বাজেটে বিপুল ছাড় চান ব্যবসায়ীরা
- করপোরেট করহার ৫ শতাংশ কমানোর দাবি সব সংগঠনের
- মুনাফা না হলেও টার্নওভারের ওপর ২ শতাংশ মিনিমাম ট্যাক্স প্রত্যাহারের প্রস্তাব ফিকির
- প্রমোশনাল এক্সপেন্সেসে করের শর্ত তুলে দেয়ার প্রস্তাব ডিসিসিআই
- টার্নওভার ট্যাক্স লিমিট ৩০ লাখ থেকে ৫০ লাখ করার প্রস্তাব
- সবক্ষেত্রে ভ্যাট রেয়াত প্রবর্তনের প্রস্তাব ডিসিসিআইয়ের
- কাঁচামাল আমদানিতে শুল্ক শূন্য করার প্রস্তাব বিসিআইয়ের
- বিশেষ বরাদ্দ ও কর সুবিধা চায় কৃষি, সিরামিকস, পোল্ট্রি, ওষুধসহ প্রায় সব খাত
- এসএমই খাতে করপোরেট কর ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব
- রপ্তানিতে উৎস কর দশমিক ২৫ শতাংশ রাখার প্রস্তাব রপ্তানিকারকদের
- বাজেট বরাদ্দ চায় বিজিএমইএ, নারী উদ্যোক্তারা
- স্টার্টআপ ফান্ড গঠনের দাবি ব্যবসায়ী সংগঠনের
- নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ তহবিল গঠনের প্রস্তাব বিসিসিআইয়ের
- বাস ও লঞ্চে ভ্যাট প্রত্যাহারের প্রস্তাব মালিকদের
- ২৫০০ কোটি টাকা চায় দোকান মালিকরা
করপোরেট করহার কমানো, মিনিমাম করের বিধান প্রত্যাহার, ভ্যাটে সবক্ষেত্রে রিফান্ড প্রদান, কোম্পানির প্রমোশনাল এক্সপেন্সের সীমা তুলে দেয়া, শিল্পের কাঁচামাল আমদানিতে শুল্ক প্রত্যাহার, নতুন শিল্প স্থাপনে কর অবকাশ সুবিধাসহ বিপুল ছাড়ের এসব প্রস্তাব এরই মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) দিয়েছেন সব ব্যবসায়ীরা।
করোনার অতিমারির মধ্যে ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নের লক্ষ্যে ব্যবসায়ী সংগঠন ও অর্থনীতিবিদদের কাছে প্রস্তাবনা চায় এনবিআর। এমসিসিআই, ডিসিসিআই, সিপিডিসহ ১২০টির অধিক প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়ে করছাড়ের এসব প্রস্তাব দেয়। তবে রাজস্ব খাতে সংস্কারের মাধ্যমে করের পরিধি বাড়াতেও পরামর্শ দিয়েছে কিছু প্রতিষ্ঠান।
তথ্য বলছে, করোনার কারণে গত এক বছরে রপ্তানি কমেছে ১৩ শতাংশ। প্রবাস থেকে দেশে ফিরেছে দশ লাখের বেশি জনশক্তি। দেশ-বিদেশে কর্মহীন হয়েছে কয়েক লাখ মানুষ। আমদানি পণ্যে ধস ও স্থানীয় বাজারে সব ব্যবসা-বাণিজ্য নিম্নমুখী। কাঁচামাল সংকট ও উৎপাদন ব্যহত হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প উদ্যোক্তারা। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে বাড়ছে ক্ষতির আশঙ্কা।
এসব সংকটের কারণেই সরকারকে কর দেয়ার পরিবর্তে ছাড়ের দাবি আসছে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। তবে শুধু ছাড়ের পরিবর্তে বিদ্যমান কর কাঠামো ঠিক রাখা ও কর ফাঁকি রোধ করা জরুরি বলে মনে করছেন তারা।
পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ বলেন, নতুন করে করারোপ না করেই অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার পরিকল্পনা করতে হবে সরকারকে। এ জন্য রাজস্ব বাড়াতে হবে। সবার আগে এনবিআরের ভিত্তি মজবুত করতে হবে। রাজস্ব আহরণের প্রক্রিয়াটিকে অনলাইন কেন্দ্রিক করতে হবে। অর্থপাচার কিভাবে বন্ধ করা যায় সেদিকে নজর দিতে হবে। উৎপাদনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আমদানিতে নজর দিয়ে ব্যবসায়ীদের সুযোগ করে দিতে হবে। ভিত্তি বাড়িয়ে ও করফাঁকি রোধ করে রাজস্ব বাড়াতে হবে।
