স্বৈরাচারের বিদায়ে গণতন্ত্রের আগমণ: অতঃপর শুরু হলো ছাত্র রাজনীতির ভাঙন
'বাংলাদেশ কাঁপানো সাত বছর', প্রশ্ন উঠতে পারে কোন সাতবছরের কথা বলছি? ১৯৮৩ থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত এরশাদ সরকারের সেই সময়টার কথা বলছি, যখন ছিল আমাদের ছাত্রজীবন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐ সময়টা আমার কাছে জীবনের শ্রেষ্ঠ একটি সময়। যদিও পড়াশোনা বিপর্যস্ত হয়েছে, ক্লাস হয়নি নিয়মিত, বহুবার পরীক্ষা পিছিয়েছে, ৪ বছরের কোর্স ৮ বছরে শেষ করেছি, কিন্তু তাও বিখ্যাত লেখক জন রীড-এর ১৯১৭ সালের অক্টোবর বিপ্লবের ঘটনার উপর লেখা সেই অনবদ্য বই 'দুনিয়া কাঁপানো দশ দিন' এর অনুকরণে বলতে চাই 'বাংলাদেশ কাঁপানো সাত বছর'।
এতগুলো মূল্যবান বছর নষ্ট হওয়ার পরেও কেন আমার কাছে ঐ সময়ের ছাত্র জীবনটা এতোটা গর্বের, এতোটা প্রিয়? কারণ সেইসময়ে আমরা দেখেছি ছাত্র রাজনীতি বা ছাত্র আন্দোলন কিভাবে জাতীয় রাজনীতিকে প্রভাবিত করেছে, পথ দেখিয়েছে, সব পেশাজীবি শক্তিকে এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধ করেছে। চারিদিকের সব আন্দোলন, সংগ্রামের পথ এসে মিশেছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে।
প্রতিটা রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠন ছিল সক্রিয়। ঐক্যবদ্ধ ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ও ছাত্রদল ভিন্ন ভিন্ন ব্যানারে মিছিল, মিটিং করলেও, এরশাদ পতন আন্দোলনই ছিল তখন সবার একমাত্র লক্ষ্য। কবি হেলাল হাফিজ তাঁর সেই বিখ্যাত কবিতা "এখন যৌবন যার মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়, এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়, মিছিলের সব হাত/কণ্ঠ/পা এক নয়" লিখেছিলেন বোধকরি সেইসময়ের তারুণ্য ও সংগ্রামকে ঘিরে।
এরশাদের পোষ্য 'নতুন বাংলা ছাত্রসমাজ' মাঠে নামার পর, ছাত্র আন্দোলন বেশ মারমুখী হয়ে উঠেছিল। ছাত্ররা অস্ত্রশস্ত্রসহ ক্যাম্পাসে অবস্থান নেয়, সকাল থেকে সন্ধ্যা অব্দি মিটিং, মিছিল, গোলাগুলি, ধাওয়া পাল্টা বোমা বিস্ফোরণ, নিহত-আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেই চলেছে। এরমধ্যেই ক্লাস, পরীক্ষা চলছে। পরিবেশটা এমন ছিল শুধু এইজন্য যে, ছাত্র আন্দোলনগুলো তখন লক্ষ্যচ্যুত ছিল না, ছিল না নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য, টাকা-পয়সা ভাগ বাটোয়ারার জন্য বা টেন্ডার পাওয়ার জন্য। খামোখা বিভিন্ন দলের ছাত্র সংগঠনের মধ্যে কোন হানাহানি ছিল না। আর তাই সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা সবাই এই আন্দোলন সংগ্রামে ছাত্র সংগঠনগুলোর পক্ষেই ছিল। ইতিহাসে ছাত্র রাজনীতির আরো অনেক উজ্জ্বল অধ্যায় আছে। প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে আমি কেবল আমার দেখা সময়টার কথাই বললাম।
