যুদ্ধবিরতির দাবিতে নিউ ইয়র্কের সড়কে সহস্র ফিলিস্তিনপন্থীর বিক্ষোভ
ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের জেরে প্রতিদিনের বিক্ষোভের অংশ হিসেবে গত শুক্রবারেও (১৭ নভেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের সড়কে বিক্ষোভ করেছে সহস্রাধিক মানুষ। কর্মসূচি থেকে ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকারীরা গাজায় যুদ্ধবিরতির দাবি জানান।
এর আগে ইউনিয়ন স্কয়ার, ম্যাডিসন এভিনিউ, জাতিসংঘের কার্যালয়ের আশে-পাশেসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে র্যালি বের করে বিক্ষোভকারীরা। তারা র্যালি নিয়ে নিউ ইয়র্কের পার্শ্ববর্তী মিডটাউন ম্যানহাটন শহর প্রদক্ষিণ করে।
কর্মসূচি থেকে বিক্ষোভকারীরা ফিলিস্তিনি পতাকা ওড়ানোর পাশাপাশি হাতে লেখা 'এখন যুদ্ধবিরতি' প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করে। তারা 'প্যালেস্টাইনকে মুক্তি দাও' বলে স্লোগান দেন।
৬৯ বছর বয়সী ডেবি বাইটার তার কাঁধে ফিলিস্তিনি পতাকা নিয়ে মিছিলে অংশ নেন। তিনি আশা করেন, এসব কর্মসূচি রাজনীতিবিদদের মনযোগ আকর্ষণ করবে এবং তাদের যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাতে এবং ইসরায়েলের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা বন্ধ করার জন্য চাপ দেবে।
বাইটার বলেন, 'প্রতিদিন আমি ফিলিস্তিনিদের ওপর গণহত্যা দেখছি। এটি চলতে থাকতে পারে না।'
গত ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলের উপর নজিরবিহীন হামলা চালায় ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের মতে, এ হামলায় প্রায় এক হাজার দুই শ মানুষ নিহত হয়। হামাসের হাতে জিম্মি হয় দুই শরও বেশি মানুষ। জবাবে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। পরে গাজায় স্থল অভিযানও শুরু হয়। এতে এখন পর্যন্ত ১২ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।
অভিনেত্রী সুসান সারানডন এসব প্রতিবাদ কর্মসূচিতে নিয়মিত মুখ। তিনি বলেন, 'এমন একটি ভয়ানক ঘটনা ঘটেছে যেখানে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কথা বলার সাথে ইহুদি বিদ্বেষকে গুলিয়ে ফেলা হয়েছে।'
এই অভিনেত্রী আরো বলেন, 'আমি ইহুদিবাদের বিরুদ্ধে। আমি ইসলামফোবিয়ার বিরুদ্ধে।'
ডাউনটাউন ব্রুকলিনে শুক্রবার সন্ধ্যায় সংখ্যালঘু নেতা নিউ ইয়র্কের প্রতিনিধি হেকিম জেফ্রিজের ডিস্ট্রিক্ট অফিসের বাইরে কয়েক শ লোক জড়ো হয়ে যুদ্ধেবিরতির আহ্বান জানায়।
বিক্ষোভে প্রাপ্তবয়স্ক এবং শিশু উভয়েই অংশ নেয়। সন্ধ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিক্ষোভাকরীদের সংখ্যাও বাড়তে থাকে। তারা স্লোগান দেয় 'ইসরায়েলের অপরাধের জন্য আর কোনো অর্থ নয়।' এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে জেফ্রিজের মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
২৫ বছর বয়সী হালিমা-জয় এলিস্টন জানান, তিনি গাজায় ইসরায়েলের অব্যাহত বোমা হামলায় মার্কিন সরকারের সমর্থনের সাথে একমত নন। তিনি ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে জেফ্রিসের অফিসের বাইরে প্রতিবাদ কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, 'তাদের (ফিলিস্তিনি) পক্ষে সমর্থন প্রয়োজন।'
যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে নিউ ইয়র্ক সিটিতে বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ কর্মসূচি করে আসছে।
শহরের অন্য অংশে নিউ ইয়র্কের প্রতিনিধি ড্যান গোল্ডম্যান বলেছেন যে সকালে তার ব্রুকলিন অফিস ভাঙচুর করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার অফিসের কিছু ছবি পোস্ট করা হয়েছে। একটি ছবিতে একটি জানালার ওপর লাল গ্রাফিতিতে 'ফিলিস্তিনকে মুক্তি দাও' লেখা দেখা গেছে। অন্য একটি ভবনের দেওয়ালে 'গাজাকে বাঁচতে দাও' লেখা দেখা যায়।