‘ফুটবল বাঁচাতে সুপার লিগের জন্ম’
কোথায় কোন লিগ চলছে, কারা এগিয়ে গেল; আপাতত সেদিকে তেমন কারও নজর নেই। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফরম্যাটে কী কী পরিবর্তন এলো, তা নিয়েও খুব একটা মাথা ব্যথা নেই ফুটবল ভক্তদের। ফুটবল দুনিয়ায় এখন আলোচনার একটিই বিষয়, ইউরোপিয়ান সুপার লিগ। বিদ্রোহী লিগে ১২টি নামি ক্লাবের অংশ নেওয়া নিয়ে ফুটবল বিশ্বে এখন চরম অস্থিরতা।
এই লিগকে কোনোভাবেই সমর্থন দেয় না ইউরোপীয় ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা উয়েফা। এই লিগে অংশ নিলে রিয়াল মাদ্রিদ, বার্সেলোনা, জুভেন্টাসসহ বাকি ক্লাবগুলোকে সব ধরনের ফুটবল থেকে নিষিদ্ধ করা হবে বলে হুশিয়ারি দিয়ে যাচ্ছে উয়েফা। এমনকি ফুটবলারদেরও জাতীয় দলে নিষিদ্ধ করা হতে পারে।
যদিও উয়েফার সতর্ক বার্তায় বিশেষ কাজ হয়নি। উয়েফার হুশিয়ারি শোনার পরই সুপার লিগে খেলার ঘোষণা দিয়েছে ক্লাবগুলো। সুপার লিগ কর্তৃপক্ষও উয়েফার শাসন-বারণ খুব একটা গোনায় নিচ্ছে না। সংস্থাটির প্রথম চেয়ারম্যান ও রিয়াল মাদ্রিদের সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ জানিয়েছেন, ফুটবল বাঁচাতেই সুপার লিগ আয়োজন করা হচ্ছে।
পেরেজ বলেছেন, 'যখনই সুযোগ তৈরি হয়, সেখানে সব সময়ই বিরোধীতা করার মানুষ থাকে। কঠিন এই অবস্থায় ফুটবলকে বাঁচানোর জন্য আমরা এটা করছি।' একটি স্প্যানিশ টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমনই জানিয়েছেন রিয়ালের সাবেক এই সভাপতি।
ফুটবলের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে পেরেজ আরও বলেন, 'ফুটবলের দর্শক ও টিভিসত্ত্ব প্রতিনিয়তই কমছে। এ নিয়ে অবশ্যই কিছু করার ছিল। আমরা সবাই ধ্বংস হয়ে গেছি। টেলিভিশেনের পরিবর্তন দরকার, যেটার সঙ্গে আমরা মানিয়ে নিতে পারি। তরুণদের ফুটবলের প্রতি আর আগ্রহ নেই। কেন? কারণ নিম্নমানের ফুটবল। তাদের আরও প্ল্যাটফর্ম আছে, যা তাদের মনোযোগ সরিয়ে নিচ্ছে।'
ক্লাবগুলোর সঙ্গে প্রাথমিকভাবে ২৩ বছরের চুক্তি হয়েছে সুপার লিগের। লিগটিতে অংশ নিতে স্পেন থেকে নাম লিখিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ, বার্সেলোনা ও অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। ইতালি থেকে যোগ দিচ্ছে জুভেন্টাস, এসি মিলান ও ইন্টার মিলান। ইংল্যান্ড থেকে সর্বোচ্চ ৬টি ক্লাব যোগ দিচ্ছে। ক্লাবগুলো হচ্ছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, ম্যানচেস্টার সিটি, লিভারপুল, আর্সেনাল, চেলসি ও টটেনহ্যাম হটস্পার।
এই ১২ ক্লাবের সঙ্গে আরও তিনটি ক্লাব দ্রুতই যোগ দেবে বলে জানিয়েছে সুপার লিগ কর্তৃপক্ষ। ১৫ ক্লাবের সঙ্গে প্রতি বছর কোয়ালিফাই করে আসা ৫ ক্লাবসহ মোট ২০ দল নিয়ে এই টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হবে। আরও দুই শীর্ষ লিগের আয়োজক দেশ জার্মানি ও ফ্রান্সের কোনো ক্লাব এখনও সুপার লিগে নাম লেখায়নি।