বিশ্বব্যাপী এয়ারলাইন্সগুলোর বাণিজ্যিক বিপর্যয় এড়ানোর আপ্রাণ চেষ্টা
পর্যটকদের আকর্ষণীয় গন্তব্য ইতালি এখন অবরুদ্ধ। পুরো বিশ্বের করোনা পরিস্থিতিও অনুকূলে নয়, প্রতিরোধের চেষ্টায় অনেক দেশ চালু করেছে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা। এই অবস্থায় করোনার প্রভাবে ইতোমধ্যেই সিংহভাগ যাত্রী হারানো এয়ারলাইন্সগুলোর ওপর নতুন করে অস্তিত্ব রক্ষার চাপ বাড়লো।
হাজার হাজার ফ্লাইট বাতিল হয়েছে করোনায়। পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে এয়ারলাইন্সগুলোর পক্ষ থেকে দেওয়া নতুন উড়োজাহাজের ক্রয়াদেশ। বিশ্বের শীর্ষ বানিজ্যিক যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ নির্মাতা বোয়িং এবং এয়ারবাস উভয়ের ব্যবসা হুমকির মুখে।
তবে এদুটি কোম্পানির বানিজ্যিক মূলধন তাদের গ্রাহক এয়ারলাইন্সগুলো থেকে অনেক বেশি। ঝুঁকি মোকাবেলার সক্ষমতাও বেশ মজবুত। সেই তুলনায় এয়ারলাইন্সগুলো পুরোপুরি দৈনিক যাত্রী পরিবহন সংখ্যার ওপর নির্ভরশীল। ছোটখাট অনেক এয়ারলাইন্স এখন প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ার পথে।
কোরিয়া এয়ারলাইন্স এক বৃহৎ সক্ষমতার কোম্পানি। করোনা কোম্পানিটিকে ইতোমধ্যেই বিপুল ফেলেছে লোকসানে। নিজেদের আন্তর্জাতিক যাত্রী পরিবাহী সক্ষমতা ৮০ শতাংশ কমিয়েছে তারা। পুরো বহরে ১৪৫টি উড়োজাহাজ থাকলেও তার মধ্যে ১০০টির উড্ডয়ন এখন বন্ধ।
দক্ষিণ কোরিয়ার শীর্ষ এই এয়ারলাইন্সের প্রেসিডেন্টের সাম্প্রতিক এক বিবৃতিতে সংশ্লিষ্ট শিল্পের বৈশ্বিক সংকটের চিত্র উঠে আসে।
প্রেসিডেন্ট উ কে-হং বলেন, 'পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যে কোনও সময় মোড় নিতে পারে। আমরা কেউই জানিনা এমন পরিস্থিতি কতোদিন ধরে থাকবে। কিন্তু যদি এই অবস্থা দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকে তাহলে কোম্পানির অস্তিত্ব যে টিকবে এমন নিশ্চয়তা দেওয়া সম্ভব নয়।'
যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ যাত্রী পরিবাহী ডেলটা এবং আমেরিকান এয়ারলাইন্স তাদের চলতি বছরের ইতিবাচক বাণিজ্যিক পূর্বাভাস ইতোমধ্যেই প্রত্যাহার করে নিয়েছে। লোকসান এড়াতে চালু করেছে খরচ সাশ্রয়ী নানা পদক্ষেপ। লোকসানের চাপ সামলাতে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে বাড়তি ২শ কোটি ডলার পুঁজি সংগ্রহের ঘোষণা দিয়েছে ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স।
ইউনাইটেডের প্রেসিডেন্ট স্কট কিরবি বিনিয়োগকারীদের এক সম্মেলনে ভাইরাস সংক্রমণ এই মুহূর্তে উন্নতির দিকে গেলেও যাত্রী সংখ্যা স্বাভাবিকে ফিরতে আরও ১৮ মাস সময় লাগবে বলে জানান।
উদ্ভূত পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে ইউনাইটেড তাদের মূলধনী বিনিয়োগের সকল উদ্যোগ বন্ধ করেছে। বাতিল করা হয়েছে বোয়িং এবং এয়ারবাস থেকে নতুন উড়োজাহাজ ক্রয়ের উদ্যোগ।
বড় আকারের ক্রয়াদেশ বাতিল করাদের মধ্যে আরও আছে অস্ট্রেলিয়ার কোয়ান্তাস।
সবকিছু মিলিয়ে এই শিল্পের সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী নেতারা চলতি বছর ১১ হাজার ৩শ কোটি ডলার লোকসান হবে বলে আশঙ্কা করছেন।