ধোঁয়া রং আকাশ
উমর গনি, সবাই ডাকে লাট গনি।
জমির ব্রোকার। দাঁড়িয়ে আছে কনিকা সুইটসের সামনে। ডিউক ফোন করেছিল। বলেছে, রবিবার বিকালে কনিকা সুইটসের সামনে থাকতে। সে আসবে। ডিউক চাকরি করে গøাস কারখানায়। উমর গনিদের পশ্চিমে এলপিজি জোন ঘোষণা করেছে সরকার। নতুন নতুন কোম্পানি জমি কিনছে। অনেকেই এর মধ্যে প্ল্যান্ট করে উৎপাদনেও গেছে। ডিউকদেরও জমি আছে এক দাগে আট একর।
ডিউকদের বাড়ি লাট গনিদের পাশে। আলাদা দুটো গ্রাম। তবে একই ইউনিয়ন। ঢাকা ট্রাংক রোডের পশ্চিমে সমুদ্র। স›দ্বীপ চ্যানেল। বঙ্গোপসাগরের খাড়ি। সমুদ্রের আগে বেড়িবাঁধ। বেড়িবাঁধের পূর্ব আর পশ্চিম পাশ মিলিয়ে এলপিজি প্ল্যান্ট হচ্ছে। পশ্চিম পাশ পাইপলাইনের জমি। তরল গ্যাস নিয়ে জাহাজ আসছে সমুদ্র পথে। এসে ভিড়ছে কারখানার জেটিতে। পাইপলাইন দিয়ে গ্যাস চলে যাচ্ছে বাঁধের পূর্ব পাশের প্ল্যান্টে। সিলিন্ডারে ভরে ডিস্ট্রিবিউট হচ্ছে সারা দেশে।
প্ল্যান্ট করার জন্য জেটিটাই মূল। পানির গভীরতা থাকলে জাহাজ ভিড়তে পারে। ১১ থেকে ১১.৫০ মিটার ড্রাফট দরকার। আর মাল ডিস্ট্রিবিউটের জন্য রোড। আরো উত্তরে মীরসরাই ইকোনমিক জোন হচ্ছে। বেড়িবাঁধের উপর দিয়ে চার লাইন রাস্তা যাবে। চিটাগাং পোর্ট টু ইকোনমিক জোন। তার আগ পর্যন্ত গ্রামের রাস্তা দিয়ে ট্রাংক রোডে উঠবে ট্রাক। গ্রামের রাস্তাগুলো কোম্পানি আর সরকারের টাকায় ইট সলিন করে বড় করা হবে। বছর তিনেক ধরে সমুদ্রের পানিতে যেখানে গভীরতা আছে তার আশেপাশে বাঁধের দু পাশেই জমি কেনার ধুম চলছে। কুমিরা, বাঁশবাড়িয়া, নড়ালিয়ার মৌজার পর এখন চলছে গোপ্তাখালী মৌজায় জমি কেনা।
ডিউকের কালো রঙের ফিল্ডার কার আছে। লাট গনি কনিকা সুইটসের সামনে দাঁড়িয়ে নজর রাখছে তার চেনা কার আসছে কিনা।
এখন বিকেল। কনিকা সুইটসের সামনে খালি। দোকানে ভিড় জমে উঠবে সন্ধ্যার আগে আগে।
২.
তবে ডিউক লাট গনিকে জমি বিক্রির জন্য ডাকেনি। জমি সে আগেই বিক্রি করেছে। জমি বিক্রি করবে ডিউক তা কখনো ভাবেনি। ১৮৩৯ সালের আরএস জরিপ, বিভিন্ন সময়ের বন্দোবস্তি, আর পাট্টা মূলে প্রায় ৪০ একর জমির মালিক ছিল ডিউকদের পরিবার। তখনো বাঁধ হয়নি। খাল বেয়ে জোয়ার চলে যেত প্রায় তিন মাইল পূর্বে তাদের বাড়ি পর্যন্ত। কাফ, মানে দুই খোন্দ ধান হওয়া জমির পরে, লম্বা সরলরেখার মতো পয়স্তি জমির ধারি। সরকারি বালামে বালুচর। লবণাক্ততায় কখনো এক খোন্দ ধান হয়, কখনো হয় না। বেড়িবাঁধ দেওয়ার পর বেড়িবাঁধের ভেতরের জমিতে দু খোন্দ ধান হয়। কখনো বছরে একবার, কোনো কোনো বছর একবারও আসা হয়নি ডিউকের। শাহ আলম, ডিউক ডাকে জেঠা, তার কাছেই ইজারা দেওয়া থাকে চরের জমি।
গত বছর তিন মাইল দক্ষিণে বিএম এনার্জি এলপিজি প্ল্যান্ট করলে জমির ব্রোকাররা ডিউকের কাছে আসতে শুরু করে। তখনো সে জমি বিক্রির কথা ভাবেনি। জমি বিক্রির কথা সে ভাবে বিপিসির প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের জিএমের ফোন পেয়ে। সম্পর্কে ডিউকের কাজিন। কোন মৌজায় কতখানি জমি কিনেছে বা বায়না করেছে তা দেখিয়ে অনুমতি নিতে হয় বিপিসি থেকে। তার কাজিন বলে, তাদের জমি ভুয়া ওয়ারিশনামায় বায়না দেখিয়েছে শরফ এলপিজি।
