে বাবুলের সঙ্গে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নারী কর্মকর্তার সম্পর্ক হয়। এই সম্পর্কের জেরে বাবুলের পরিকল্পনায় মাহমুদাকে খুন করা হয়।