২ মাস বাকি থাকলেও ব্যয় হয়নি এডিপির ৪৫ শতাংশ
সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বরাদ্দের পুরো অর্থ ব্যবহার করতে হলে আগামী দুই মাসে (মে-জুন) মাসে ব্যয় করতে হবে ৯৭ হাজার ৩৪৬ টাকা, যা মোট সংশোধিত এডিপি বরাদ্দের ৪৫ শতাংশ।
বাস্তবায়ন পরীবিক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) তথ্য অনুযায়ী, অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল সময়ে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে ৫৫.১৮ শতাংশ। টাকার অংকে এ সময়ে ব্যয় হয়েছে ১ লাখ ১৯ হাজার ৮৩০ কোটি টাকা।
আইএমইডির তথ্য অনুযায়ী, শুধু এপ্রিল মাসে ব্যয় হয়েছে ২০ হাজার ৮৯৫ কোটি টাকা, যা বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বরাদ্দের ৯.৬২ শতাংশ। এপ্রিল মাসের অর্থ ব্যয় যে কোনো একক মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।
কিন্ত মে ও জুন মাসে দ্বিগুণেরও বেশি অর্থ ব্যয় করা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (বিআইডিএস) সাবেক মহাপরিচালক ড. ডক্টর মোস্তফা কে মুজেরি বলেন, "আমাদের দেশে দেখা যায়, অর্থবছরের প্রথম দিকে এডিপি অর্থ ব্যয় হয় না। কিন্ত অর্থবছরের শেষ দুই বা তিন মাসে বরাদ্দের অর্থের বেশি ব্যয় করা হয়। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত এডিপির শতভাগ অর্থ ব্যয় করতে হলে শেষ দুই মাসে মোট বরাদ্দের ৪৫ শতাংশ অর্থ ব্যয় করতে হবে।"
"এত কম সময়ে এত বেশি অর্থ ব্যয় করতে গেলে মানসম্মত প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না। বাড়বে সরকারি অর্থের অপচয়," বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, গুণগতভাবে এডিপি বাস্তবায়ন করতে হলে সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে অর্থবছরের শুরু থেকে অর্থ ব্যয় করতে হবে।
"এখন দরকার নীতিগত ও প্রতিষ্ঠানিক পলিসি নেওয়া। তা না হলে উন্নয়ন প্রকল্প থেকে সুফল আসবে না," যোগ করেন মোস্তফা কে মুজেরি।
সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাওয়া মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর এডিপি বাস্তবায়ন হার
সংশোধিত এডিপির ৮৩ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া হয় ১৫টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে। সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেওয়া মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর মধ্যে প্রতি অর্থবছরের মতো এবারও পিছিয়ে আছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
স্বাস্থ্য বিভাগ চলতি অর্থবছরের ১০ মাসে বরাদ্দের ৩৯ শতাংশ অর্থ ব্যয় করতে সক্ষম হয়েছে। অর্থবছরের বাকি সময়ে এ বিভাগকে বরাদ্দের ৬১ শতাংশ অর্থ ব্যয় করতে হবে।
যদিও প্রতিবছর বরাদ্দের উল্লেখ যোগ্য অংশই খরচ করা হয় না। গত অর্থবছরে বরাদ্দের ৪২ শতাংশ ব্যয় করতে পারেনি স্বাস্থ্য বিভাগ।
অর্থবছরের ১০ মাসে বরাদ্দ পাওয়া অর্থের অর্ধেকের কম ব্যয় করা মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর মধ্যে রয়েছে- নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় (৪০.৫২%), প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় (৪৫%), বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় (৪৩.৭৬%) এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় (৪৭.২৮%)।
বড় মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর মধ্যে ৬০ শতাংশ করে এডিপি বরাদ্দের অর্থ ব্যয় করতে সক্ষম হয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ, রেল পথ মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। সর্বোচ্চ ৮৩ শতাংশ অর্থব্যয় করতে পেরেছে শিল্প মন্ত্রণালয়।
আইএমইডির তথ্য অনুযায়ী, কোভিড পূর্ববর্তী সময়ে অর্থাৎ ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছিল ৫৪.৯৪ শতাংশ। এরপর ২০২০-২১ এবং ২০১৯-২০ অর্থবছরে এডিপি বাস্তবায়ন ছিল যথাক্রমে ৪৯.০৯ এবং ৪৯.১৩ শতাংশ।