যুদ্ধ থামাতে এখন আর কূটনৈতিক আলোচনা সম্ভব নয়: রুশ কূটনীতিক

ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানে আর কোনো কূটনৈতিক পথ খোলা নেই বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘে রাশিয়ার স্থায়ী প্রতিনিধি গেনাডি গ্যাতিলভ। ইউক্রেনে মস্কোর সামরিক অভিযানের ৬ মাস পর, চলতি সপ্তাহে রুশ কূটনীতিক সতর্ক করেছেন, সামনে এই সংঘাত আরও দীর্ঘ হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদপত্র ফিনান্সিয়াল টাইমসের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে এ খবর।
গ্যাতিলভ ফিনান্সিয়াল টাইমসকে বলেন, চলমান এই সংঘাত থামাতে জাতিসংঘের আরও বড় ভূমিকা পালন করা উচিত। একইসঙ্গে ইউক্রেনকে আলোচনা থেকে সরে যেতে চাপ দেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য ন্যাটো দেশগুলোকে অভিযুক্ত করেন তিনি।
গ্যাতিলভ জানান, এখন আর পুতিন এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে সরাসরি কোনো আলোচনা সম্ভব নয়।
"এই মুহূর্তে আমি কূটনৈতিক যোগাযোগের কোনো সম্ভাবনা দেখছি না এবং সংঘাত যত বাড়বে, কূটনৈতিক সমাধান করা ততই কঠিন হয়ে উঠবে", যোগ করেন তিনি।
ইউক্রেনের কৃষ্ণ সাগর বন্দরগুলো দিয়ে শস্য রপ্তানির সাম্প্রতিক চুক্তির পরিপ্রেক্ষিতে যারা আশা করেছিলেন সংঘাত থামাতে এখনও কূটনৈতিক সমাধান সম্ভব, গ্যাতিলভের মন্তব্যে অনেকটা ধাক্কা খেয়েছেন তারা।
যুদ্ধকে কেন্দ্র করে জাতিসংঘ 'রাজনীতিকরণে' নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে, যা 'জাতিসংঘ এবং এর সংস্থাগুলোর কর্তৃত্বকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে'। ফলে এটি সংকট সমাধানে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না বলেও অভিযোগ করেন গ্যাতিলভ।
জেনেভায় নিজের প্রতিদিনের কাজের বিষয়ে তিনি বলেন, "পশ্চিমা প্রতিনিধিদের সঙ্গে আমাদের কোনো যোগাযোগ নেই। প্রটোকলের দিক দিয়ে বলতে গেলেও আমাদের মধ্যে দেখা-সাক্ষাত নেই . . দুর্ভাগ্যবশত, ব্যক্তিগত পর্যায়েও আমাদের মধ্যে কোনো পরিচিতি নেই . . আমাদের একে অপরের সঙ্গে কথা হয় না।"
নিজের ৫০ বছরের কূটনৈতিক জীবনে বিশ্ব কূটনীতি সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় রয়েছে বলে মন্তব্য করেন গ্যাতিলভ।
তিনি বলেন, "পৃথিবী পরিবর্তিত হয়েছে এবং জাতিসংঘ কখনোই আর আগের মত থাকবে না।"
ইউক্রেনকে 'নব্য নাৎসিমুক্ত' করতে দেশটির মস্কোপন্থী দুই অঞ্চল, দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃত দিয়ে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি 'বিশেষ সামরিক অভিযান' শুরু করে রাশিয়া। এর পরিপ্রেক্ষিতে পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার ওপর ব্যাপক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের পাশাপাশি ইউক্রেনকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে সামরিক সরঞ্জাম দিয়েও সাহায়তার চেষ্টা করে। এরইমধ্যে বেশ কয়েকবার রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত থামাতে আলোচনার উদ্যোগও নেওয়া হয়। তবে এসবের কোনো উদ্যোগই সফল হয়নি।
- সূত্র: ফিনান্সিয়াল টাইমস