খবর পেয়ে পরদিন ইউনিয়ন পরিষদে যায় ডিউক। গিয়ে দেখে তার পিতামহ ছাবের আহমদের সাথে প্রকাশ ছাবিদুর রহমান দিয়ে ভুয়া ওয়ারিশনামা ইস্যু হয়েছে। তখনই চেয়ারম্যানকে দিয়ে সব জায়গায় চিঠি পাঠিয়ে সেই ওয়ারিশনামা বাতিল করায় ডিউক। আর সিদ্বান্ত নেয় চরের জমি বিক্রি করে দেবে। ডিউক জমি বিক্রি করেছে কোস্টাল গ্যাসের কাছে।
ডিউকদের কারখানায় গ্লাস বানাবার কাঁচামাল সোডা অ্যাশ সাপ্লাই দেয় কোস্টাল গ্যাসের সিস্টার কনসার্ন। মালিক ইজাজুর রহমান টেন্ডারে অংশগ্রহণ করতে এলে ডিউক তাকে জাল ওয়ারিশনামার বৃত্তান্ত বলে।
সব শুনে ইজাজুর রহমান বলে, বস, আগে একটা সিগারেট ধরাই। গ্রেট, আমি আপনাকেই খুঁজছিলাম। গোপ্তাখালী মৌজায় সমুদ্রের পাশে জায়গা তো?
ডিউক বলে, বাঁধের পূর্ব-পশ্চিম দু পাশ জুড়েই আট একর জমি। আমরা বলি ধারি।
ইজাজ ঔৎসুক্য নিয়ে তার দিকে তাকায়।
ডিউক বলে, বালুচর। আরএস ১৮৩৯ সাল থেকে আমাদের দখলে।
বাঁশবাড়িয়া মৌজায় জমি কিনতে শুরু করেছিল ইজাজুর রহমান। কোস্টাল গ্যাস নামে। এলপিজি প্ল্যাট করবে। বসুন্ধরা এলপিজি মাঝখানে ঢুকে অনেকখানি জমি কিনে নেওয়ায় ভাবছিল অন্য কোথাও শিফট করবে। তাদের মাথায় বিকল্প হিসেবে মংলার জমি ছিল। ডিউককে বলে, আমার এখানকার চিফ আলিমুদ্দিন সাহেব। আজকেই মিট করিয়ে দেব।
দুপুরে বোট ক্লাবে লাঞ্চ করে তারা। আগ্রাবাদ হতে আলিমুদ্দিন সাহেব আসেন। পদ্মা অয়েল ও যমুনা অয়েলের সাবেক এমডি। রিটায়ারমেন্টের পর কোস্টাল গ্যাসের ডিরেক্টর।
ইজাজুর রহমান বলে, স্যার ডিউক ভাইদের জায়গা আছে গোপ্তাখালী। আমাদের পাইপ লাইনসহ মোট লাগবে বিশ একর। ডিউক ভাইদের আছে আট একর।
গ্র্যান্ডফাদারের জমি থাকলেও জমি কেনা বা বেচা কোনোটাই করেনি ডিউক।
এজাজ ভাই বলে, আপনি আমাদের কনসালটেন্ট। আপনারগুলো তো আছেই, বাকিগুলোর জন্য একটা ছেলে দিয়ে দিন। মালিকদের থেকে কাগজ নেবে। আমাদের অ্যাডভোকেট, ডিট রাইটাররা সব দেখে রেজিস্ট্রি করবেন। আলিমুদ্দিন স্যার সব হ্যান্ডেল করবেন।
কোস্টাল গ্যাসের মূল ব্যবসা বিপিসি, পদ্মা অয়েল, যমুনা অয়েলে তেল সাপ্লাই। তাই ইজাজ সাহেবের কোম্পানিতে চাকরি করলেও এক্স বস হিসেবে আলিমুদ্দিন সাহেবকে স্যারই ডাকে।
জমি কেনার জন্য ডিউক ডেকে আনে ভুট্টোকে। জমির জন্য যখন কর্পোরেট বায়ার খুঁজছিল তখন পরিচয়। সিকম গ্রুপকে ডিউকদের পাশের কিছু জমি দিয়েছে। গোপ্তাখালী মৌজার জমি আর মালিকদের সম্পর্কে ধারণা আছে। ডিউকদের বাবাদের নানাবাড়ি সূত্রে কাজিন হয় সে। কোম্পানির আগ্রাবাদ অফিসে ভুট্টোকে নিয়ে যায় ডিউক। আলিমুদ্দিন সাহেবের পরামর্শে ভুট্টো তার পূর্ব পরিচিত ডিট রাইটার ঠিক করে। ডিট রাইটার জমির ডকুমেন্ট দেবে ভেন্ডারকে। ভেন্ডার ড্রাফট দলিল তৈরি করে দেবে। কোম্পানির ভেন্ডার আর উকিল অনুমোদন দিলে চূড়ান্ত রেজিস্ট্রি।
৩
ডিউক উমর গনিকে ডেকেছে ভুট্টো কেইসে।
কনিকার সামনে কালো গাড়ি দাঁড়ালে লাট গনি জানলার কাছে মুখ আনে। ডিউক বলে, গাড়িতে উঠেন।
কনিকা সুইটসের সামনে সব সময় ভিড় লেগে থাকে। কলেজ রোডের মুখে টেক্সি স্ট্যান্ড বলে আশেপাশে নিরিবিলি বসবার জায়গা নেই।
লাট গনিকে নিয়ে আসে পেট্রোল পাম্পের পাশে। পাশে চাইনিজ রেস্টুরেন্ট। হোটেলটা নিরিবিলি। দুপুরে ভিড় থাকলেও বিকেলের পর ফাঁকা।
ডিউক বলে, গনিদা কি খাবেন?
