বাংলাদেশকে ছোট লক্ষ্য দিলো আয়ারল্যান্ড
মিরপুর টেস্টের তৃতীয় দিন নিজেদের করে নেওয়া আয়ারল্যান্ড শেষ দুই উইকেট দিয়ে আর বেশিক্ষণ লড়াই করতে পারলো না। বাংলাদেশের পেসার এবাদত হোসেন ২ উইকেট নিয়ে থামিয়ে দিলো আইরিশদের দ্বিতীয় ইনিংস। আগের দিন অবিশ্বাস্য লড়াই করা ম্যাকব্রাইন এদিন আর ১ রান যোগ করতে পারলেন। বাংলাদেশের লক্ষ্য থাকলো নাগালেই।
দ্বিতীয় ইনিংসে দারুণ লড়াই করা আইরিশরা শেষ পর্যন্ত সবকটি উইকেট হারিয়ে ২৯২ রান তুলেছে। চতুর্থ টেস্ট খেলতে নামা দলটির এটা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহ। বাংলাদেশের লক্ষ্য দাঁড়ালো ১৩৮ রান। প্রথমবারের মতো কোনো দলের বিপক্ষে নিজেদের প্রথম টেস্ট জেতার সুযোগ বাংলাদেশের সামনে। এর আগে সব দলের বিপক্ষেই নিজেদের প্রথম টেস্ট হেরেছে তারা।
৮ উইকেটে ২৮৬ রান তুলে তৃতীয় দিন শেষ করে আয়ারল্যান্ড। ম্যাকব্রাইন ৭১ ও গ্রহাম হিউম ৯ রানে অপরাজিত ছিলেন। আজ তাদেরকে উইকেটে বেশি সময় টিকতে দেননি এবাদত। পাঁচ ওভারের ব্যবধানে এ দুজনকে থামান বাংলাদেশ পেসার। ১৫৬ বলে ৮টি চার ও একটি ছক্কায় ৭২ রান করেন ম্যাকব্রাইন। ৫৫ বলে ২টি চারে ১৪ রান করেন হিউম। বাংলাদেশের তাইজুল ইসলাম ৪টি ও এবাদত ৩টি উইকেট নেন। এ ছাড়া সাকিব আল হাসান ২টি ও শরিফুল একটি উইকেট পান।
আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান হ্যারি টেক্টর ও পিটার মুর তৃতীয় দিন সাবলীল শুরু করেন। এদিন ২৪ রান যোগ করাসহ পঞ্চম উইকেটে ১৫৪ বলে ৩৮ রানের জুটি গড়েন এ দুজন। দলকে বিপদ থেকে বাঁচাতে প্রাণপণে লড়াই করে যাওয়া মুরকে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন শরিফুল ইসলাম। ফেরার আগে ৭৮ বলে ৩টি চারে ১৬ রান করেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান।
এরপর টেক্টরের সঙ্গে যোগ দেন আইরিশ ইনিংসের রূপকার টাকার। দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে এ দুজন ১৪৫ বলে ৭২ রানের জুটি গড়েন। এই জুটি ভাঙেন তাইজুল ইসলাম, ফেরান টেক্টরকে। দীর্ঘক্ষণ ব্যাটিং করে দলে স্বস্তি ফেরানো টেক্টর ১৫৯ বলে ৭টি চার ও একটি ছক্কায় ৫৬ রান করেন। এরপর আইরিশ ইনিংসে সবচেয়ে ভালো সময় আসে, ম্যাকব্রাইনকে নিয়ে নতুন মিশনে নামেন সেঞ্চুরিয়ান টাকার।
বাংলাদেশের বোলারদের হতাশায় ডুবিয়ে ব্যাটিং করে যেতে থাকেন টাকার-ম্যাকব্রাইন। সপ্তম উইকেটে ১৭১ বলে ১১১ রান যোগ করেন তারা। যা টেস্টে সপ্তম উইকেটে আয়ারল্যান্ডের দ্বিতীয় সেরা জুটি, সর্বোচ্চ রানের জুটি ১১৪ রানের। পাকিস্তানের বিপক্ষে এই জুটি গড়েন কেভিন ও'ব্রায়েন ও থম্পসন।
দারুণ জুটিতে দলকে এগিয়ে নেওয়ার পথে সেঞ্চুরি তুলে নেন টাকার, তার নাম ওঠে রেকর্ড বইয়ে। টেস্টে আয়ারল্যান্ডের দ্বিতীয় সেঞ্চুরিয়ান তিনি, অভিষেকেও আইরিশদের দ্বিতীয় সেঞ্চুরিয়ান। অভিষেকেই সেঞ্চুরি করা কেভিন ও'ব্রায়েন এতোদিন আইরিশদের একমাত্র সেঞ্চুরিয়ান ছিলেন। সাত নম্বরে নেমে বিশ্বের নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে সেঞ্চুরির কীর্তি গড়লেন টাকার।
আয়ারল্যান্ডকে খাদের কিনার থেকে উদ্ধার করা এই ব্যাটসম্যান শেষ পর্যন্ত এবাদত হোসেনের বলে আউট হন। ফেরার আগে ১৬২ বলে ১৪টি চার ও একটি ছক্কায় ১০৮ রানের দারুণ ইনিংস খেলেন তিনি। এরপর মার্ক এডেয়ারের সঙ্গে ৩১ রানের জুটি গড়েন ম্যাকব্রাইন।
এডেয়ার ১৩ রান করে ফিরলে হিউমকে নিয়ে দিন পার করেন ৭১ রানে অপরাজিত থাকা ম্যাকব্রাইন। এটাই তার প্রথম টেস্ট হাফ সেঞ্চুরি। প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট নেওয়া তাইজুল ৮৬ রানে নেন ৪ উইকেট। ২টি উইকেট পান সাকিব আল হাসান। একটি করে উইকেট নেন শরিফুল ও এবাদত।