কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের জন্য নতুন নিয়ম আনল ইউটিউব, না মানলে বন্ধ হয়ে যাবে আয়
এখন থেকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে তৈরি করা সকল ভিডিওতে লেবেল যুক্ত করে দিতে হবে। গত সোমবার থেকেই এমন নিয়মই চালু রয়েছে ইউটিউব কর্তৃপক্ষ। মূলত এআই সৃষ্ট ভিডিওর মাধ্যমে দর্শকদের মধ্যে যাতে বিভ্রান্তি সৃষ্টি না হয় তা ঠেকাতেই এই উদ্যোগ।
ইউটিউব জানিয়েছে, ব্যবহারকারীদের এখন থেকে ভিডিও আপলোড করার সময় ভিডিও পরিচিতি লেখার তালিকায় উল্লেখ করে দিতে হবে ভিডিওটি এআই-র তৈরি কিনা। এছাড়া বাস্তবে ঘটেনি এমন কোনো দৃশ্য ভিডিওতে থাকলেও তা আগে থেকে তালিকায় উল্লেখ করে দিতে হবে।
বিভিন্ন এআই টুলের সাহায্যে এখন বাস্তব চিত্র, অডিও, ভিডিও তৈরি করা যায়। অনেক সময় দর্শকরা আসল নকলের ফারাক ধরতে পারেন না। তাই তারা যাতে বিভ্রান্ত না হন এজন্য নির্মাতাদের ভিডিওতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওর উৎস লেখা থাকবে। এর ফলে দর্শকরা সহজেই বুঝতে পারবেন ভিডিওটি মৌলিক নাকি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সৃষ্ট। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি ভিডিওর মাধ্যমে ভুয়া তথ্য ও গুজব ছড়ানো ঠেকাতেই এ নিয়ম চালু করেছে বলে জানিয়েছে ইউটিউব।
নির্মাতারা জানানোর পর ওই সব ভিডিওতে ইউটিউব কর্তৃপক্ষ লেবেল যুক্ত করবে যেখানে লেখা থাকবে ভিডিওটি পরিবর্তিত বা এর শব্দ বা ভিজ্যুয়াল ডিজিটাল ভাবে উৎপাদিত। রাজনীতির মতো 'সংবেদনশীল' বিষয়ের লেবেল ভিডিও স্ক্রিনে আরও বিশিষ্টভাবে যুক্ত করা হবে।
সেপ্টেম্বরে চালু হওয়া ইউটিউবের নিজস্ব জেনারেটিভ এআই টুল দিয়ে তৈরি কনটেন্টগুলোও পরিষ্কারভাবে লেবেল করা হবে বলে গত বছর জানিয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি।
অনলাইন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা উদ্বিগ্ন যে এআই টুলের এই বিস্তার ব্যবহারকারীদের বিভ্রান্ত করতে পারে, জনগণের মধ্যে গুজব ও ভুয়া তথ্য ছড়াতে পারে, বিশেষত যুক্তরাষ্ট্রের ২০২৪ সালের নির্বাচনের সময়ে।
ইউটিউব আরও জানিয়েছে ভিডিওতে মিথ্যা বা ভুল তথ্য থাকলে সেই ভিডিও স্বয়ংক্রিয়ভাবে মুছে ফেলবে তারা। তবে এআই সৃষ্ট যেসব ভিডিও অতি বাস্তব মনে হবে যা দর্শকদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে শুধু সেগুলোতেই লেবেলিং করা লাগবে, অ্যানিমেশন বা ছোটখাটো ভিজ্যুয়ালে উল্লেখ করতে হবে না। স্ক্রিপ্ট বা ক্যাপশন তৈরির মতো সৃজনশীল কাজের জন্য নির্মাতারা এআই ব্যবহার করেছেন কিনা তাও প্রকাশ করার দরকার নেই।
তবে যেসব নির্মাতা নতুন এ নিয়ম অনুসরণ না করে বারবার একই ভুল করবেন, তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে ইউটিউবের পার্টনার প্রোগ্রাম থেকে নিয়মভঙ্গকারী নির্মাতা বা চ্যানেলগুলো ব্লক করা হবে, যার ফলে আর ইউটিউব থেকে আয় করতে পারবেন না তারা।
অনুবাদ: সাকাব নাহিয়ান শ্রাবন