ডিউকরা বসেছে একেবারে পশ্চিমে। পুরো হোটেলই প্রায় খালি। উত্তর পাশে কনে দেখছে এক গ্রুপ।
গনি হাসে। বলে, আমনে হালকা কিছু অর্ডার দেন। ডিউক নুডলস অর্ডার দেয়।
ভুট্টোকে মিডিয়া হয়ে ২২ শতক জমি দিয়েছিল লাট গনি।
মোহাম্মদ আলী ২২ শতক জমি বিক্রি করে রফিকুল ইসলামের কাছে। সাল ১৯৭৩। মোহাম্মদ আলীর পৈত্রিক জমি। দুই বোন হারেছা খাতুন, রোকেয়া বেগম। মা মোহছেনা আক্তার। বিএস খতিয়ানে ২২ শতক এই চারজনের।
ডিউক থামে। হাতের প্যাকেট হতে বিএস খতিয়ানের কপি বের করে।
রফিকুল ইসলাম পুরো ২২ শতক দলিলমূলে বিক্রি করে দেলোয়ার হোসেনের কাছে। সাল ১৯৯৫। ২২ শতক দখল আছে দেলোয়ার হোসেনের। দেলোয়ার হোসেন কোস্টালের কাছে বিক্রি করে ২২ শতক। সাল ২০১৮। কিন্তু দেলোয়ার হোসেন আসলে নামজারি করতে পেরেছে ৯.৭ শতক; বিএস খতিয়ানের মোহাম্মদ আলীর অংশ। বিএস খতিয়ানের মা, দুই বোনের অংশ নামজারি করতে পারেনি। নিয়মমতো বিএস খতিয়ানের মোহাম্মদ আলীর অংশই কেবল নামজারি হয়েছে।
ডিউক বলে, এখন গনিদা দেলোয়ার হোসেন পুরো জমি রেজিস্ট্রি দিল কীভাবে? প্যাকেট হতে আরো কিছু কাগজ বের করে সে। গনিকে দেখায়। দেলোয়ার হোসেনের নামে ২২ শতকের নামজারি খতিয়ানের ফটোকপি। কানুনগো, এসি ল্যান্ড, সবার সাইন আছে।
ডিউক বলে, এখানেই ভুট্টোর কেরামতি। মূল নামজারি খতিয়ান গোপন করে ২২ শতকের ভুয়া নামজারি খতিয়ান দিয়ে সে কোম্পানিকে রেজিস্ট্রেশন করে দিয়েছে। কোম্পানি এখন জায়গা নামজারি করতে পারবে ৯.৭ শতক, দাম দিয়েছে ২২ শতকের।
আরেকটা কেইস দেখেন। বলে দলিলের স্ক্যান কপি দেখায় ডিউক।
দলিলের ডান দিকে মাথায় নীল টুপি পরা ছবি। ছবির উপর লেখা মোহাম্মদ হোসেন। টুপি পরা মোহাম্মদ হোসেনের আইডি কার্ড। দলিলেও মোহাম্মদ হোসেন সাইন করা।
ডিউক এরপর আরেকটা দলিল বের করে। বয়স্ক একজন মানুষের ছবি। নিচে টিপ সই, সইয়ের নিচে লেখা মোহাম্মদ হোসেন। তার নিচে বং আনিসুল হক। সাথে আইডি কার্ডের ফটোকপি। বং মানে বকলম, নিরক্ষর। লোকটি পড়ালেখা জানে না।
ডিউক বলে, নবাব এন্ড কোং হতে ৫ একর জমি নিয়েছিল কোস্টাল গ্যাস। তার ভেতর ৪০ শতক মোহাম্মদ হোসেনের থেকে নবাব এন্ড কোং নেয়। এ তার বায়া দলিলের কপি।
ডিউক বলে, বুঝলেন গনিদা, টুপি পরা মোহাম্মদ হোসেন ভুয়া। ওর আসল নাম মোহাম্মদ শফিক। ভুয়া আইডি কার্ড দেখিয়ে ফক্সি রেজিস্ট্রি করে দিয়েছে ভুট্টো। তবে ভেন্ডারও জড়িত ছিল। নির্বাচন কমিশন অফিসে ভেরিফাই করলেই আইডি কার্ড যে জাল তা বের হয়ে যেত। রেজিস্ট্রি অফিসের সামনেই তো নির্বাচন কমিশন অফিস।
গনি বলে, শফিককে আপনারা ধরতে পারছেন নেকি?
