ভাইরাস পরিস্থিতি উন্নতি না হলে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ: প্রধানমন্ত্রী

করোনাভাইরাস পরিস্থিতি ঠিক না হলে অন্তত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্কুল-কলেজসহ দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার সকাল ১০টায় রাজশাহী বিভাগের আট জেলার প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মী, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী এবং সশস্ত্র বাহিনীর প্রতিনিধিদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে মতবিনিময় করার সময় এ কথা বলেন তিনি।
তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকলেও অনলাইনে শিক্ষাদান কার্যক্রম চালু থাকবে বলে জানান তিনি।
এর আগে, করোনার কারণে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি অনুযায়ী দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আগামী ৫ মে ২০২০ পর্যন্ত বন্ধ থাকবে বলা জানানো হয়েছিল। করোনা ভাইরাসের সৃষ্ট পরিস্থিতির কারণে কয়েক দফা সরকার সাধারণ ছুটি ঘোঘণা করে সরকার। সে ছুটি অনুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোও বন্ধ করে দেওয়া হয়।
সবাইকে রমজান মাসের শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ধর্মীয় নেতারা আছেন তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মসজিদে সীমিত আকারে তারাবির নামাজ পড়া হবে।আপনারা ঘরে বসেই তারাবির নামাজ পড়বেন। আর সৃষ্টিকর্তার কাছে দোয়া করুন তিনি যেন এই করোনা ভাইরাসের হাত থেকে আমাদের রক্ষা করেন'।
মানুষের খাদ্য চাহিদার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'কৃষিটাই এখন সবচাইতে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কেননা বেঁচে থাকতে হলে খাবার প্রয়োজন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন সামনে সারাবিশ্ব জুড়েই অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দেবে। হয়তো দুর্ভিক্ষও দেখা দিতে পারে। তাই আমাদের একখণ্ড জমিও যেন পড়ে না থাকে। এতে নিজেদের খাদ্য চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি অন্য কোন দেশে যদি খাদ্য চাহিদা হয়, আমরা তাদেরও সহযোগিতা করতে পারব।'
আর চলতি বোরো ধান কাটার মৌসুমে কৃষকদের দুশ্চিন্তার কারণ নেই উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শ্রমিকদের গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার জন্য সশস্ত্র বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ধান কাটা, মাড়াই ও অন্যান্য কাজে যান্ত্রিকীকরণের জন্য ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
এই দুর্যোগে সবাইকে এগিয়ে আসার কথা বলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'শেরপুর উপজেলার নাজিমুদ্দিন। একজন নিঃস্ব মানুষ, ভিক্ষুক। তিনিও নিজের জমানো ১০ হাজার টাকা করোনা ত্রাণ তহবিলে দান করে দিয়েছেন। সারা বিশ্বের মাঝে এক মহৎ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। আমাদের অনেক বিত্তশালীর মাঝেও এমন দেখা যায় না।'
রাজশাহী বিভাগের যে ৮ জেলার সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স হয় সেগুলো হল- বগুড়া, চাপাইনবাবগঞ্জ, জয়পুরহাট, নওগাঁ, নাটোর, পাবনা, রাজশাহী এবং সিরাজগঞ্জ।
ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী জনগণকে স্বাস্থ্যবিধিগুলো মেনে চলার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি সঙ্কট উত্তরণে বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজেরও ঘোষণা দেন।
বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ বেসরকারি টিভি চ্যানেল এবং রেডিও স্টেশনগুলো এই ভিডিও কনফারেন্স সরাসরি সম্প্রচার করছে।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে চার দফা পৃথক ভিডিও কনফারেন্সে ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, সিলেট, বরিশাল এবং ময়মনসিংহ বিভাগের ৪৮টি জেলার সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন।