মাছ ধরার যুদ্ধে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্য মুখোমুখি
ব্রেক্সিট পরবর্তী বাণিজ্যচুক্তির ব্যাপারে যুক্তরাজ্যের জলসীমায় মাছ ধরার অধিকার নিয়ে যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে চূড়ান্ত দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে। চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের ব্যাপারেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।
মাছ ধরার অধিকার সংক্রান্ত বিরোধ প্রাধান্য পাওয়ায় বাণিজ্যিক চুক্তির অন্যান্য ক্ষেত্রে উভয়পক্ষ একমত হয়েছে এমন আশার মধ্যে গত বুধবার ডলারের বিপরীতে পাউন্ডের দর বৃদ্ধি পেয়েছে।
বরিস জনসনের কার্যালয়ের সূত্রে জানানো হয়েছে, এসংক্রান্ত কোনো চুক্তি চূড়ান্ত করার জন্য আগামী সপ্তাহের মধ্যেই পার্লামেন্টের অধিবেশন ডাকা হতে পারে।
তবে চুক্তির আলচনার সাথে জড়িতরা সতর্ক করেছেন, যুক্তরাজ্যের জলসীমায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যান্য দেশগুলোর অবাধে মাছ ধরার অধিকার সম্পর্কিত বিবাদ মীমাংসা হয়নি এখনো এবং ঐক্যমতে পৌঁছাতে না পারলে সম্পূর্ণ চুক্তি বাতিল হওয়ার আশঙ্কাও আছে।
যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এসংক্রান্ত চুক্তি ব্যর্থ হলে যুক্তরাজ্যের রয়্যাল নেভি সমুদ্রসীমা পাহারা দিতেও প্রস্তুত আছে।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট আরসুলা ভনডার লিয়ন জানিয়েছেন, "মাছ ধরার ব্যাপারে আমাদের আলোচনা এখনো সমাধানের পর্যায়ে পৌঁছায়নি। সত্য কথা বলতে, মাঝেমধ্যে মনে হয়, আমরা কখনো এ সমস্যা সমাধান করতে পারবো না।"
মাছ ধরার অধিকার সংক্রান্ত আলোচনার চূড়ান্ত চুক্তির স্বাক্ষরে আরও সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন আলোচনায় জড়িত কর্মকর্তারা। চুক্তি স্বাক্ষরের পর কবে থেকে নতুন নিয়ম জারি হবে এনিয়েই আলোচনা ব্যর্থ হচ্ছে বারবার। যুক্তরাজ্যের প্রস্তাবিত সময়সীমা ৩ বছর হলেও আরও বেশি সময় চেয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মারকেল জানিয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন চুক্তির জন্য প্রস্তুত নয়। "কোনো সমাধান খুঁজে বের করার লক্ষ্যে সকল চুক্তির ব্যাপারেই গত সপ্তাহ জুড়ে আলোচনা হয়েছে। কিছুটা উন্নতি হলেও কোনো সমাধানই পাওয়া যায়নি।"
আলোচনার সাথে জড়িত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বর্তমানে যুক্তরাজ্যের জলসীমায় জোটভুক্ত দেশগুলোর ৬৫০ মিলিয়ন ইউরোর (৭৯৫ মিলিয়ন ডলার) বাজারের ২৫ শতাংশ কমিয়ে আনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে যুক্তরাজ্য। এ সংখ্যা কমিয়ে ৬০ শতাংশে আনার প্রস্তাব দিয়েছে যুক্তরাজ্য।
ব্রেক্সিট পরবর্তী কোনো বাণিজ্য চুক্তি না হলে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি ১৫ বছর সময়ে ২ দশমিক ৬ শতাংশ ক্ষতির সম্মুখীন হবে বলে জানানো হয় ব্রিটিশ সরকার পরিচালিত এক গবেষণায়।
- সূত্র: ব্লুমবার্গ