ডিউক বলে, হ্যাঁ। বাড়বকুণ্ড পেট্রোল পাম্পের সামনের রাস্তা দিয়ে একটু গেলে তার বাড়ি। রাস্তার কাজ করে। ডেলি লেবার। ভুট্টো লোন নেবে বলে তার ছবি তোলে। রেজিস্ট্রির দিন বিকাল বেলা ব্র্যাক অফিসে নিয়ে গিয়ে কমিশন রেজিস্ট্রি করেছে। চার মেয়ে অবিবাহিত। তাকে জিজ্ঞেস করলাম, কত দিয়েছে ভুট্টো। দুই লাখ পাইছো?
সে বলে, দুই লাখ পাইলে দুই মাইয়া বিয়ে দিতে পারতাম দাদা। ৫০ হাজার টাকা দিছে। অথচ ভুট্টো কোম্পানি থেকে নিছে ২৩ লাখ টাকা। এ দুইটা স্যাম্পল কেইস। ভুয়া খাজনা দাখিলা দিয়ে খাসজমি রেজিস্ট্রি দিছে, একই রকম ফক্সি রেজিস্ট্রি আছে আরো একটা। মাঝি বাড়ির মিজানরে ছমিউল্লাহ মিয়াজী বাড়ির হাবিবউল্লাহ বানায়ে রেজিস্ট্রি নিছে ২০ শতক, তাও প্রায় ২০ লাখ টাকা। আসল হাবিবউল্লা মারা গেছে কমপক্ষে দশ বছর আগে।
লাট গনি কিছুক্ষণ পরপর নাক টানে। পারমানেন্ট সর্দি।
দাদা, ভুট্টো এ সুযোগ পাইল কেমনে? জমি নেওয়ার পর দখল বুঝায়ে দিতে হৈত না কোম্পানিরে?
ডিউক বলে, সেই আরেক গল্প। ১ একর ৬০ শতক জমি কোম্পানি রেজিস্ট্রি বায়না করছিল আলি হোসেন টুনুর সাথে। মইষ টুনু। ৫০ শতক জমির দখল আছে, জরিপ নাই। আরএস জরিপমূলে কিনছে, বিএস জরিপ হয় নাই। ভুট্টো কোম্পানির ব্রোকার হিসেবে টুনুর ডকুমেন্ট নিলে বুঝতে পারে দখলি এই জমিগুলোর বিএস জরিপ টুনুর নাই। বিএস মালিকেরাও জানে না তাদের জমির বিষয়ে। এই সুযোগে ভুট্টো বিএস জরিপের নাম মিলিয়ে ভুয়া আইডি কার্ড আর লোক সাজিয়ে রেজিস্ট্রি করেছে। দখল তো টুনুর আছেই।
লাট গনি বিস্মিত হয় না। কুমিরা থেকে গুলিয়াখালী পর্যন্ত বিভিন্ন কোম্পানির সাথে ব্রোকারির কাজ করেছে সে। এক সময় বালুচর এ সমস্ত জমির অধিকাংশ ডকুমেন্টসই ঠিক নাই। বেড়িবাঁধের পরের জমিতে এখনো জোয়ার আসে। এক খোন্দ ধান হয় কি হয় না। ভাদ্রের পর সিম। কোনো কোনো বছর জমি খিল। ফসল হতো না বলে জমির দাম ছিল কম। মালিকরাও কাগজ ঠিক করায় উৎসাহ পেত না। হঠাৎ মীরসরাই ইকোনমিক জোন, লিংক রোড আর এলপিজি জোন করায় জমির দাম মাসে মাসে বাড়ছে।
ডিউক বলে, গনিদা, আপনি কোম্পানির পক্ষ থেকে ব্রোকারির কাজ করতে পারবেন?
৪.
