ঢাকার প্রবেশমুখে যাত্রীদের মোবাইল, যানবাহন তল্লাশি করছে পুলিশ
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও আওয়ামী লীগের তিনটি সহযোগী সংগঠন এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলের বিশাল সমাবেশকে সামনে রেখে ঢাকার প্রবেশমুখে অনেক যাত্রীর মোবাইল ফোন তল্লাশি করতে দেখা গেছে পুলিশ সদস্যদের।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) রাত থেকে রাজধানীর বিভিন্ন প্রবেশমুখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছে।
শুক্রবার সকালে গাবতলীতে চেকপোস্ট বসায় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) সদস্যরা। ডিউটিতে থাকা র্যাব কর্মীরা দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, যেকোন যানবাহনকে সন্দেহজনক মনে হলেই তারা সেটি থামিয়ে তল্লাশি করছেন।
"আমরা সকাল সাড়ে ৮টা থেকে এখানে একটি চেকপোস্ট বসিয়েছি। কোনো যানবাহন সন্দেহজনক মনে হলে সেটি থামিয়ে তল্লাশি করে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। সকাল থেকে কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। কোনো বিস্ফোরক বা মাদক আছে কিনা তা আমরা খতিয়ে দেখছি। এটি কাউকে হয়রানি বা অন্য কোনো উদ্দেশ্যে নয়," বলেন তিনি।
রাজধানীর আবদুল্লাহপুরেও পুলিশকে বাস ও অন্যান্য যানবাহন তল্লাশি করতে দেখা গেছে।
এছাড়া কিছু পুলিশ সদস্যকে সাধারণ মানুষের মোবাইল তল্লাশি করতেও দেখা গেছে। মোবাইলে সন্দেহজনক কিছু পাওয়া গেলে তা জব্দ করা হচ্ছে।
আব্দুল্লাহপুর চেকপোস্ট থেকে ফকরুল হাসান নামে একজনকে আটক করা হয়। টঙ্গী থেকে ঢাকা যাচ্ছিলেন তিনি। তার মোবাইল ফোনে বিএনপির সমাবেশের ছবি পাওয়া গেছে। তবে তিনি ব্যবসার কাজে ঢাকা যাচ্ছিলেন বলে দাবি করেন।
পরে আরও দুজনকে আটক করা হয়। তারাও বিএনপির কর্মসূচিতে যোগ দেবেন না বলে দাবি করেন। তাদের অভিযোগ, বিএনপির কর্মসূচির ছবি তাদের মোবাইলে পেয়ে পুলিশ তাদেরকে আটক করে।
তবে পুলিশের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
উত্তরা পূর্ব থানার ওসি নাসির বলেন, এ বিষয়ে ডিএমপির মিডিয়া সেলকে জানানো হবে।
মোবাইল তল্লাশি করা হচ্ছে আমিনবাজারেও
রাজধানীতে দুই দলের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার থেকে ঢাকার প্রবেশপথ আমিনবাজারে চলমান পুলিশের তল্লাশী কার্যক্রম শুক্রবার সকাল থেকে আরও জোরদার করা হয়।
এতে সকাল ১০ টা পর্যন্ত ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ঢাকামুখী লেনে কিছুক্ষণ পরপর ১.৫ থেকে দুই কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
এসময় চেকপোস্টে ঢাকাগামী বিভিন্ন যাত্রীদের থামিয়ে তাদের ব্যাগ তল্লাশীর পাশাপাশি জিজ্ঞাসাবাদ করাসহ তাদের মুঠোফোন চেক করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে।
মুঠোফোন ঘেঁটে বিএনপির কোন সভা সমাবেশের ছবি পাওয়া গেলে তাদের আটক করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জিজ্ঞাসাবাদ ও তল্লাশির পর আমিনবাজার ২০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের ভেতর আটক হওয়া বেশ কয়েকজনের সাথে টিবিএস কথা বলে।
সেখানে আটক থাকা ফজলুল হক নামে এক ব্যক্তি বলেন, "আমরা দুইজন সকালে ব্যবসার কাজে মালামাল কিনতে চন্দ্রা থেকে একটি হাইয়েস মাইক্রোবাসে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেই। গাড়ি চেকপোস্টে আসলে পুলিশ থামিয়ে আমাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে।"
"পুলিশ পরে মোবাইল চেক করে আমার ফেসবুকে বিএনপির সমাবেশের একটি ছবি পাওয়ায় আমাদের দুজনকে এখানে আটকে রেখেছে, কোথাও যেতে দিচ্ছে না। মোবাইলও নিয়ে গিয়েছে," বলেন তিনি।