৬০ বছর বয়সে ম্যাচ খেলতে নামা সুরিনামের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবার লকার রুমে ‘অনৈতিক কর্মকাণ্ডে’র দায়ে তদন্তের মুখে
পেশাদার ফুটবলে নিজেকে দেখার শখটা হয়তো অনেক বেশিই ছিল সুরিনামের ভাইস প্রেসিডেন্ট রনি ব্রুনসউইজকের। ৬০ বছর বয়সে এসে নিজে একটি ক্লাব কিনে নেমে গেলেন মাঠে।
ভাইস প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব থেকে কিছুক্ষণের জন্য ইস্তফা নিয়ে সম্প্রতি নিজের মালিকানাধীন ক্লাব ইন্টার ময়েনগোটাপোর হয়ে কনকাকাফ লিগের একটি ম্যাচে অংশগ্রহণ করেছিলেন ব্রুনসউইজক। ম্যাচে অধিনায়কের আর্মব্যান্ডও পরেছিলেন এই রাজনীতিবিদ।
সিডি অলিম্পিয়ার বিপক্ষে সেই ম্যাচে অবশ্য ০-৬ গোলে হেরেছে ইন্টার। কিন্তু সবচেয়ে বয়স্ক খেলোয়াড় হিসেবে কোনো আন্তর্জাতিক ক্লাব প্রতিযোগিতায় খেলতে নেমে ইতিহাসে নাম লিখিয়েছেন ব্রুনসউইজক।
তবে শুধু মাঠের ফুটবল দিয়েই সবার ভ্রু কুঞ্চিত করেননি এই রাজনীতিবিদ, তার ম্যাচ-পরবর্তী কর্মকাণ্ড নিয়ে এবার আনুষ্ঠানিক তদন্তে নামতে বাধ্য হয়েছে কনকাকাফ।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, সিডি অলিম্পিয়ার লকার রুমে গিয়ে উপস্থিত সবাইকে নগদ টাকা দিচ্ছেন ব্রুনসউইজক। অর্থ বিতরণ শেষে হন্ডুরান ক্লাবটির একটি জার্সি পরে তাকে বেরিয়ে আসতে দেখা যায়।
সিএনএনকে দেওয়া এক বিবৃতিতে দক্ষিণ আমেরিকান ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা কনকাকাফ বলেছে, 'সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত ভিডিওটির বিষয়বস্তু নিয়ে আমরা বেশ উদ্বিগ্ন। এই ভিডিও ইন্টার ময়েনগোটাপো ও সিডি অলিম্পিয়ার মধ্যকার কনকাকাফ লিগের ম্যাচকে ঘিরে নৈতিকতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।'
'বিষয়টি কনকাকাফ ডিসিপ্লিনারি কমিটির কাছে পাঠানো হচ্ছে। তারা এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করবে, এবং সেই প্রক্রিয়া শেষ হলে সবাইকে জানানো হবে,' যোগ করা হয় ওই বিবৃতিতে।
ব্রুনসউইজক তার মালিকানাধীন ক্লাবের ৬১ নাম্বার জার্সি গায়ে মাঠে নেমেছিলেন। কিন্তু এই ম্যাচে অংশগ্রহণ করে তিনি প্রতিযোগিতাটিকে অসম্মান করেছেন, এমন অভিযোগও তুলেছে অনেকে।
সিডি অলিম্পিয়ার সহকারী কোচ গুস্তাভো রেগিকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, মাঠে ব্রুনসউইজকের উপস্থিতি দেখে তিনি অসম্মানিত বোধ করেছেন কি না। তিনি কৌশলে জবাব দিয়েছেন, 'মাঠে আমাদের সামনে যে-ই থাকুক না কেন, আমাদের সবটুকু দিতে হবে।'
সুরিনাম একটি সাবেক ডাচ উপনিবেশ। দেশটি ১৯৭৫ সালে স্বাধীনতা অর্জন করেছে। এদিকে, আগে বেশ কিছু অপরাধের জন্য সাজাপ্রাপ্ত হওয়ার অভিযোগ রয়েছে ব্রুনসউইজকের বিরুদ্ধে, বিশেষ করে নেদারল্যান্ডে মাদক পাচারের দায়ে তার দোষী সাব্যস্ত হওয়ার একটি প্রতিবেদন ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়েছে।
এসব অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও ২০২০ সালের জুলাইয়ে ভাইস-প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন তিনি।
-
সূত্র: সিএনএন