বাংলাদেশি শিশুর চিঠির জবাব দিলেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং
সম্প্রতি বাংলাদেশের এক শিশুর লেখা চিঠির জবাব দিয়েছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। চিঠিতে শি তাকে মন দিয়ে পড়াশোনা করতে উপদেশ দেন। নিজ লক্ষ্য অর্জনে কঠোর পরিশ্রম করতে এবং বড় হয়ে বাংলাদেশ ও চীনের ঐতিহ্যবাহী বন্ধুত্বের সম্পর্ক এগিয়ে নিতেও বলেছেন।
আলিফা চীন নামের শিশুটির জন্ম ২০১০ সালে। আলিফা গর্ভে থাকা অবস্থায় তার মায়ের হৃদযন্ত্রের জটিল সমস্যা দেখা দেয়। এতে তাকে জন্মদান করাই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায়। এসময় বাংলাদেশ সফরে এসেছিল চীনা নৌবাহিনীর একটি হাসপাতাল জাহাজ 'দ্য পিস আর্ক'। এই সংবাদ জেনে, স্থানীয় হাসপাতালে ছুটে আসেন জাহাজের সামরিক চিকিৎসকরা। খুবই সতর্কতার সাথে তারা সিজারিয়ান সেকশন সম্পন্ন করেন। এভাবেই মা ও কন্যা শিশু উভয়ের প্রাণরক্ষা হয়। এই ঘটনার কৃতজ্ঞতাস্বরূপ মেয়ের পুরো নাম আলিফা চীন রাখেন তার বাবা।
আলিফাকে লেখা চিঠিতে শি জিনপিং বলেছেন, তার জন্ম ইতিহাস দুই দেশের দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বের নিদর্শন। সুপ্রাচীন কাল থেকে বাংলাদেশের বর্তমান ভূখণ্ডের সাথে চীনের যোগাযোগ ও সুসম্পর্ক ছিল। উভয়ে ছিল ভালো প্রতিবেশী ও বন্ধু। এই সম্পর্কের প্রেক্ষাপট হাজার হাজার বছরের।
শি তাকে চীনের মিং রাজবংশের শাসনকালের একটি ইতিহাস জানান। ওই সময় চীনের বিখ্যাত নৌ-অভিযাত্রী, কূটনৈতিক ও অ্যাডমিরাল ঝেং হে দুইবার প্রাচীন বাংলায় আসেন। তার এই সফর উভয় সংস্কৃতির মানুষের মধ্যে বন্ধুত্বের বীজ বুনে দেয়।
৬০০ বছর পর এই সম্পর্কের ধারাবাহিকতাতেই বাংলাদেশে মানবিক সহায়তা দানে সফরে আসে 'দ্য পিস আর্ক' নামক জাহাজটি। চীনের নারী সামরিক চিকিৎসকরা আলিফার জন্মদানে সাহায্য করেন। দুই দেশের সম্প্রীতির এটি হ্রদয়গ্রাহী এক গল্প বলে উল্লেখ করেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট।
শি বলেন, আলিফা বড় হয়ে বাংলাদেশ ও চীনের বন্ধুত্বের দূত হতে চায় একথা জেনে তিনি ভীষণ আনন্দিত।
বড় হয়ে আলিফা চীনের মেডিকেল কলেজে পড়াশোনা করতে চায়, যাতে সেও অন্য মায়েদের জীবন বাঁচাতে পারে। নিজের লেখা চিঠিতে আলিফা তার জীবনদায়ী নারী চিকিৎসকদের তার 'চীনা মা' বলে উল্লেখ করেছিল।
শি জিনপিং আশাপ্রকাশ করেন, শৈশব ও তারুণ্যের সদ্ব্যবহার করে আলিফা মন দিয়ে পড়াশোনা করবে, এবং তার এই স্বপ্ন পূরণের পথে এগিয়ে যাবে। তখন সে নিজের পরিবার, সমাজ ও দেশের জন্য অবদান রাখতে পারবে।
আগামী ২০ নভেম্বর বিশ্ব শিশু দিবস। এই উপলক্ষে চিঠিতে আলিফার সুস্বাস্থ্য, পড়াশোনায় সাফল্য ও সুখী পারিবারিক জীবন কামনা করেন শি।