টেস্ট উন্নতিতে সাকিবই ভরসা মাশরাফির

ঘরের মাঠে সব সময়ই শক্তিশালী প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ, হোক সেটা যে ফরম্যাটই। ২০১৬-১৭ মৌসুমে ঘরের মাঠে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার মতো পরাশক্তিকে টেস্টে হারায় বাংলাদেশ। কিন্তু সেই দলটিরই ঘরের মাঠে বেহাল দশা। ২০১৯ সালে চট্টগ্রামে নবাগত আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট হেরে যায় বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে সর্বশেষ সিরিজে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে হারে বাংলাদেশ।
চলতি বছরের শুরুতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে একটি টেস্ট জয় ছাড়া বিদেশের মাটিতে বলার মতো কিছু নেই বাংলাদেশের। ওয়েস্ট ইন্ডিজে টেস্ট সিরিজ আরও দুর্দশায় কেটেছে তাদের। চরম ব্যাটিং ব্যর্থতায় দুই ম্যাচের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে সাকিব আল হাসানের দল। চার-পাঁচ বছর আগের সেই বাংলাদেশের যে টেস্টে অবনতি হয়েছে, সেটা রেকর্ডই বলে দেয়।
ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ হারের পর হা-হুতাশ চলছে সবখানে। বাংলাদেশ ক্রমেই পিছিয়ে যাচ্ছে, টেস্টে উন্নতির কোনো সম্ভাবনা নেই; এমন আলোচনা হচ্ছে। তবে এই অবস্থা থেকেও টেস্ট উন্নতির সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। এ মিশনে বাংলাদেশের সাবেক এই অধিনায়কের ভরসা সাকিব আল হাসান।
তৃতীয় দফায় টেস্ট অধিনায়কত্ব পাওয়া সাকিবকে সময় দিলে এই ফরম্যাটে উন্নতি সম্ভব বলে মনে করেন মাশরাফি। তিনি বলেন, 'ওকে (সাকিব) সময় দিতে হবে। আমার বিশ্বাস সময় দিলে এটা আমরা কাটিয়ে উঠতে পারব আবার। কিছুটা সময় লাগবে। কারণ আপনি অনেক দূর পিছিয়ে গেছেন। আবার সামনে এগোতে গেলে, বিশেষ করে টেস্ট ক্রিকেট সময় দিতে হবে।'
সাকিবকে টেস্ট অধিনায়ক করাটা বাংলাদেশের দলের জন্য ঠিক সিদ্ধান্ত বলে মনে করেন মাশরাফি। সাকিবের অধিনায়ক হওয়াটা আশীর্বাদ জানিয়ে তিনি বলেন, 'সাকিব যে অধিনায়ক হয়েছে, এটা আমি মনে করি আমাদের জন্য আশীর্বাদ। এ কারণে মনে করি টেস্ট ক্রিকেটে সবচেয়ে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার ও পারফর্মারের হাতে অধিনায়কত্ব থাকা উচিত এবং সেটা আছে।'
'রাতারাতি কোনো কিছু চিন্তা করলে হবে না। সাকিবের হাতে গিয়েছে মানে জিতে যাবো, এটা কোনো ম্যাজিক না। ১০ জনকেও পারফর্ম করতে হবে। সুতরাং সাকিবকে একটু সময় দিতে হবে। সে জিনিসটাকে গুছিয়ে নিয়ে যখন সামনে অগ্রসর হবে, তখন দেখবেন জিনিসটা আস্তে আস্তে হয়েছে। সাকিব যেটা কালকে বলেছে হোমে জিততে হবে, এটা কিন্তু অবশ্যই সত্যি কথা।' যোগ করেন মাশরাফি।
সাকিবের প্রতি কোনো বার্তা থাকবে কিনা জানতে চাইলে মাশরাফি বলেন, 'সবচেয়ে অভিজ্ঞ মাথা, যাকে আমরা পেয়েছি। সুতরাং সাকিবকে বার্তা দেওয়ার কিছু নাই। সাকিব জানে কীভাবে দল পরিবর্তন করতে হবে। এর আগেও দুইবার সে অধিনায়কত্ব করেছে। আমি মনে করি সাকিব সব জানে কীভাবে সামলাতে হয়। আর দ্বিতীয় কথা হচ্ছে পরিকল্পনার বিকল্প কিছু নেই। পরিকল্পনা না করলে অন্তত এই ফরম্যাটে সামনে এগিয়ে যাওয়ার উপায় নেই।'
কেবল টেস্টই নয়, বাকি দুই ফরম্যাটেও যোগ্য হাতে অধিনায়কত্ব আছে বলে বিশ্বাস মাশরাফির। ওয়ানডেত তামিম ইকবাল ও টি-টোয়েন্টিতে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ওপর ভরসা আছে তার, 'আমি মনে করি সেরা ক্রিকেটারদের হাতেই অধিনায়কত্ব আছে, তিন ফরম্যাটেই। এখন পরিকল্পনা আর নতুন খেলোয়াড়দের একটু সময় দেওয়া দরকার দলে নেওয়ার আগে, ভারসাম্য জরুরি। যারা পারফর্ম করছে তাদের সরাসরি জাতীয় দলে না দেখে 'এ' দলসহ অন্যান্য দলে খেলুক, পারফর্ম করুক।'