নির্বাচনের দিকে নজর আওয়ামী লীগের, নেতাকর্মীদেরকে রাজপথ দখলের নির্দেশ

নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর যেকোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আরও কঠোর অবস্থানে যাবে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ।
একইসাথে নির্বাচনে জয়লাভ করার জন্য মাঠ ধরে রাখতে বদ্ধ পরিকর দলটি।
এজন্য রাজপথ দখল ও নির্বাচনের কাজ করতে দলটির সকল স্তরের নেতা কর্মী ও মনোনয়ন প্রত্যাশিদের কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ।
চলতি সপ্তাহেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিলের ঘোষণা আসতে পারে নির্বাচন কমিশসন (ইসি) থেকে।
তফসিলের পর বিএনপিসহ তার মিত্রদলগুলো সরকারের পদত্যাগ আর নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে চলমান আন্দোলন আরো জোরালো করতে পারে বলে মনে করছে আওয়ামী লীগ।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দীর্ঘ ১৭ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি এবার আওয়ামী লীগের পতনের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাতে পারে।
সাম্প্রতিক এক বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, "ক্ষমতা হারালে এক রাতে আওয়ামী লীগের ১০ লাখ নেতা-কর্মীর লাশ পরবে।"
দলটির একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানিয়েছে, দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ৯ নভেম্বর অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাহী কমিটির সভায় বিএনপি-জামায়াতের নাশকতা ঠেকানো এবং সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানে মাঠের পরিস্থিতি দলের পক্ষ রাখতে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন।
এছাড়াও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে রাজপথে থেকে বিএনপিকে মোকাবিলা ও নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করারও নির্দেশনা দিয়েছে।
আওয়ামী লীগের একজন কেন্দ্রীয় নেতা টিবিএসকে বলেন, "আওয়ামী লীগ ও ১৪ দল মাঠে থাকবে। এছাড়া আরো কিছু ছোট দল আওয়ামী লীগের হয়ে মাঠে অবস্থান করবে এবং তারা নির্বাচনে অংশ নেবে। এবারের নির্বাচনে ২০১৮ ও ১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের মতো জাতীয় পার্টি অংশ নিতে পারে। আওয়ামী লীগ সেই ছক একেই মাঠে কাজ করছে।"
তিনি বলেন, "বিএনপির মুভমেন্ট বলছে তারা নির্বাচনে যাবে না এবং নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টা করবে। কিন্তু জাতীয় পার্টি নির্বাচনে আসার সম্ভাবনা বেশি। আর আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টিকে হিসেব করেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।"
তবে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু আওয়ামী লীগের ওই নেতার বক্তব্য প্রত্যাখান করে বলেন, "জাতীয় পার্টি নির্বাচনে যাবে কি না সেটি এখনো চূড়ান্ত নয়। এটি পরিস্থিত বুঝে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।"
কিন্তু গত কয়েকদিন আগে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের এক অনুষ্ঠানের বক্তব্যে বলেন, জাতীয় পার্টি নির্বাচনমুখী দল।
এদিকে বেশ কয়েকদিন আগে জাতীয় পার্টির ১৬ এমপি সংসদ অধিবেশনের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংসদ কার্যালয়ে দেখা করেছেন।
আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্র জানিয়েছে, তফসিল ঘোষণার পর সরকারের অবস্থান আরও পাল্টে যাবে। যেকোনো মূল্যে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো সর্বোচ্চ কঠোর অবস্থানে যাবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি বলেন, "আগামী নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী ও যথাসময়েই হবে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর আচরণবিধি হবে। সবদলকেই সেটা মেনে চলতে হবে।"
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সংসদীয় উপনেতা মতিয়া চৌধুরী বলেন, "দ্রুতই তফসিল হয়ে যাবে। এখন দুটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হাতে আছে। একটি নির্বাচনের প্রস্তুতি, আরেকটি বিএনপির নেতৃত্বে আন্দোলনের নামে চালানো চোরাগোপ্তা হামলা প্রতিহত করা এবং নির্বাচনের পরিবেশ বজায় রাখা।"