ডিউকের প্রশ্ন শুনে অনেকগুলো হাওয়াই মিঠাই যেন তার সামনে ওড়ে।
লাট গনি ভাবে, ব্রোকারদের স্বপ্ন হলো কোম্পানির সাথে সরাসরি কাজ করতে পারা। কোম্পানি জমি কেনার জন্য একজন ব্রোকারের সাথে চুক্তি করে। চুক্তিতে প্রতি শতকের ফিক্স রেট থাকে। সেই ব্রোকার আবার কয়েকজন সাব-ব্রোকার নামায় মাঠে। তারা জমির মালিকের সাথে কথা বলে, ম্যানেজ করে, ডিল সামলায়। সাব-ব্রোকাররা জানতেও পারে না মূল ব্রোকারের সাথে কত দরে চুক্তি হলো। মালিক জানে না সাব-ব্রোকারের সাথে ব্রোকারের কততে ডিল। কোম্পানিও জমির মালিককে কত পাচ্ছে তা জিজ্ঞেস করে না। লাট গনি জানে, ব্রোকারদের বেশ ভালো মার্জিন থাকে। ব্রোকারি করলেও সরাসরি কোম্পানির হয়ে ব্রোকারি সে করেনি।
লাট গনি বলে, কোনো অসুবিধা নাই দাদা। আপনি থাকলে আমি পারব।
ডিউক সিট বের করে। গোপ্তাখালী মৌজার তিনটা সিট। ২ আর ৩ নং সিট জোড়া করে একটা সিট বানানো হয়েছে৷ কোস্টালের কেনা জমিগুলো লাল দাগ, যেগুলো কেনা হয়নি সেগুলো নীল দাগ।
ডিউক বলে, সিটের নীল রঙের দাগ নং গুলোর খসড়া খতিয়ান তুলে নেবেন। মালিক দেখে যোগাযোগ শুরু করেন। বলে, পকেট থেকে পাঁচ হাজার টাকা বের করে দেয়।
লাট গনি বলে, কোনো টেনশন করিয়েন না। কালকেই খাস মহলে গিয়ে খসড়া খতিয়ান তুলে নিব। ভুট্টোর ফক্সি রেজিস্ট্রির জন্য কোনো মামলা দিবেন না?
বাইরে রোদ তখন পড়ে গেছে। ম্লান আলো। হোটেল থেকে গ্লাসের ভেতর দিয়ে ওপাশের লোকজন, রাস্তা, গাড়িঘোড়া চোখে পড়ছে।
ডিউক বলে, ভুট্টোর ব্যাপার কোম্পানি দেখছে। আপনি কাগজগুলো তুলে কাজ শুরু করেন। ফক্সি হওয়া জায়গার মূল মালিকদের তো চিনলেন। ওই জায়গাগুলোও রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা নেন।
লাট গনি বলে, জ্বি দাদা। জ্বি।
ডিউক বিল মিটিয়ে বেরিয়ে আসে। দোকানগুলোয় আলো জ্বলে উঠছে। রাতের শুরু হচ্ছে। চারদিকে অন্যরকম রূপ খুলছে যেন। সে গাড়িতে উঠে বসে।
লাট গনির আরেকটা পরিচয় হচ্ছে ঢোল গনি। কোনো কথা শুনলে সে জনে জনে বলে বেড়ায়।
ইসলামি ব্যাংকের নিচে সোহেল চৌধুরীর ল্যান্ড ব্যবসার অফিস। লোকাল সব ব্রোকার বিকালের দিকে এ অফিসে একবার আসে। বিয়ের ঘটকরা বৃহস্পতিবার বিকালে যেমন জড়ো হয় ভাই ভাই হোটেলে। রবি, সোম, মঙ্গল রেজিস্ট্রারির ডেট। রেজিস্ট্রির দিন বিকালে ব্রোকাররা সোহেল চৌধুরীর অফিসে এসে আলাপ করে কোন কোন জমি বিক্রি হলো। কোন মৌজায় জমি আছে, কোন মৌজায় কোম্পানি নামল।
ডিউক চলে যাবার পর লাট গনি সোহেল চৌধুরীর ল্যান্ড অফিসে হাজির হয়। আজ বেশ হাসিখুশি সে। পকেট থেকে পাঁচশ টাকা বের করে। বলে, চা নাস্তা আনাও। সোহেল চৌধুরীর অফিসে বসেছিল বেলাল আর মামুন। বসুন্ধরা গ্রুপের ব্রোকারি করে। মূল না, সাব-ব্রোকার। আগে আলুর বেপারি ছিল বলে বেলালকে সবাই চেনে আলু বেলাল হিসাবে। কর্নেল হাটে ফার্নিচারের দোকান আছে মামুনের। সবাই ডাকে ফার্নিচার মামুন।
মামুন বলে, আজ তো রেজিস্ট্রি নাই। গনিদা কি বড় বায়না করলেন নাকি?
