মোংলায় নিলামে উঠছে ১১৫ গাড়ি
আমদানির পর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ছাড় না হওয়ায় বিভিন্ন মডেলের ১১৫টি গাড়ি বিক্রির জন্য নিলামে তুলছে মোংলা কাস্টম হাউস।
আগামী ৭ আগস্ট এই নিলাম অনুষ্ঠিত হবে। এবারই প্রথমবারের মত গাড়ির নিলামে অনলাইন থেকে বিড করা যাবে।
কাস্টম হাউসের নিলাম শাখার রাজস্ব কর্মকর্তা আবু বাসার সিদ্দিকী বলেন, 'আগ্রহীরা ১ আগস্ট ও ২ আগস্ট মোংলা বন্দরে গিয়ে নিলামে তোলা গাড়ি দেখার সুযোগ পাবেন। এরমধ্যে রয়েছে হাইয়েস, টয়োটা, নোয়া, নিসান, এলিয়ন, প্রাডো ও পিকআপসহ বিভিন্ন ব্রান্ডের ১৫৫টি গাড়ি ও ১০ টি অন্যন্য আমদানি করা পণ্য।'
৫ আগস্ট সকাল ৯টা থেকে ৭ আগষ্ট বিকেল ৫টা পর্যন্ত এই নিলামের প্রস্তাবিত মূল্য গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, 'মোংলা বন্দর দিয়ে আমদানি করা এসব গাড়ি ৩০ দিনের মধ্যে ছাড় করানোর নিয়ম থাকলেও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা তা করেননি। ফলে নিয়মানুযায়ী পর্যায়ক্রমে নিলামে ওঠানো হচ্ছে এগুলো।'
নিলামে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সর্বোচ্চ দরদাতার তালিকা প্রকাশের পর এই গাড়িগুলো বিক্রি হবে। পরে সর্বোচ্চ দরদাতাকে নিলামে ক্রয় করা গাড়ি বুঝিয়ে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
আবু বাসার সিদ্দিকী বলেন, 'এবারের নিলামে প্রথমবারের মত অনলাইন থেকে অংশগ্রহণ করা যাবে। বাংলাদেশ কাস্টমসের অনলাইন নিলামের ওয়েবসাইটে গিয়ে মোংলা কাস্টমস হাউজ সেকশনে ক্লিক করলে নিলামের তালিকা পাবেন। সেখানে রেজিস্ট্রেশন করে গ্রাহকরা অনলাইনে নিলামে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবেন।'
তবে এই নিলাম নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস ইমপোর্টার্স অ্যান্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বারভিডা) মোংলা বন্দর স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান আহসানুর রহমান আরজু।
তিনি বলেন, 'একদিকে বৈশ্বিক মন্দা চলছে, সরকারি সংস্থা ও ব্যাংকগুলো গাড়ি কেনা বন্ধ করে দিয়েছে। মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলোও এখন গাড়ি কিনছে না। এর মধ্যে আমাদের আরেকটা বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে কাস্টমস নিলাম প্রক্রিয়া। আমরা এই সময়ে নিলাম না তুলতে কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে বারবার অনুরোধ করেছি। তারা আমাদের কথা রাখেন নি।'
মোংলা বন্দর দিয়ে প্রথম গাড়ি আমদানি শুরু হয় ২০০৯ সালের ৩ জুন। প্রথম চালানে এ বন্দর দিয়ে ২৫৫টি রিকন্ডিশন্ড (ব্যবহৃত) গাড়ি আমদানি করে হক-বে অটোমোবাইল কোম্পানি।
মোংলা বন্দরের উপ সচিব (বোর্ড ও জনসংযোগ বিভাগ) মো. মাকরুজ্জামান বলেন, 'বিদায়ী অর্থবছরে (২০২১-২২) দেশের সমুদ্র বন্দর দিয়ে মোট ৩৪ হাজার ৭৮৩ টি গাড়ি আমদানি করা হয়েছিল। তার মধ্যে মোংলা বন্দর দিয়ে গাড়ি আমদানি করা হয়েছিল ২০ হাজার ৮০৮টি। যা মোট আমদানি গাড়ির শতকরা ৬০ ভাগ।'
মোংলা কাস্টম হাউসের কমিশনার মোহাম্মদ নেয়াজুর রহমান বলেন, 'মোংলা কাস্টমসের মোট রাজস্ব আয়ের শতকরা ৫২ শতাংশ আসে আমদানি করা গাড়ির শুল্ক থেকে। দীর্ঘদিন আমদানীকৃত গাড়ি বন্দরে পড়ে থাকলে অন্যান্য পণ্য রাখায় সমস্যা তৈরি হয়। নিলামপ্রক্রিয়া চালু রাখলে গাড়ি বা অন্যান্য পণ্য রাখতে ব্যবসায়ীদের সুবিধাও হবে, অন্যদিকে সঠিক সময় সরকারের রাজস্ব আদায় করা সম্ভব হবে।'