ব্যবসায়ীদের এ বিপুল ছাড়ের সব দাবি গ্রহণযোগ্য নয় জানিয়েছেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনায় তিনি বলেন, করোনার মধ্যে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো মানুষের হাতে টাকা দেয়া। সরকারি উন্নয়ন প্রকল্প এবং অনুন্নয়ন ব্যয় বন্ধ হলে মানুষের হাতে টাকা থাকবে না। ফলে সংকট তৈরি হবে। এর সমাধানেই এনবিআরকে বেশি করে আয় করতে হবে। এনবিআরের আয় বাড়াতে হলে বেশি ছাড়ের সুযোগ নেই।
করপোরেট করে ছাড়
প্রতিযোগী যেকোনো দেশের তুলনায় বাংলাদেশে করপোরেট করহার বেশি। করোনার এ সময়ে স্থানীয় উদ্যোক্তাদের রিলিফ দিতে ও নতুন করে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগে আকৃষ্ট করতে করপোরেট করহার আগামী দুই বছরে ৫ শতাংশ কমানোর প্রস্তাব করেছে সরকারের বিনিয়োগ কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা), বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষসহ প্রায় সব ব্যবসায়ী সংগঠন।
বিডার পরিচালক মো. আরিফুল হক বলেন, প্রতিযোগী দেশের তুলনায় করহার বেশি হওয়ায় বাংলাদেশে বিদেশী বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত হচ্ছে। স্থানীয় শিল্প উদ্যোক্তারা প্রতিযোগীতায় টিকে থাকতে পারছেন না। করোনার এ সময়ে এটি বিবেচনা অত্যন্ত জরুরি।
করপোরেট করে ছাড় দেয়ার দাবি করে এনবিআরে দেয়া প্রস্তাবে বিদেশী বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন ফরেইন ইনভেস্টর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি রূপালী চৌধুরী বলেছেন, বর্তমানে আটটি ক্যাটাগরির কোম্পানির কাছ থেকে ২৫ থেকে সর্বোচ্চ ৪৫ শতাংশ পর্যন্ত কর্পোরেট কর আদায় করা হয়। সাধারণ করহার ৩২.৫ শতাংশ; যেখানে প্রতিবেশি দেশ ভারতে করপোরেট কর হার ৩০ শতাংশ, শ্রীলঙ্কায় ২৮ শতাংশ। আফগানিস্তানে ২০ শতাংশ, ভিয়েতনামের ২০ শতাংশ। এ ছাড়া মিয়ানমার ও ইন্দোনেশিয়ায় ২৫ শতাংশ, মালয়েশিয়ায় ২৪ শতাংশ, সিঙ্গাপুরে ১৭ শতাংশ।
অন্যদিকে এসএমইর জন্য করপোরেট ট্যাক্স ১০ শতাংশ হারে নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছে এসএমই ফাউন্ডেশন।
করপোরেট করের ক্ষেত্রে ছাড় চেয়েছে ব্যবসায়ীদের সবচেয়ে এলিট সংগঠন মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি, ঢাকা (এমসিসিআই)।
মিনিমাম ট্যাক্স প্রত্যাহার
করপোরেট করের বাইরে ব্যবসায়ীদের সবচেয়ে বড় দাবি লোকসানি কোম্পানির জন্য মিনিমাম ট্যাক্সের বিধান প্রত্যাহার। বর্তমানে কোনো কোম্পানিকে লোকসান দেখালেও টার্নওভারের ওপর ২ শতাংশ হারে কর দিতে হয়। এটিকে বৈষম্যমূলক বলছে মেট্রোপলিটন চেম্বার্স।
এনবিআরের সঙ্গে বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে এমসিসিআইয়ের বাজেট কমিটির সদস্য জনাব আদিব হোসেন খান বলেন, নতুন ও ছোট প্রতিষ্ঠানের অনেকেই ব্যবসায় মুনাফা পায় না। মুনাফা না পাওয়ার পরও মোট বিক্রির ওপর ২ শতাংশ কর দিতে হলে ঋণী হতে হবে ব্যবসায়ীদের। করোনার এ সময়ে ব্যবসায়ীদের এ ক্ষেত্রে ছাড় দেয়া অত্যন্ত জরুরি।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, বর্তমানে দেশে নিবন্ধন দেয়া ১৪৬০০০ কোম্পানির মধ্যে বড় অংশই লোকসানি কোম্পানি। নতুন করে ব্যবসা শুরুর পর কয়েক বছর মুনাফা দেখে না কোন প্রতিষ্ঠানটি। এমতাবস্থায় মুনাফা না করে কর দেয়াটা সবার জন্য বোঝাস্বরূপ।
বিডার নির্বাহী সদস্য মহসিনা ইয়াসমিন বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগের একটা বাঁধা লোকসানী হলেও মিনিমাম ট্যাক্স। এ বিষয়টি পরিবর্তন হওয়া দরকার। বাজেটে কর কাঠামোর কি কি বিষয় পরিবর্তন দরকার এ নিয়ে এনবিআরের সঙ্গে একটি গঠনের প্রস্তাব করেছি আমরা। করোনাকালীন সময়ে ব্যবসায়ীদের ছাড় দেয়া জরুরি। এ জন্য সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে।
টার্নওভার ট্যাক্স ফ্রি লিমিট ৫০ লাখ টাকা করার প্রস্তাব
খুচরা বিক্রির ক্ষেত্রে বর্তমানে ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত বিক্রির ওপর টার্নওভার ট্যাক্স দিতে হয় না। যেকোন দোকানদারের বার্ষিক বিক্রি ৩০ লাখ টাকা থেকে ৮০ লাখ টাকার মধ্যে হলে ওই প্রতিষ্ঠানকে মোট বিক্রির ওপর ৪ শতাংশ হারে ট্যাক্স দিতে হয়। মূল্য সংযোজন কর বাবদ এ ট্যাক্স আদায় করে এনবিআর। ৮০ লাখ টাকার বেশি বিক্রি হলেই ওই প্রতিষ্ঠানকে পণ্যভেদে ভ্যাট দিতে হয়।
ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ছাড় দিতে আগামী বাজেটে টার্নওভার ট্যাক্সের এই সীমা ৫০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত করার প্রস্তাব দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠন ছাড়াও নিজেদের কয়েক লাখ উদ্যোক্তার জন্য এটি অত্যন্ত জরুরী বলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে জোর দিয়ে বলছে এসএমই ফাউন্ডেশন।
একই দাবি করেছে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতিও। দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী রয়েছেন যাদের পণ্য বিক্রির পর ৪ শতাংশ মুনাফা হয় না। সেখানে ৪ শতাংশ হারে ট্যাক্স পরিশোধ করে টিকে থাকা অসম্ভব। তাছাড়া এতো ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের হিসাব সংরক্ষণও অনেক বড় দুর্ভোগ।
তিন শতাধিক ছাড়ের প্রস্তাব এমসিসিআই, ডিসিসিআই ও বিসিআইয়ের
ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের বাজেট প্রস্তাবনা এখনো হাতে পায়নি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। তবে দেশে ব্যবসায়ীদের নেতৃত্ব দেয়া মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই), ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই), বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিসিআই) এবং চট্টগ্রাম চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির(সিসিসিআই) সঙ্গে বাজেট আলোচনা শেষ করেছে এনবিআর। আলোচনায় আগামী বাজেটে করছাড় ও আয়কর, শুল্ক ও ভ্যাট আইনে সংশোধনের জন্য ১২৬টি প্রস্তাব দিয়েছে বিসিআই।
