২০২১ সালে সম্পদ বৃদ্ধির গতিতে বিশ্বসেরা হলেন ভারতীয় ধনকুবের গৌতম আদানি
চলতি বছর ভারতীয় ধনকুবের গৌতম আদানির বিত্ত-বৈভবে বিশ্বের অন্য সকল ধনীর চাইতেও দ্রুত গতিতে যোগ হয়েছে শত শত কোটি মার্কিন ডলার। ভারতীয় এ শিল্পপতির সামাজ্য বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সমুদ্র বন্দরের মতো নানান গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো নির্মাণ ও পরিচালনা কেন্দ্র করে- এসব প্রকল্পে বিনিয়োগকারীদের পুঁজি লগ্নীর উৎসাহেই রেকর্ড সম্পদ স্ফীতি লাভ করেন তিনি।
ভারতের বড় উদ্যোক্তাদের একজন ৫৮ বছরের গৌতম আদানি। জনসম্মুখে তিনি খুব একটা কথাবার্তা বলেন না। নিভৃতচারী হলেও চলতি বছর তার সম্পদ ১৬.২ বিলিয়ন থেকে স্ফীত হয়েছে ৫০ বিলিয়নে। ব্লুমবার্গ বিলিয়নিয়ার ইনডেক্স অনুসারে একথা জানা গেছে। ফলে বিশ্বসেরা ধনী জেফ বেজোস এবং দ্বিতীয় সেরা ইলন মাস্ককেও সম্পদ বৃদ্ধির গতিতে পেছনে ফেলেছেন তিনি। অথচ বাড়তি সম্পদের কারণে চলতি বছর বিশ্বসেরা ধনীর শিরোপা মাস্ক ও বেজোসের মধ্যে অদল-বদল হয়। কিন্তু, দেখা যাচ্ছে প্রাচুর্য বৃদ্ধির বিবেচনায় তারা আদানির কাছে জিততে পারেননি।
রেকর্ড এ অর্জনের নেপথ্যে আছে পুঁজিবাজারে আদানি শিল্পগোষ্ঠীর প্রায় সকল কোম্পানির শেয়ারের গড়মূল্য ন্যূনতম ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি।
ব্লুমবার্গের তালিকা অনুসারে, আরেক ভারতীয় বিলিয়নিয়ার মুকেশ আম্বানি এশিয়া সেরা ধনীর আসন ফিরে পেয়েছেন। তবে আদানির তুলনায় তার সম্পদ স্ফীতি বেড়েছে মাত্র ৮.১ বিলিয়ন ডলার। এই পার্থক্যের মধ্য দিয়ে নিজ চেষ্টায় শীর্ষ ব্যবসায়ী হয়ে ওঠা আদানির বাড়তি গুরুত্ব স্পষ্ট হয়। তার বৃহৎ প্রকল্পগুলোয় বিনিয়োগ করেছে বৈশ্বিক জায়ান্ট টোটাল এসএ থেকে শুরু করে ওয়ারবার্গ পিনকাস এর মতো নামজাদা সংস্থা। জোড়ালো গতিতে বাড়ছে তার শিল্পজোটের ব্যবসা, প্রতিনিয়ত তাতে যোগ হচ্ছে; সমুদ্রবন্দর, এয়ারপোর্ট, তথ্যকেন্দ্র এবং কয়লা খনির মতো প্রকল্প। বিতর্ক সত্ত্বেও অস্ট্রেলিয়ায় বৃহৎ কারমাইকেল কয়লা প্রকল্প বাস্তবায়নে এগিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
আকাশছোঁয়া উত্থান:
গত মাসেই ভারতে এক গিগাওয়াট সক্ষমতার তথ্যকেন্দ্র নির্মাণে সরকারের সঙ্গে চুক্তি করে আদানি এন্টারপ্রাইজেস লিমিটেড।
বাণিজ্যিক পরামর্শক সংস্থা নিকা অ্যাডভাইজরি সার্ভিসেস- এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুনীল চন্দিরামনি বলেন, "বাজারচক্র সহনশীল এমন সব খাতেই আদানি তার ব্যবসায়িক সাম্রাজ্যের বিস্তার করছেন। এখন ডাটা সেন্টারের ব্যবসায় নামার মাধ্যমে তার শিল্পজোট তথ্যপ্রযুক্তি খাতেও বড় শক্তি হওয়ার ইচ্ছে তুলে ধরলো।"
চলতি বছর আদানি জোটের সেরা পারফর্মার কোম্পানি আদানি টোটাল গ্যাস লিমিটেড। কোম্পানিটির বাজারদর বেড়েছে প্রায় ৯৭ শতাংশ। অন্যদিকে, মূল কোম্পানি আদানি এন্টারপ্রাইজেস- এর দর বেড়েছে ৮৭ শতাংশ। আদানি ট্রান্সমিশন লি. এর ক্ষেত্রে তা ছিল ৭৭ শতাংশ। এছাড়া, আদানি পাওয়ার লি. এবং আদানি পোর্টস অ্যান্ড স্পেশাল ইকোনমিক জোন লি.- এর বাজারমূল্য চলতি বছর বেড়েছে ৫০ শতাংশ করে। এর আগে গেল বছর আদানি গ্রিন এনার্জি লি. ৫০০ শতাংশের বেশি উচ্চদর অর্জন করে। চলতি বছর তার উপর যোগ হয় আরও ১০ শতাংশের মূল্যবৃদ্ধি।
- সূত্র: ব্লুমবার্গ