মুশফিক অপরাজিত ১৭৫, বাংলাদেশ ৩৬৫
ভয়াবহ বিপর্যয়ের সময় দলের হাল ধরেন। যোগ্য সঙ্গী হিসেবে পান আরেকজনকে। তাতে বদলে যায় বাংলাদেশের ভাগ্য। অন্ধকারে শুরু দিনটার শেষটা ঝলমলে আলোয় রাঙান মুশফিকুর রহিম ও লিটন কুমার দাস। দ্বিতীয় দিনও তাদের দিকে তাকিয়ে ছিল বাংলাদেশ। যদিও এদিন দীর্ঘ হয়নি পথচলা। কয়েক রান তুলতেই লিটন ফিরে যান, এরপরও মুশফিকের লড়াই চলেছে। বাংলাদেশের ইনিংস শেষ হলেও অপরাজিত থেকে গেছেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৩৬৫ রান তুলেছে বাংলাদেশ। ১৭৫ রানের মহা কার্যকর এক ইনিংস খেলেও অপরাজিত থাকেন মুশফিক। বাংলাদেশের একমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্টে তিনটি ডাবল সেঞ্চুরির মালিক মুশফিক চতুর্থ ডাবলেরে দেখাও পেতে পারতেন। কিন্তু অপর প্রান্তের ব্যাটসম্যানরা পারেননি তাকে সঙ্গ দিতে।
৩৬৫ রানই বাংলাদেশের কাছে বিশাল সংগ্রহ হওয়ার কথা। টস জিতে ব্যাটিং করতে নামার কিছুক্ষণ পর তো ১০০ রানের আগেই অলআউট হওয়ার শঙ্কায় পড়ে গিয়েছিল ঘরের মাঠের দলটি। মাত্র ২৪ রানে ৫ উইকেট হারোনো দলকে লড়াকু সংগ্রহ এনে দিয়েছেন মুশফিক-লিটন। ধ্বংস্তূপ থেকে দলকে টেনে তুলে ২৭২ রানের জুটি গড়েন তারা। যা ষষ্ঠ উইকেটে বাংলাদেশের সেরা ও যেকোনো উইকেটে তৃতীয় সেরা।
প্রথম দিন দলকে বিপদমুক্ত করে বাকিটা সময়ে ব্যাট হাতে রাজত্ব করেন মুশফিক ও লিটন। ৫ উইকেটে ২৭৭ রান তুলে দিন শেষ করে বাংলাদেশ। যেখানে মুশফিক-লিটন জুটির অবদানই ছিল ২৫৩। মুশফিক ১১৫ ও লিটন ১৩৫ রানে অপরাজিত থাকেন। প্রথম দিনের শেষ থেকেই দ্বিতীয় দিন শুরু করার লক্ষ্য ছিল তাদের। মুশফিক-লিটনের কাছে প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর চাওয়া ছিল এক ঘণ্টা।
যদিও সেটা হয়নি। এদিন ৬ রান করতেই সাজঘরে ফিরতে হয় লিটনকে। কাসুন রাজিথার বলে আউট হওয়ার আগে ২৪৬ বলে ১৬টি চার ও একটি ছক্কায় ১৪১ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলেন তিনি। মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত উইকেটে গেছেন আর ফিরেছেন। তিন বল খেলে রানের খাতা খুলতে পারেননি তিনি।
এরপর তাইজুল ইসলামকে নিয়ে কিছুটা পথ পাড়ি দেন মুশফিক। এই জুটি থেকে ৪৯ রান পায় বাংলাদেশ। ১৫ রান করে বিদায় নেন তাইজুল। খালেদ আহমেদ ও এবাদত হোসেনকে নিয়ে মুশফিক বেশি পথ পাড়ি দিতে পারেননি। এ দুজন উইকেটে থাকা অবস্থায় তিনিই সব রান করেছেন। খালেদ ও এবাদত রানের খাতা খুলতে পারেননি।
মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান হলেও বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে টপ অর্ডারের ভূমিকা পালন করতে হয়েছে মুশফিককে। সাত ওভারের মধ্যেই তাকে উইকেটে যেতে হয়। বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে ৫৫৬ মিনিট ব্যাটিং করেছে, মুশফিক উইকেটে থেকেছেন ৫২৬ মিনিট। সঙ্গী অভাবে শেষ পর্যন্ত থামতে হয় তাকে। ৩৫৫ বলে ২১ চারে ১৭৫ রানে অপরাজিত থাকেন মুশফিক। এবাদত রান আউট হয়েছেন, বাকি ৯ উইকেট ভাগাভাগি করে নেন লঙ্কান দুই পেসার। কাসুন রাজিথা ৫টি ও আসিথা ফার্নান্দো ৪টি উইকেট পান।