থাইল্যান্ডের নতুন অনলাইন তারকা মূ ডেং: তার খ্যাতিতে উদ্বিগ্ন চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ
থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যংককে অবস্থিত খাও খেও ওপেন চিড়িয়াখানার সবচেয়ে ছোট্ট সদস্য দুই মাস বয়সী পিগমি হিপ্পো মূ ডেং। সে এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের জনপ্রিয় তারকা। তার আঙুর খাওয়া থেকে শুরু করে, মেঝেতে গড়াগড়ি কিংবা থাইল্যান্ডের তীব্র রোদে পানিতে ডুব দেওয়া, তার সব দৈনন্দিন কাজ দেখার জন্য মানুষ বসে থাকে।
দুই মাস বয়সী গোলগাল গোলাপি জলহস্তী শাবকটি এখন চিড়িয়াখানার মূল আকষর্ণে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিনই অনলাইনে তার ভক্ত সংখ্যা বেড়ে চলেছে এবং চিড়িয়াখানায়ও বেড়েছে জনসমাগম।
খাও খেও ওপেন চিড়িয়াখানার তত্ত্বাবধায়করা নিয়মিত অনলাইনে তার জীবনের ছোট ছোট অংশ শেয়ার করছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা ভিডিওগুলোতে দেখা গেছে, গোসলের সময় সে তার তত্ত্বাবধায়কদের হাঁটুতে কামড়াতে ভালোবাসে।
সিএনএনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে চিড়িয়াখানার পরিচালক নারোংউইত চোডচয় বলেন, "জলহস্তী শাবকের প্রাকৃতিক মিষ্টতা ও আচরণই দর্শকদের আকর্ষণ করছে।"তিনি আরও বলেন, "মূ ডেংয়ের জনপ্রিয়তার কারণে চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীর সংখ্যা ৩০ শতাংশ বেড়েছে। তবে খ্যাতি মূ ডেংয়ের জন্য অনাকাঙ্ক্ষিত বিড়ম্বনাও সৃষ্টি করছে। যার কারণে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ সতর্কতা জারি করতে বাধ্য হয়েছে।"
তিনি জানান, কিছু সংখ্যক দর্শনার্থী অপ্রত্যাশিত আচরণ করছেন। একজন মূ ডেংয়ের গায়ে পানি ঢেলে দিয়েছেন, আরেকজন শামুক ছুঁড়ে মেরেছেন। এ বিষয়ে দর্শনার্থীদের আরো সহানুভূতিশীল হওয়ার আহ্বান জানান নারোংউইত। আর প্রাণীটির কোনো ক্ষতি করা হলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
মূ ডেংয়ের প্রতি মুগ্ধতা প্রকাশ করতে অনেক ভক্তই চিড়িয়াখানায় আসছেন। তবে তার সবচেয়ে বেশি খ্যাতি রয়েছে অনলাইনে।
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে দেখা যায় মূ ডেং হাই তুলছে এবং তার তত্ত্বাবধায়ক তাকে থুতনিতে আদর করছেন। এ ভিডিওটি ৫.৮ মিলিয়ন ভিউ পেয়েছে এবং এ সংখ্যা বাড়ছেই।
ফেসবুকের এক ভক্ত আউম ওয়ারাওয়ান মূ ডেং সম্পর্কে লিখেছেন, "সে একবারে তারকা।" আরেকভক্ত নাপাতসাওয়ান বালি লিখেছেন, "একজন সুপারস্টার হিপ্পো হয়ে পুনর্জন্ম নিয়েছে।"
আরো অনেকে লিখেছেন, "সে জন্মের পরপরই বিখ্যাত হয়ে গেছে"; "হাহা, এত কিউট!"
থাই ভাষায় মূ ডেং অর্থ "বাউন্সি পিগ"। এটি হলো শূকরের মাংস দিয়ে রান্না করা একটি খাবারের নাম যা চিবিয়ে খেতে বেশ মজা। চিড়িয়াখানার মতে, আগস্টে ফেসবুকে ২০,০০০ ব্যবহারকারীর ভোটের মাধ্যমে তার নাম ঠিক করা হয়।
চিড়িয়াখানার তত্ত্ববধানে থাকা জলহস্তী দম্পতি জোনা ও টোনির ঘরে গত ১০ জুলাই আগমন হয় মূ ডেংয়ের। এর আগেও এ দম্পতির আরও দুটি সন্তান আছে- মূ টুন ও মূ ওয়ার্ন।
পশ্চিম আফ্রিকার পরিচিত প্রাণী হলো এ পিগমি হিপ্পো। এরা প্রাপ্তবয়স্ক জলহস্তীর চেয়ে আকৃতিতে ছোট হয়। যুক্তরাজ্যভিত্তিক পিগমি হিপ্পো ফাউন্ডেশনের মতে, বন্য পরিবেশে মাত্র ২,০০০ পিগমি হিপ্পো টিকে আছে। এদের বেশিরভাগই মূলত লাইবেরিয়া, সিয়েরা লিওন, গিনি এবং আইভরি কোস্টে আছে।
নারোংউইত জানিয়েছেন, চিড়িয়াখানায় মূ ডেংকে দেখতে চাইলে সকাল ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে আসা ভালো। কারণ এসময় তার তত্ত্বাবধায়ক তখন তার ঘর পরিষ্কার করেন।
আরেকটি ভালো সময় হলো বিকেলে। এসময় তার মাকে খাওয়ানো হয় আর মূ ডেং তার মায়ের আশেপাশেই ঘুরাঘুরি করে। নারোংউইত জানিয়েছেন, মূ ডেং তার মা জোনার সঙ্গে খুবই লেপ্টে থাকে।