হতাশার ব্যাটিংয়ে মিললো অল্প পুঁজি, বিবর্ণ সেমির স্বপ্ন
দক্ষিণ আফ্রিকার বিদায়ে সমীকরণটা সহজ হয়, জিতলেই মিলবে সেমি-ফাইনালের টিকেট। এমন ম্যাচে এসে পাকিস্তানের বিপক্ষে চরম হতাশার ব্যাটিং করলো বাংলাদেশ। আত্মাহুতির মিছিলে একমাত্র ব্যতিক্রম নাজমুল হোসেন শান্ত। ছন্নছাড়া ব্যাটিংয়ের মাঝে অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের বিতর্কিত আউট আরও হতাশা বাড়ালো, বড় সংগ্রহ মিললো না বাংলাদেশের।
সেমি-ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে রোববার অ্যাডিলেড ওভালে ৮ উইকেটে ১২৭ রান তুলেছে বাংলাদেশ। টস জিতে আগে ব্যাটিং করতে নেমে সাবলীল শুরু করেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত ও লিটন কুমার দাস। দুজনের শারীরিক ভাষা ইতিবাচকই দেখাচ্ছিল। এরপরও অবশ্য ভালো শুরু পায়নি বাংলাদেশ। দলীয় ২১ রানে শাহনি শাহ আফ্রিদিন বলে শট খেলতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ধরা পড়েন ৮ বলে ১০ রান করা লিটন।
লিটনের বিদায়ের চাপ অবশ্য বুঝতে হয়নি বাংলাদেশকে। চাপ কাটিয়ে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন শান্ত ও সৌম্য সরকার। শুরুর তিন ওভারের মতো রানের গতি না থাকলেও স্বস্তি মেলে এই দুজনের ব্যাটে। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ১ উইকেটে ৪০ রান তোলে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় উইকেটে ৪৭ বলে ৫২ রানের জুটি গড়েন শান্ত-সৌম্য। যদিও শুরুর মতো করে ইনিংসের শেষটা করতে পারেননি সৌম্য। বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান ১৭ বলে ২০ রান করে আউট হন।
পাকিস্তানের লেগ স্পিনার শাদাব খান পরের বলেই ফিরিয়ে দেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে। ১১তম ওভারে টানা দুই বলে দুই উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে যায় বাংলাদেশ। যদিও সাকিবের আউট নিয়ে বিতর্ক আছে। টিভি রিপ্লেতে দেখা গেছে বল সাকিবের ব্যাটেই লেগেছে। কিন্তু রিভিউ নেওয়ার পরও তাকে আউট দেওয়া হয়। এ নিয়ে মাঠে আম্পায়ারদের সাথে কথা বলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি, প্রথম বলেই আউট হয়ে সাজঘরে ফিরতে হয় তাকে।
এরপর আফিফ হোসেন ধ্রুবকে নিয়ে লড়াই শুরু করেন ইনিংস উদ্বোধন করতে নামা শান্ত। আফিফের সঙ্গে ১৮ রানের জুটি গড়ে বিদায় নেন বাঁহাতি এই ওপেনার। ইফতিখার আহমেদের বলে এগিয়ে খেলতে গিয়ে বোল্ড হন শান্ত। ফেরার আগে ৪৮ বলে ৭টি চারে ৫৪ রান করেন তিনি। চলতি বিশ্বকাপে এটা তার দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরি। শান্তর বিদায়ে রান তোলার গতি আরও কমে যায়। আফিফের সঙ্গে যোগ দেওয়া মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত মুরুতে সেভাবে ব্যাটে-বলে করতে পারছিলেন না। রান তুলতে সংগ্রাম করতে হচ্ছিল তাকে।
১৫.১ ওভারে ১০০ রান পূর্ণ হয় বাংলাদেশের। শুরু থেকেই ধুঁকতে থাকা মোসাদ্দেক একটু পরই সাজঘরে ফেরেন। হতাশার ব্যাটিংয়ে ১১ বলে ৫ রান করেন তিনি। এরপর ব্যাটসম্যান না থাকায় আফিফকে দেখেশুনে ব্যাট চালাতে হয়। তাসকিন আহমেদ তাকে সঙ্গ দিতে পারেননি, ৫ বলে ১ রান করে ফিরেন যান বাংলাদেশের এই পেসার।
শেষ দিকে আফিফের ব্যাটেই যা রান আসে। বোলারদের নিয়ে লড়াই চালিয়ে যাওয়া বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান ২০ বলে অপরাজিত ২৪ রান করেন। নাসুম আহমেদ ৬ বলে ৭ রান করেন। পাকিস্তানের বাঁহাতি পেসার শাহিন আফ্রিদি ৪ ওভারে ২২ রানে ৪টি উইকেট নেন। শাদাব খান পান ২টি উইকেট একটি করে উইকেট পান হারিস রউফ ও ইফতিখার।