করপোরেট করহার ও মিনিমাম কর প্রত্যাহারের দাবি ছাড়াও নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ তহবিল গঠন, কোম্পানির আরএনডি খাতে অন্তত ৫ শতাংশ ব্যয় করমুক্ত রাখা, ডিভিডেন্ট করহার ১০ শতাংশ কমানো, রিফান্ড প্রদানের সময় ১ মাস করা, ক্যাপিটাল মেশিনারি আমদানিতে করহার ১ শতাংশ করা এবং পুঁজিবাজারে গ্রিনফিল্ড অবকাঠামো বিনিয়োগের ৫ বছরের জন্য কর অবকাশ সুবিধা দাবি করেছে বাংলাদেশ চেম্বার্স।
বিসিআইয়ের মতো আয়কর, ভ্যাট ও শুল্ক খাতে শতাধিক সংস্কার প্রস্তাব করেছে ডিসিসিআই। কর্পোরেটর ডিভিডেন্ডের আয়ের ওপর বিদ্যমান ২০ শতাংশ কর অর্ধেকে নামিয়ে ১০ শতাংশ করা, গবেষণা ও উন্নয়নে বিনিয়োগ করা হলে তাতে কর সুবিধা দেয়া, ব্যবসায়ীদের তিন কোটি টাকার উপরে মোট আয়ের ওপর বাধ্যতামূলক ০.৫ শতাংশ কর অর্ধেক কমানো, ব্যক্তিশ্রেনীর করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানো, পুরো আয়কর ব্যবস্থাকে অনলাইনের আওতায় আনার প্রস্তাব দেয় সংগঠনটি।
ডিসিসিআই সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, করোনার কারণে ব্যবসায়ীরা বাঁচে থাকার সংগ্রাম করছেন। এ সময় করপোরেট ট্যাক্স কমানো, মিনিমাম ট্যাক্স প্রত্যাহার করা অত্যন্ত জরুরি। ছোট ব্যবসায়ীদের কিছুটা ছাড় দেয়ার জন্য টার্নওভার ট্যাক্স ফ্রি লিমিট বাড়ানোর প্রস্তাব করছি।
এর বাইরে এমসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে আগামী বাজেটের জন্য শতাধিক সংস্কার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। যার মধ্যে কোম্পানির প্রমোশনাল এক্সপেন্সের ক্ষেত্রে দশমিক ৫ শতাংশ নির্ধারণ করে দেয়া, রয়্যালিটি ও টেকনিক্যাল ফি বাবদ ব্যয় সীমা কমিয়ে দেয়াসহ নানা প্রস্তাব রয়েছে।
ছাড় চায় ম্যানুফ্যাকচারিং খাতের উদ্যোক্তারা
বড় চেম্বারগুলো থেকে সামগ্রিক বিজনেস পলিসির জন্য ছাড় চাওয়া হলেও নিজেদের ব্যবসার জন্য ভিন্ন ছাড়ের প্রস্তাব করেছে উৎপাদন বা শিল্পজাত পণ্য উৎপাদন তথা ম্যানুফ্যাকচারিং খাতের বিভিন্ন সেক্টরের ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো।
এর মধ্যে রপ্তানিতে নেতিবাচক অবস্থার বর্ণনা দিয়ে নগদ সহায়তার পাশাপাশি উৎসে করহার দশমিক ২৫ রাখার দাবি জানিয়েছে বিজিএমইএ।
বিপুল ক্ষতির কথা জানিয়ে টিকে থাকতে চামড়াজাত পণ্য রপ্তানিতে সব প্রতিষ্ঠানের জন্য সাধারণ বন্ডেড ওয়্যারহাউজ সুবিধার দাবি জানিয়েছে চামড়াজাত পণ্য ও পাদুকা শিল্প খাতের ব্যবসায়ীরা।
এনবিআরের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নিয়ে মোবাইল উৎপাদনে বিদ্যমান করছাড়ের সুবিধা অব্যাহত রাখার প্রস্তাব করেছেন মোবাইল আমদানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ইম্পোটার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমপিআইএ) সভাপতি রুহুল আলম আল মাহবুবও।