গনি হাসে। বলে, আরে না। কোস্টালের ভুট্টো ফক্সি করি মামলা খাইছে। এখন পলাতক। ডিউক সাব আমারে দায়িত্ব দিছে বাকি জমি ব্রোকারির। তাই খাওয়াইলাম।
ফার্নিচার মামুনেরও ইচ্ছা ছিল কোস্টালে কাজ করা। ডিউকের সাথে কয়েকবার যোগাযোগও করেছে। কিন্তু পাত্তা দেয়নি ডিউক। মামুনের ধারণা, ডিউক বললে কোম্পানিতে ঢুকতে পারত সে।
মামুন বলে, ফক্সি রেজিস্ট্রির টাকা তো ভুট্টো একা খায় নাই। অর্ধেক টাকা মারি দিছে ডিউক। ভুট্টোর কাঁধে বন্দুক রাখি কাম করছে লাট ভাই।
লাট গনি বলে, কি কন আপনে? সত্যি নাকি?
মামুন হাসে। বলে শতভাগ সত্যি। কোম্পানিরে বুঝায়া বলতে পারলে ডিউকরে আউট করি দিব। টাকা তো দিছে ডিউকের অ্যাকাউন্টে। ডিউক ভাগ পায় নাই? ভুট্টো কি সব একা খাইছে?
কাঠের ভেতর পেরাক সেঁধিয়ে যাবার মতো ফার্নিচার মামুনের কথাটা মাথায় ঢুকে যায় লাট গনির। কিন্তু সে যে বিষয়টা আমলে নিল তা বুঝতে দেয় না। কাজ হবে, এমন কারো সামনে গেলে পানিতে ভেজা তুলার মতো ভক্তিতে একেবারে ভিজে থাকে লাট গনি। সে জানে, এদের কাছে ডিউক বিষয়ে বিরূপ কিছু বললে, এদেরই কেউ ডিউককে কথাটা পৌঁছে দেবে। কিছু না বলে সোহেল চৌধুরীর ল্যান্ড অফিস থেকে বেরিয়ে আসে সে।
বাজারের এদিকে ভিড় কম। ভিড় বেশি কলেজ রোডের মুখ থেকে উত্তর দিকটায়। ব্র্যাক ব্যাংকের নিচে আলী মার্কেটে আলমের চায়ের দোকান আছে। গরুর দুধের চা বেচে। লাট গনি মার্কেটে ঢোকে। আলমের দোকানে গিয়ে বলে, আলম ভাই, চা দাও। খালি চা।
চা খেতে খেতে সিটের নীল মার্ক করা দাগগুলো দেখে। বেড়িবাঁধের পূর্ব পাশে অনেকগুলো দাগই নীল মার্ক করা। পূর্ব পাশের জায়গাগুলো আগে নিতে বলেছে ডিউক।
রবিবার ভূমি অফিসে গিয়ে মার্ক করা জায়গাগুলোর খসড়া খতিয়ান তুলে সে। বিএস, সাথে নামজারি খতিয়ানও। বিএস খতিয়ানের অনেক মালিকই জায়গা বিক্রি করে দিয়েছে। নামজারি খতিয়ান থেকে তাদের খুঁজে নেওয়া যাবে।
খসড়া তুলতে তুলতে দুপুর হয়ে যায়। লাট গনি খসড়া খতিয়ানগুলো শক্ত কাগজের প্যাকেটে ঢুকিয়ে নেয়। নতুন ভূমি অফিসের সামনেই থানা দিঘি। ভূমি অফিস দিঘির উত্তর পাড়ে।
দাগ নং ২২৪৩, বাঁধের পূর্ব পাশের ৩৮ শতক জমির মালিক ফয়েজ আহমদ। লাট গনির চেনা। তাদের পাশের বাড়ি, কবির আহমদ সেরাঙ বাড়ির। সে ঠিক করে আজ বিকালেই ফয়েজ আহমদের কাছে যাবে।
দুপুরে হোটেলে খাবার ইচ্ছে থাকলেও বাড়ি যাবে ঠিক করে লাট গনি। উত্তর পাড়ে ছাগলের হাট বসে রবিবার। আজ রবিবার। টেক্সি স্ট্যান্ডের দিকে যেতে দেখে ছাগল ঢুকছে হাটে।
বিকেলবেলা ফয়েজের বাড়ি আসে সে। আসরের নামাজের পর দুধে রান্না চুটকি পিঠা খাচ্ছিল বৈঠকখানায় বসে। লাট গনি তার সামনের প্লাস্টিকের চেয়ারে বসে।
ফয়েজ ঘরের ভেতরে তাকিয়ে জোরে বলে, অডি, আরেক বাটি নাস্তা দিতে ক।
ফরসা চেহারার ছোট মেয়ে এসে লাট গনিকে দেখে যায়। লাট গনি বলে, কাকু কাডির হেডে তো কোম্পানি নাইমছে। ভালা রেইট দের। আমনের তো আছে ৩৮ শতক?
