বাস ভাড়া নিয়ে রাবি শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ: আহত ২০০, হাসপাতালে ভর্তি ৮৫ জন
বাস ভাড়া নিয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সংঘর্ষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) দুই শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
এদের মধ্যে ৮৫ জন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (রামেক) চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে নিশ্চিত করেছেন রাবির প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক।
তিনি বলেন, "আহত শিক্ষার্থীদের অনেকেই প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে এসেছেন আবার অনেকে হাসপাতালে ভর্তি আছেন।"
রাত ২টার পরে শিক্ষার্থীরা হলে ফিরে গেলে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আসে। তারপর থেকে এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা হলেই অবস্থান করছেন।
তবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুর বাজারে এখনো থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। তালাইমারী থেকে চৌদ্দপাই এলাকায় রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়ক বন্ধ করে রেখেছে পুলিশ। ঘটনাস্থলে ব্যাপক পুলিশ ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। তবে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বিনোদপুর বাজারে তাদের দোকানের সামনে অবস্থান নিয়ে আছেন। পুলিশের পক্ষ থেকে ব্যবসায়ীদের ক্ষয়ক্ষতির হিসাব পরিমাণ করা হচ্ছে।
মতিহার থানার ওসি হাফিজুর রহমান বলেন, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে সারারাত পাহারা দিয়েছেন। রাত ২টার পর থেকে শিক্ষার্থীরা হলে ফিরে গেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। তারপর থেকে আর হামলার ঘটনা ঘটেনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের তালাইমারী, কাজলা, মেইনগেট ও বিনোদপুর বাজারে পুলিশ কমিশনার ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন করেছেন।
এর আগে শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় বাসের ভাড়া দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর সাথে কথা-কাটাকাটির ঘটনা ঘটলে পরে তা স্থানীয় দোকানদার ব্যবসায়ীদের সাথে সংঘর্ষে রূপ নেয়।
তারপর থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে ধাওয়া, পাল্টা-ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। রাত ৯টা থেকে ব্যবসায়ীরা শান্ত হলেও শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুর গেটে অবস্থান নিয়ে দফায় দফায় দোকানপাটে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর চালায়। সর্বশেষ রাত সাড়ে ১২টার দিকে আগুনের গোলা মহাসড়কে নিক্ষেপ করে শিক্ষার্থীরা। এরপর শিক্ষার্থীরা রাত ২টার দিকে হলে ফিরে গেলে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আসে।
এর আগে রাত ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তেজিত শিক্ষার্থীদের এক অংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সামনে রেললাইনে অবস্থান নিলে রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেনটি বন্ধ ছিলো। পরে রাত সোয়া তিনটায় তা ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
পুলিশ কমিশনার আনিসুর রহমান বলেন, 'পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আছে। পুলিশের কেউ আহত হননি। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থী ও ছাত্র নেতাদের সাথে সকাল সাড়ে ১০টায় আলোচনায় বসার কথা রয়েছে। সেখান থেকে আমরা আশা করছি একটা সুষ্ঠু সমাধান আসবে।'