টিভি ম্যানুফ্যাকচারিংয়ে ব্যবহৃত যন্ত্রাংশ ও কেবিনেটে শুল্কহার ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব দেন বাংলাদেশ টেলিভিশন ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. সোহেল খান।
বিদ্যুতের কাজে ব্যবহৃত ম্যাটেরিয়ালসে নিত্য প্রয়োজনীয় উল্লেখ করে বেশ কয়েকটি মেশিনারি আমদানিতে কর ছাড় চেয়েছেন বাংলাদেশ ইলেট্রিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহাদাত হোসেন।
মোবাইল ফোনের সিমের ওপর আরোপিত ২০০ টাকার কর প্রত্যাহারের প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশের মোবাইল ফোন অপারেটরদের সংগঠন (অ্যামটব)।
সংবাদপত্রকে শিল্প হিসেবে ঘোষণা দিলেও অন্যান্য শিল্পের ন্যায় এ খাত সুবিধা পাচ্ছে না জানিয়ে কাঁচামাল হিসাবে নিউজপ্রিন্ট আমদানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা দাবি করেছে পত্রিকা মালিকদের সংগঠন নিউজ পেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব)।
এছাড়া প্লাস্টিক পণ্য রিসাইক্লিং শিল্পের ওপর থেকে আয়কর প্রত্যাহার, রপ্তানিমূল্যের ওপর অগ্রিম আয়কর কমানো, কাঁচামাল আমদানির ওপর থেকে অগ্রিম মূসকের মতো অগ্রিম আয়কর প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে প্লাস্টিক উৎপাদন ও রফতানিকারকরা।
করোনার সময় লোকসান বিবেচনায় নিযে এসি বাস ও লঞ্চের বিদ্যমান ভ্যাট অব্যাহতির দাবি করেছে উভয় খাতের ব্যবসায়ীরা। এছাড়া টায়ার আমদানিতে শুল্কহার কমানো, অবৈধ থ্রি হুইলার আমদানি বন্ধসহ আয়কর, ভ্যাট ও শুল্কখাতে বেশ কয়েকটি প্রস্তাব দিয়েছে তারা।
নগদ ২০০ কোটি টাকার বাজেট বরাদ্দ ছাড়াও আগামী এক বছর নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বিউটি পার্লার, ফুড ও দেশীয় পণ্য বিক্রির ব্যবসায় ভ্যাট ৪ শতাংশ নির্ধারণসহ ১০টি কর সুবিধা চেয়েছে নারাী উদ্যোক্তারা।
আগামী অর্থবছরের বাজেটে ৩ শতাংশ 'অসমন্বয়যোগ্য' অগ্রিম আয়কর এবং সরবরাহের ওপর ৩ শতাংশ কর প্রত্যাহার চেয়েছে সিমেন্ট খাতের ব্যবসায়ীরা।
রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হোসেন সাধারণ হোটেল রেস্তোরাঁয় সাধারণ ভোক্তাদের কাছ থেকে ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ হারে আরোপের প্রস্তাব করেন।
বিশ্বব্যাপী মোটরযানে জ্বালানির ব্যবহার কমে আসছে উল্লেখ করে দেশে ইলেকট্রিক গাড়ি আমদানিতে কর অব্যাহতির সুযোগ চেয়েছে দেশে রিকন্ডিশন্ড গাড়ির আমদানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড ডিলার্স এসোসিয়েশন (বারভিডা)।
দেশে উৎপাদিত টাইলস ও স্যানিটারি পণ্যে সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন দেশের সিরামিকস পণ্য উৎপাদনকারীরা। সিরামিক উৎপাদনের জন্য আমদানিকৃত কাঁচামালের শুল্ক অনেক বেশি উল্লেখ করে তা ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার প্রস্তাবও দিয়েছেন তারা।
বাংলাদেশ বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে অলাভজনক সংস্থা হিসেবে এ খাতের আয়ের ওপর বিদ্যমান ১৫ শতাংশ আয়কর প্রত্যাহারের দাবি জানান সংগঠনের সভাপতি এম এ মুবিন খান।