ফয়েজ বলে, আর নো কইয়ো। বেন-বিয়াল ব্রোকাররা আইয়ের। আইজ্যা হজরেও মাঝি বাড়ির মহিউদ্দিন আইছে। এমনে তো বেচনের ইচ্ছা নো আছিল।
ফরসা মেয়েটা মেলামাইনের বাটিতে চুটকি পিঠা নিয়ে আসে। ফয়েজ বলে, সেলিমের মাইয়া।
লাট গনি মেয়েটার দিকে তাকিয়ে হাসে। ফয়েজকে বলে, কোস্টাল গ্যাস আমনের সাইডেদি প্রায় জমি কিনছে। আপনের লগের মইস টুনুর গো ধারিও হেইতেরা কিনছে।
ফয়েজ বলে, হ, হুনছি। হুজুরের দোয়ানের সামনে কাইলকে দেখা হৈছিল।
লাট গনি এতে খানিক সাহস পায়। বলে, আই অনকা কোম্পানির লগে ডাইরেক্ট কাম করিয়ের। কুন মিডিয়ার লগে ন।
সে শতক প্রতি তার দর বলে।
ফয়েজ তাকে আগামী সপ্তাহে আসতে বলে। বলে, ছেলেদের সাথে আলাপ করে সে জানাবে।
লাট গনি বেরুবার সময় তার ফোন নাম্বার নেয়। বলে, আঁই শুক্রবারে ফোন দুমু কাকু।
৫.
বৃহস্পতিবার দিনেই ফয়েজ আহমদ লাট গনিকে ফোন করে। জানায়, ছেলেদের সাথে তার কথা হয়েছে।
লাট গনি বলে, শুক্রবার আমু কাকু। নামজারি, বিএস খতিয়ান, বায়া কবলা গিন ফটোকপি করি রাখিয়েন।
শুক্রবার ভোর ভোর লাট গনি হাজির হয়। বলে, ফজরের নামাজ পড়ি জামশেদের দোয়ানে থাপ্পা রুটিদি চা খাইলাম। তার বাদে সোজা আমনের বাড়িত।
গতকাল বিকালে গিয়ে ফয়েজ সব কাগজ ফটোকপি করে এনেছে। শক্ত কাগজের প্যাকেটে ফটোকপিগুলো দেয় সে।
প্যাকেট নিয়ে লাট গনি বলে, আই কাকু।
ফয়েজ তাকে চা খেয়ে যাওয়ার অনুরোধ করে। সে মাথা নেড়ে বলে, আরেক দিন।
ডকুমেন্টস পেয়েই সে ডিউককে ফোন করে। বলে, ২২৪৩-এর ৪৮ শতক জমির ডকুমেন্ট হাতে আইছে। ডিউক তাকে কোম্পানি অফিসে কাগজ পৌঁছে দিতে বলে।
বাড়িতে গিয়ে চা খেয়ে গোসল করে শহরের দিকে রওনা হয় লাট গনি। সাথে ফয়েজের দেওয়া কাগজের প্যাকেট।
কোম্পানির অফিসে পৌঁছতে পৌঁছতে দুপুর হয়ে যায়। রাস্তায় জ্যাম। ভাটিয়ারীর আগে কনটেইনারবাহী ট্রেইলার উল্টে পড়ে আছে।
কোম্পানি অফিসের কাছাকাছি এসে লাট গনি ডিউককে ফোন দেয়। ডিউক তখন নিজের অফিসে। লাট গনিকে বলে, আপনি নিজে অফিসে গিয়ে ডকুমেন্টস দিয়ে আসেন।
লিফটের দশে অফিস। ভেতরে ঢুকে দেখে আলিমুদ্দিন স্যার রুমে বসে আছে। চোখ বাম পাশের কম্পিউটার স্কিনে।
লাট গনি নিজের পরিচয় দেয়। জমির ডকুমেন্টস দেয়।
আলিমুদ্দিন স্যার বলে, বসেন। পিয়ন ছেলেটাকে ডেকে চা দিতে বলে।
লাট গনি চা খায়, রং চা। আর বিস্কুট। আলিমুদ্দিন স্যার বলে, ডকুমেন্টস চেক করে ভেন্ডার ড্রাফট দলিল করবে। দলিল দেখে উকিল ওকে করলে রেজিস্ট্রি।
দুদিন পর ডিউক ফোন দেয় অফিসে যেতে। লাট গনি ডিউকের অফিসে আসে দুপুরে। গনিকে দেখে ডিউক হাসে। বলে, রেজিস্ট্রি ঠিক মতো করতে পারবেন তো গনিদা?
