বিএনপির দণ্ডিত এমপি হারুনের হাইকোর্টে জামিন
এমপি হিসেবে শুল্কমুক্ত গাড়ি এনে তা বিক্রি করে আত্মসাতের মামলায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড পাওয়া বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও এমপি হারুন অর রশীদকে ছয় মাসের জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এছাড়াও বিচারিক আদালতে তাকে দেওয়া ৫০ লাখ টাকা জরিমানার আদেশ স্থগিত করেছেন আদালত।
সোমবার (২৮ অক্টোবর) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. শওকত হোসেনের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে জামিন আবেদনের ওপর শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।
আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও সৈয়দ মিজানুর রহমান।
গত ২১ অক্টোবর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম এই মামলার রায় দেন। পাঁচ বছর কারাদণ্ডের পাশাপাশি এমপি হারুনকে ৫০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
মামলার পলাতক আসামি চ্যানেল নাইনের এমডি এনায়েতুর রহমান বাপ্পীকে দুই বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও একলাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। অপর পলাতক আসামি ইশতিয়াক সাদেককে দেওয়া হয় তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৪০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড।
২১ অক্টোবর রায় ঘোষণার সময় এমপি হারুন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তখনই তাকে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। এই রায়ের বিরুদ্ধে খালাস চেয়ে আজ সোমবার (২৮ অক্টোবর) তিনি হাইকোর্ট আপিল করেন এবং এর সঙ্গে জামিন আবেদন দায়ের করেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় এমপি থাকা অবস্থায় ২০০৫ সালে ব্রিটেন থেকে একটি হ্যামার ব্র্যান্ডের গাড়ি শুল্কমুক্ত সুবিধায় কেনেন হারুন অর রশিদ।
গাড়িটি তিনি পরে ইশতিয়াক সাদেকের কাছে ৯৮ লাখ টাকায় বিক্রির পর সাদেক ওই একই গাড়ি চ্যানেল নাইনের এমডি বাপ্পীর কাছে বিক্রি করেন।
নিয়ম অনুযায়ী, শুল্কমুক্ত গাড়ি তিন বছরের মধ্যে বিক্রি করলে শুল্ক দিতে হয়। কিন্তু এমপি হারুন শুল্ক না দিয়ে বিশ্বাস ভঙ্গ করেছেন। এই অভিযোগে ২০০৭ সালের ৭ মার্চ এমপি হারুনসহ তিনজনের নামে এ মামলা দায়ের করেন তেজগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক ইউনুস আলী।
২০০৭ সালের ১৮ জুলাই তাদের বিরুদ্ধে মামলার চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। ওই বছরই তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত এ রায় দেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নে জন্মগ্রহণ করা হারুন চাপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসন থেকে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করে ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্ঠম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য হন। ২০১৬ সালের ১৯শে মার্চ বিএনপির জাতীয় কাউন্সিলে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব হিসেবে নির্বাচিত হন হারুন অর রশীদ।