হামলার জন্য রুশদি ও তাঁর সমর্থকরাই দায়ী: ইরান

শুক্রবার (১২ আগস্ট) হামলার শিকার ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ সাহিত্যিক সালমান রুশদির শারীরিক পরিস্থিতি এখন অনেকটাই স্থিতিশীল। ক্ষত সামলে সেরে উঠতে শুরু করেছেন তিনি। লেখকপুত্র জাফর রুশদি ও বুক এজেন্ট অ্যান্ড্রিউ ওয়াইলির একাধিক টুইট বার্তায় জানা গেছে এ তথ্য।
প্রায় ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় উৎকণ্ঠার প্রহর কাটিয়ে শনিবার (১৩ আগস্ট) ভেন্টিলেশন সাপোর্ট থেকে সরানো হয় তাকে। রোববার (১৪ আগস্ট) লেখকের কর্মকর্তা ওয়াইলি জানিয়েছেন, "ভেন্টিলেটর থেকে সরানোর পরেই সুস্থতার দিকে যাত্রা শুরু হয়েছে বর্ষীয়ান এই সাহিত্যিকের। ক্ষত গভীর, তাই সারতে অনেক সময় লাগবে। তবে এটুকু বলা যায়, সুস্থতার পথে এগোচ্ছেন তিনি।" একই কথা টুইট করে জানিয়েছেন লেখকের প্রাক্তন স্ত্রী পদ্মা লক্ষ্মীও।
এদিকে, সোমবার (১৫ আগস্ট) ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, রুশদির ওপর হামলার জন্য দায়ী রুশদি নিজেই এবং তার অনুরাগী-সমর্থকরা। মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসের কানানি বলেন, বাকস্বাধীনতা কখনোই ধর্মঅবমাননার সমার্থক হতে পারে না। সলমন রুশদি নিজের লেখার মাধ্যমে নিজেকে এভাবে বিপন্ন করেছেন।
১৯৮৮ সালে রুশদির বিতর্কিত বই 'দ্য স্যাটানিক ভার্সেস' প্রকাশিত হওয়ার পর ধর্মদ্রোহের অভিযোগে ইসলামপন্থীদের ব্যাপক রোষের শিকার হন তিনি; মৃত্যুর হুমকিও পেয়েছেন বহুবার। এমনকি, ওই বইয়ের কারণে ১৯৮৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি তাঁর নামে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেছিলেন ইরানের তৎকালীন সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ রুহুল্লা খোমেনি। মৃত্যু পরোয়ানা জারির পর অনেকটা সময় আত্মগোপনে ছিলেন লেখক।
পশ্চিম নিউইয়র্কের শাটাকোয়া ইনস্টিটিউটের এক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে গিয়ে শুক্রবার ছুরির হামলার শিকার হন ৭৫ বছরের রুশদি। মঞ্চে উঠে তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে হাদি মাতার নামে ২৪ বছরের এক যুবক। এলোপাথাড়ি ছুরির আঘাত বসাতে থাকে লেখকের ওপর। গুরুতর জখম অবস্থায় সঙ্গে সঙ্গেই রুশদিকে নিয়ে যাওয়া হয় নিউইয়র্কের এক হাসপাতালে। দীর্ঘ সময় ধরে চলে অস্ত্রোপচার। শনিবার রাতে লেখকের শারীরিক অবস্থা উন্নতির দিকে যাওয়ার খবরে স্বস্তি ফিরে পান তাঁর অনুরাগীরা। লেখকপুত্র জাফর জানিয়েছেন, অল্প স্বল্প কথাও বলতে পারছেন তিনি।
- সূত্র: বিবিসি