তাকে নিয়ে কোম্পানির অফিসে আসে ডিউক। ডিউকের অফিস থেকে দশ মিনিটের হাঁটা পথ। অফিসে এলে আলিমুদ্দিন স্যার বলে, গনি সাহেব, জমির মালিক কীভাবে টাকা নেবে? পে-অর্ডারে দেই? রেজিস্ট্রির আগের দিন পে-অর্ডারের ফটোকপি দিয়ে দেব। ব্যাংকে এসে চেক করে নেবে। রেজিস্ট্রি দেওয়ার পর মূল পে-অর্ডার দেব।
লাট গনি ফয়েজকে ফোন করে। বিষয়টা জানায়। ফয়েজ বলে, কোনো কাগজ-টাগজ ন বাপ, ক্যাশ টেঁয়া বুঝি লই আঁই রেজিস্ট্রি দিমু।
আলিমুদ্দিন স্যার বলে, কাল সকালে যাবার সময় আমি সব ক্যাশ নিয়ে যাব। আমাদের ভেন্ডার দীপংকর। তার সাথে যোগাযোগ করে রেজিস্ট্রিদাতাদের রেজিস্ট্রি অফিসে নিয়ে আইসেন।
রেজিস্ট্রির দিন সকালে লাট গনি ডিউককে ফোন করে। বলে, ডিউকদা আপনি থাকবেন না?
ডিউক জানায় সে থাকবে না।
৬
লাট গনি দেখে কোনো রেজিস্ট্রির দিনই ডিউক আসে না।
জমির দর ভাঙে সে, কাগজ নেয় সে। কোম্পানি অফিসে দিয়েও আসে সে।
তবে ডিউক সব খোঁজ নেয়৷ কোন মালিক, কত দর এসবের হদিস ডিউককে দিতে হয়। অফিস থেকে বিএস বা নামজারি খতিয়ান দেখেও মালিক চিনে নেয় সে৷ এ চরের প্রায় সব জমিই ডিউকদের পূর্ব পুরুষ নিলাম বা পাট্টায় বন্দোবস্তি নিয়েছিল। তাই কোনো না কোনো সূত্রে মালিকদের সে চেনে। তাই কোম্পানি কমিশনের বাইরে মালিকদের থেকে প্রতি শতকে বাড়িয়ে নেওয়ার সুযোগ থাকে না। ডিউক ফোন করলেই আসল দর জেনে যাবে, লাট গনির ভেতর এ ভয় কাজ করে।
অফিসের সাথে সম্পর্ক এখন অনেক সহজ লাট গনির। খেত থেকে তাজা সবজি নিয়ে আসে সে আলিমুদ্দিন স্যারের জন্য। কচি ভেন্ডি, লাউ, দেশি শিম, খাইস্যা। ডিউক কোম্পানি অফিসে লাট গনির সঙ্গে আর আসে না।
লাট গনি বলে, স্যার ভুট্টোর কোনো খবর আছে?
আলিমুদ্দিন স্যার বলে, না, কোনো খবর নাই। মামলা করছি। হজ্ব থেকে নাকি এখন দুবাই গেছে শোনা যাচ্ছে।
লাট গনি বলে, ইক্কিনি পোলা কি সাহস তার। লিগ্যাল করি রেজিস্ট্রি লইলেও তো টেঁয়ার থুপ পরি যাইত।
আলিমুদ্দিন স্যার কিছু বলে না। ল্যাপটপে রাখা জমির সিট দেখতে থাকে। বাঁধের পূর্ব পাশের পাইপলাইনের জমির কাগজ নিয়ে এসেছে লাট গনি। পিয়ন এসে কেক আর চা দিয়ে যায়।
চা খেতে খেতে লাট গনি বলে, তবে স্যার ফিল্ডের লোকে বলে, ভুট্টোর সাথে ডিউক সাবও ভাগে ছিল। ভুট্টোর কাঁধে বন্দুক রাখি ডিউক সাব টাকা কামাইছে।
ল্যাপটপের স্ক্রিন থেকে চোখ সরিয়ে আলিমুদ্দিন লাট গনির দিকে তাকায়। বলে, তাই নাকি? ডিউক সাবরে বাদ দিয়ে আপনারে ডাইরেক্ট দিয়ে দি, কি বলেন?
লাট গনি বলে, আমারে ডাইরেক্ট দিয়া দেন স্যার। ডিউক সাব তো কুন কাম করে না, উনারে রাখি লাভ কি?
আলিমুদ্দিন ভাবে, আহা! কি মোহ জগতের। ডিউক নিয়ে আসল লাট গনিকে। লাটগনি এখন ডিউককে ফেলে দিতে চাচ্ছে।
কোস্টাল গ্যাসের আগের অফিস ছিল দশতলায়। তার পাশেই ছোট ব্যালকনি। দাঁড়ালে নীল রং, ধোঁয়া রং আকাশ দেখা যেত। ল্যাপটপের স্ক্রিনে চোখ রাখতে রাখতে আলিমুদ্দিনের চোখ জ্বালা করছে। তার এখন একটু আকাশ দেখতে ইচ্ছে করে।