‘শরিফুলকে একটা কথাই বলছিলাম, ব্যাটে বল না লাগলেও দৌড়াবি’
রান তোলার গতিতে পিছিয়ে পড়লেও ৪৩ বলে ৭৩ রানের জুটি গড়ে জয়ের পথ সহজ করে নিয়ে আসেন ম্যাচসেরা তাওহিদ হৃদয় ও শামীম হোসেন পাটোয়ারী। তাদের ব্যাটেই শেষ ওভারে বাংলাদেশের প্রয়োজন দাঁড়ায় ৬ রান। মেহেদী হাসান মিরাজ প্রথম বলেই চার মারেন, পাঁচ বলে দরকার তখন ২ রান। তখনই কিনা সব ওলট-পালট!
টানা তিন বলে মিরাজ, তাসকিন ও নাসুমকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিক করে বসেন আফগান পেসার করিম জানাত। ২ বলে দরকার ২ রান, স্ট্রাইকে শরিফুল ইসলাম। এরপরও বিশ্বাস হারাননি হৃদয়, বয়সভিত্তিক দল থেকে একসঙ্গে খেলে আসা শরিফুলের ওপর আস্থা রাখেন তিনি। আর তাকে বলে দেন, ব্যাটে বল না লাগলেও যেন শরিফুল দৌড়ায়।
শরিফুল পেসার হলেও তার ব্যাটিং সামর্থ্য সম্পর্কে জানা আছে হৃদয়ের, একসঙ্গে পথচলা যে অনেক দিনের। বাংলাদেশের যুব বিশ্বকাপ জয়ী দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য এ দুজন। তাই কঠিন এই অবস্থাতেও শরিফুলের ওপর আস্থা রাখেন হৃদয়। শরিফুলও দেন আস্থার প্রতিদান, উইকেটে গিয়েই চার মেরে এক বল হাতে রেখেই দলকে এনে দেন ২ উইকেটের রোমাঞ্চকর জয়।
ব্যাটে বল না লাগলেও শরিফুলকে দৌড়ানোর কথা বলার পর হৃদয় তাকে এও জানান, 'ম্যাচটা তুই-ই জেতাবি।' এর আগের অবস্থায় দলের বাকি সবার ওপরই আস্থা ছিল হৃদয়ের। রোমাঞ্চকর জয়ে ব্যাট হাতে নেতৃত্ব দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসা এই ব্যাটসম্যান বলেন, 'সবার উপরই আমার বিশ্বাস ছিল। কারণ, তাসকিন ভাই, নাসুম ভাই, এমনকি শরিফুল, সবাই খুব ভালো ব্যাটিং করে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে একটি ম্যাচে তাসকিন ভাই পরপর দুটি চার মারার পর আমরা ম্যাচ জিতে গেছি।'
'শরিফুলের ওপর বিশ্বাস আমার ছিল আগে থেকেই, কারণ ওর সম্ভাবনা আমি জানি। আমরা একসঙ্গে অনূর্ধ্ব-১৯ দল থেকে খেলছি এবং সে বড় বড় ছয় মারতে পারে। শরিফুল আসা পর্যন্ত আমার তাই বিশ্বাস ছিল। শরিফুলকে একটা কথাই বলেছিলাম, 'ব্যাটে বল না লাগলেও দৌড়াবি।' পরে শেষদিকে বলেছি, 'ম্যাচটা তুই-ই জেতাবি।' যোগ করেন হৃদয়।
দলের ৪ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর উইকেটে যাওয়া হৃদয় অনেকটা পথ পাড়ি দিয়েও নন স্ট্রাইক প্রান্ত থেকে দেখছিলেন দলের বেহাল দশা। তবে করিমের হ্যাটট্রিকের পরও স্বাভাবিক ছিলেন বলে জানান তিনি। হৃদয়ের ভাষায়, 'আমি স্বাভাবিক ছিলাম। কারণ জানতাম ২ রান লাগে মাত্র। একটা বলের ব্যাপার। বল ব্যাটে লাগলেই ১-২ রান হয়ে যাবে। সেই সময়টায় শান্ত থাকার চেষ্টা করেছি। যেহেতু নন স্ট্রাইকে ছিলাম, চেষ্টা করেছি আমার পার্টনারদের যতটুকু ইনফরমেশন দেওয়া যায় যে বোলার কী বল করতে পারে, এটুকুই।'