কেন হঠাৎ ৩০/৩২ বছর আগের ছাত্র রাজনীতির আলোচনা শুরু করলাম? কারণ গত কয়েকদিন ধরেই দেখছি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি শুরু করার তোড়জোড় শুরু হয়েছে। গণহারে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের মধ্যে নতুন করে শঙ্কা তৈরি করেছে। আগে ১২টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কমিটি থাকলেও গত কয়েক দিনে ৪০টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কমিটির অনুমোদন দিয়েছে সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতির দাপট, অস্থিরতা, সেশনজট দেখে অনেকেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছেন। বেশি টাকা পয়সা লাগলেও শিক্ষার পরিবেশ, সেশনজট, রাজনৈতিক সংঘাত সবকিছু মিলিয়ে উদ্বেগ থাকায় অভিভাবকরাও তাতে সায় দিয়েছেন। এখন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি ছাত্র রাজনীতি শুরু হয়, তাহলে সেই দুশ্চিন্তা আবারও ফিরে আসে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করলে তার ফলাফল খুব ভালো হয় না বলে মত দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। আমরা যদি মন্ত্রী মহেদয়কে প্রশ্ন করি ছাত্র রাজনীতি করে গত ২৫/৩০ বছরে এদেশের ছাত্রছাত্রী, বিশ্ববিদ্যালয়ের কী এমন লাভ হয়েছে? হানাহানি, মারামারি, হেলমেট পার্টি তৈরি করা, চাঁদাবাজি করা, টেন্ডার ব্যবসা, সেশন জট তৈরি করা ছাড়া কোন সুস্থ ছাত্র রাজনীতিতো দেখছি না। তাই এখন অনেকেই মনে করেন ছাত্র রাজনীতির কোন দরকার আছে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা ভয় পাচ্ছেন এই ভেবে যে, ছাত্রলীগ যেখানে ঢুকবে সেখানে স্বাভাবিকভাবেই অন্যান্য ছাত্রসংগঠনও এসে ঢুকবে। সব সংগঠনের এক জায়গায় সরব রাজনীতির ফলাফল তো তারা বহুবছর ধরেই দেখছে। সত্যি কথা বলতে ছাত্র রাজনীতির সুস্থ চর্চা কিন্তু হারিয়ে গেছে, যেটা আছে, সেটা হলো ক্ষমতা প্রদর্শন।
এই ক্ষমতা দেখাতে গিয়ে কে যে কার উপর চড়াও হয়, কে কোথায় হানাহানি করে, কে কোথায় কার নামে চাঁদাবাজি করছে, তা দেশের মানুষ দেখেছে। আর দেখেছে বলেই উদ্বেগ ঘিরে ধরেছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাজনীতিই যেখানে অস্থিরতার ভেতর দিয়ে চলছে, সেখানে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে সুস্থ ছাত্র রাজনীতি কিভাবে আশা করতে পারি আমরা? যদিও ছাত্র রাজনীতিকরা মনে করেন, কোন সমস্যা হবে না কিন্তু আমাদের সামনে ইতিবাচক কোন উদাহরণ নেই গত প্রায় তিন দশক ধরে।
এরমধ্যে বুয়েটে আবরারের নৃশংস হত্যাকান্ড ছাত্রছাত্রীদের মনে যে ভীতির সৃষ্টি করেছে, তা এখনো বয়ে বেড়াচ্ছে ছাত্রছাত্রীরা। গণমাধ্যমের খবরে প্রায়ই দেখতে পাই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে জুনিয়র স্টুডেন্টদের না চাইলেও প্রতিটা রাজনৈতিক দলের মিছিলে যেতে হয়, তা সে ওই মতাদর্শে বিশ্বাসী হোক বা না হোক। কথায় কথায় চলে চড়-থাপ্পর এবং শেষ পর্যন্ত শিবির করে এই অভিযোগে নানা ধরনের অত্যাচার করা হয়। বিশেষ করে ছাত্রছাত্রীদের আবাসিক হলের সীট বরাদ্দের পুরাটাই নিয়ন্ত্রিত হয় ছাত্র সংগঠনের নেতাদের দ্বারা, এমন অভিযোগও রয়েছে। সম্প্রতি ইডেন কলেজের ছাত্রলীগ নেত্রীর হুমকি-ধামকির অডিও ফাঁস হয়ে যাওয়ায় বোঝা গেছে নারীরাও পিছিয়ে নেই।
সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা মনে করেন বারবার সরকার বদল হয়েছে কিন্তু ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনগুলোর নাম বদলালেও আচরণের কোন পরিবর্তন হয়নি। তবে ছাত্রলীগ আর ছাত্রদল, দুই দলই দাবি করে, সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্যই তারা আন্দোলন করেন এবং কাউকে জোর করে মিটিং মিছিলে আনেন না। যদিও ছোটখাটো ভুল ত্রুটি হতে পারে।
অথচ সম্প্রতি চাঁদাবাজি ও দুর্নীতির অভিযোগে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। বিএনপি-জামায়াত সরকার ক্ষমতায় থাকার সময়েও ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধেও একই ধরনের অভিযোগ উঠেছে। এসব নিয়ে সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে।
এখন যেকোন বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোন শিক্ষার্থীর কাছে যদি জানতে চাই ছাত্র রাজনীতি তাদের জন্য কখনো কোন সুবিধা এনেছে কিনা? তারা স্পষ্টতই 'না' বলবে। অথচ এই আমরা, যাদের জীবনের ৭টা বছর নষ্ট হয়েছে ছাত্রদের এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের কারণে, তারা কিন্তু এখনো শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি সেই আগুন জ্বালানো দিনগুলোতে ছাত্র আন্দোলনের কথা।
ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে আমাদের মুক্তিযুদ্ধে ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকা ছিল অনবদ্য। ছাত্র সংগঠনগুলো তখন ছিল রাজনৈতিক দলগুলো শক্তিশালী ভিত্তি। ছাত্ররা তখন দেশের কথা বলতো, মানুষকে পরাধীনতার হাত থেকে মুক্ত করার কথা বলতো।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একদিনে শতাব্দীর সেরা বাঙালি হননি। তিনি সেই স্কুলজীবন থেকে ছাত্র রাজনীতি শুরু করেছিলেন। মানুষের মঙ্গলের জন্য সংগ্রাম করতে গিয়ে জেল খেটেছেন, নিপীড়িত হয়েছেন। সেই সময়কার ছাত্র আন্দোলন, ছাত্র সংগঠন ছিল দেশের গর্ব, জৌলুস। সেইসময়ের উত্তরাধিকার হয়ে আমরা এখন কোন ছাত্র সংগঠনকে ধারণ করছি, যাকে মানুষ ভয় পায়, এড়িয়ে চলে।
ইতিহাসবেত্তা অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন 'কালি ও কলম' ম্যাগাজিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছাত্র রাজনীতির বিভিন্ন দিক তুলে ধরেছেন বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনী থেকে। স্কুল থেকেই রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি পড়াশোনার চাইতে রাজনীতিই বেশি করেছেন।
বঙ্গবন্ধু লিখেছেন, সে-সময় তাঁর বাবা তাঁকে একটি কথা বলেছিলেন যা তাঁকে পথ দেখিয়েছে। তিনি বলেছিলেন, "বাবা রাজনীতি কর আপত্তি করব না, পাকিস্তানের জন্য সংগ্রাম করছ এ তো সুখের কথা, তবে লেখাপড়া করতে ভুলিও না। লেখাপড়া না শিখলে মানুষ হতে পারবে না। আর একটা কথা মনে রেখ, Sincerity of purpose and honesty of purpose থাকলে জীবনে পরাজিত হবা না। একথা কোনোদিন আমি ভুলি নাই" (আত্মজীবনী, পৃ ২১)।
শেখ মুজিবের জবানবন্দিতে দেখা যাচ্ছে, ১৯৪৩ থেকে ১৯৪৯ তিনি মুসলিম লীগের রাজনীতিতে আচ্ছন্ন। মুসলিম লীগ ও পাকিস্তান আন্দোলন ছিল ধ্যান-জ্ঞান এবং তিনি দিবারাত্রি রাজনৈতিক কর্মী সেই থেকেই। তবে, আত্মজীবনীতে পাই ১৯৩৮ সাল থেকেই রাজনীতির সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ বিশেষ করে ফজলুল হক ও সোহরাওয়ার্দীর সঙ্গে।
