বদভ্যাস ছেড়ে সফল হতে ওয়ারেন বাফেটের যে ৩ পরামর্শ মেনে চলবেন
ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অভ বিজনেস-এর শিক্ষার্থীদের ওয়ারন বাফেট একবার পরামর্শ দিয়েছিলেন তরুণ বয়স থেকেই জীবনে ভালো অভ্যাস গড়ে তুলতে।
বাফেটের পরামর্শ হলো, বদভ্যাস জীবনকে বদলে দেওয়ার আগেই এসব অভ্যাসকে বদলে ফেলতে হবে। 'আপনাদের বয়সে এসব বদভ্যাস অনেক সহজেই ছাড়াতে পারবেন, যেটা আমার বয়সে এসে করা বেশ কঠিন,' অভ্যাসের দাসে পরিণত না হওয়ার উপদেশ দিয়ে ওই শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন তিনি।
অবশ্য জীবনের যেকোনো পর্যায়ে বদভ্যাস দূর করা যায়। শেষ বয়সে এলে তা কিছুটা কঠিন হয়ে পড়ে, কারণ ততদিনে বদভ্যাসের পরিমাণ এত বেড়ে যায় ও মানুষ এসবে এত অভ্যস্ত হয়ে যায় যে তখন অভ্যাস পরিবর্তন করতে অনেক বেশি কষ্ট করতে হয়।
বদভ্যাস পরিবর্তনে একটি দারুণ উপায় হলো চারপাশের চাপে না পড়ে ভুল সিদ্ধান্ত দূরে ঠেলে দিয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা। অন্যভাবে বলতে গেলে, আপনার চারপাশের পরিবেশ আপনার মনে কোনো চিন্তা, ইচ্ছা, অযাচিত আচরণ ইত্যাদিকে জাগিয়ে তুলতে পারে। আর এ কারণে আপনি এমন সব কাজ করে বসতে পারেন, যা হয়তো আপনার জন্য সুফলের চেয়ে ক্ষতিই বেশি বয়ে আনবে।
যে তিনটি গুণ অর্জন করতে হবে
ভালো অভ্যাস গড়ে তোলার পেছনে মূল চ্যালেঞ্জটি হলো কোনো তথাকথিত 'শ্রেয়তর' সিদ্ধান্ত গ্রহণ থেকে মস্তিষ্ককে বিরত রাখা। ওয়ারেন বাফেট বদভ্যাস পরিবর্তনের জন্য তিনটি ভালো অভ্যাসের পরামর্শ দিয়েছেন।
দিনের শুরুটা হোক ফোন থেকে দূরে
বাফেট জানান, অতীতে তার ফোন তার বিছানাতেই থাকত। 'ঘুম থেকে উঠেই মন চাইতো ফোন হাতে নিতে, নোটিফিকেশন-ইমেইল চেক করতে। এই অভ্যাসের কারণে আমি আমার সারাদিন নিয়ে একটু ভাবা, একটু প্রার্থনা করা ইত্যাদির জন্য সকালে সময় পেতাম না,' বলেন তিনি।
'এরপর আমি আমার মস্তিষ্ককে বাধ্য করি, ঘুম থেকে উঠেই মাথা পরিষ্কার রাখতে, কোনোভাবে অন্যমনস্ক হয়ে না পড়তে। তাই আমি আমার ফোনটাকে অন্য কক্ষে নিয়ে রাখতে শুরু করি, তাও এয়ারপ্লেন মোডে। এর ফলে আমার দিন শুরু হতে লাগলো স্বাস্থ্যকরভাবে; ব্যায়াম, ভালো নাস্তা ইত্যাদির সহযোগে। এতে করে আমি দিনের পরবর্তী সময় সুন্দরভাবে কাটাতে শুরু করতে সফল হলাম,' বলেন এ ধনকুবের।
শিখুন অন্যদের থেকেও
উদ্যোক্তা, নেতা, প্রভাবশালী ব্যক্তিদের কাছে যে সব সমস্যার সমাধান, সব প্রশ্নের উত্তর থাকবে তা কিন্তু নয়। অনেকে আবার এটা মানতে নারাজ, তারা নিজেদের নিয়ে অহংকার করতে গিয়ে অন্যের পরামর্শে কান দেন না।
কিন্তু বাফেট মনে করেন, সঠিক লোকের সাথে চলাফেরা করতে পারার ওপরও সাফল্য নির্ভর করে। আপনি তাদের পদাঙ্কই অনুসরণ করবেন। তাই আপনার চেয়ে সফল লোকদের সাথে চলাফেরাটা করাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। সুতরাং জীবনে চলার পথে এমন লোকদের সাথে মিশতে হবে যাদের কাছ থেকে আপনি শিখতে পারবেন, নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে পরামর্শ পাবেন, নিজেকে আরও ছাড়িয়ে যাওয়ার উপায় জানতে পারবেন।
নিজেকে সময় দিন
যেকোনো নেতা সবচেয়ে বড় যে ভুলটি করেন তা হলো, তারা নিজেদেরকে সময় দিতে চান না। অন্যকে সময় দেওয়া, ব্যবসায় দেখাশোনা করা ইত্যাদি যেমন গুরুত্বপূর্ণ, ঠিক তেমনিভাবে নিজেকে সময় দেওয়াও অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।
গবেষণায় দেখা গেছে, অন্যদেরকে থেকে কিছুটা কম সময় দিলে তাতে নিজের চিন্তা করার ক্ষমতা আরও গভীর হয়। তাই নিজেকে বেশি সময় দিতে হবে। আর তা করতে চাইলে বাফেটের পরামর্শ হলো, কম গুরুত্বপূর্ণ অথচ বেশি সময়ক্ষেপণ করে এমন কাজগুলো অন্যকে দিয়ে করানো।
সূত্র: ইঙ্ক ডট কম