মুজিবের জন্ম থেকে বেড়ে ওঠাটা স্বদেশি আন্দোলনের মাঝে। ওই সময়ের কথা স্মরণ করে আত্মজীবনীতে লিখেছেন, "ইংরেজদের বিরুদ্ধেও আমার মনে বিরূপ ধারণা সৃষ্টি হলো। ইংরেজদের এ দেশে থাকার অধিকার নাই। স্বাধীনতা আনতে হবে। আমিও সুভাষ বাবুর ভক্ত হতে শুরু করলাম।" এই কথাগুলো তুলে ধরলাম এই কারণে যে ছাত্রলীগকে বুঝতে হবে তারা কার আদর্শের সৈনিক।
একটি গণমাধ্যম সমাজবিজ্ঞানী এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক সামিনা লুৎফার কাছে জানতে চেয়েছিল, ছাত্র রাজনীতির বিষয়টি এমন বিতর্কিত কেন হয়ে উঠলো? তিনি বলেছেন, "ছাত্র রাজনীতি মানে হলো ছাত্ররা নিজের স্বার্থে কথা বলবে, এটাই হওয়ার কথা। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরকার দলীয় ছাত্র সংগঠন, সেটা ছাত্রলীগ বা ছাত্রদল, যারা যখন ক্ষমতায় থাকে, তারা কি সেটা করেন? এরা করেন গুণ্ডামি, মাস্তানি ও সন্ত্রাস। এটা তো ছাত্র রাজনীতি না।"
ছাত্র রাজনীতিসহ দলীয় রাজনীতিকে দূষিত করার ফলে এখন দেশে একটা বিপদজনক রাজনীতিবিমুখ প্রজন্ম বেড়ে উঠছে। এরা রাজনীতি পছন্দ করে না, দেশের ভালমন্দ নিয়ে ভাবে না, রাজনীতিকে ভয় পায়, এড়িয়ে চলে। এদের অনেকেই মনেকরে মন্দ লোকেরাই রাজনীতি করবে টাকা ও ক্ষমতার জন্য, ভালোরা নয়। শুধু নতুন প্রজন্মই নয়, সব বয়সের মানুষের মধ্যেই রাজনীতি নিয়ে এক ধরনের অনীহা কাজ করছে।
সত্যি কথা বলতে, এখন আমি বা আমার মতো সাধারণ অভিভাবকরা কেউ চাইছেন না যে তার সন্তান ছাত্ররাজনীতি করুক। আর মন্ত্রী-এমপি-নেতা-আমলারা তো তাদের সন্তানদের এদেশে পড়ান না। তারা বিদেশে থাকে, বিদেশে পড়ে। কাজেই এদেশে এসে রাজনীতি করার প্রশ্নই আসে না। দেশ, রাজনীতি, ছাত্র রাজনীতি গোল্লায় গেলে তাদের যেন কিছু যায় আসে না।
তাহলে কি এই দাঁড়াচ্ছে যে এইভাবে দেশটা একদিন নষ্টদের দখলে চলে যাবে? ব্যর্থ হয়ে যাবে গণতান্ত্রিক সব আন্দোলন, বাংলাদেশ সৃষ্টি, স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন ও একটি স্বাধীন দেশের রাজনৈতিক বাঁক বদলে ছাত্র রাজনীতির গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা? আজকালকার ছাত্র সংগঠনগুলো কেন পারছে না গৌরবের সেই ইতিহাসকে ধরে রাখতে?
বারবার বলছি, বাংলাদেশে ছাত্র রাজনীতির উজ্জ্বল ঐতিহ্য রয়েছে। ৫২ ভাষা আন্দোলন, ৬২ শিক্ষা আন্দোলন, ৬৯ গণঅভ্যুত্থান, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে ছাত্রদের অবদান লিখে রাখার মতো। কিন্তু ৯০ সালে স্বৈরাচারের বিদায়ের পর যখন গণতন্ত্র এলো, ঠিক সেইসময় থেকেই শুরু হয়েছে ছাত্র রাজনীতির ভাঙন। কেন? এই নিয়ে কি আমাদের কোন গবেষণা আছে? কেউ কি চিন্তা করেছেন এই বিষয়ে?
শুধু বলতে চাই বাংলাদেশ থাকলে, রাজনীতি থাকবেই। আর ছাত্ররা যদি সুস্থ রাজনীতির চর্চা করতে না পারে, তাহলে আসলেই সবকিছু নষ্ট মানুষদের দখলে চলে যাবে। তাই আবার কবি হেলাল হাফিজের কথায় বলতে চাই ---"উৎকৃষ্ট সময় কিন্তু আজ বয়ে যায়। শাশ্বত শান্তির যারা তারাও যুদ্ধে আসে। অবশ্য আসতে হয় মাঝে মধ্যে --- অস্তিত্বের প্রগাঢ় আহ্বানে।"
- লেখক: সিনিয়র কোঅর্ডিনেটর, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন