‘সাধারণ’ চাইনিজ ফুলদানি বিক্রি হলো ৮০ কোটি টাকায়, বিস্মিত নিলামকারীরাও
ফ্রান্সে নিলামে তোলা 'সাধারণ' এক ফুলদানি আট মিলিয়ন ইউরো অর্থাৎ প্রায় ৮০ কোটি টাকায় বিক্রি হয়েছে।
নিলামকারীরা ফুলদানিটির মূল্য দুই হাজার ইউরো হাঁকলেও সেটি কিনতে আগত ক্রেতাদের মধ্যে রীতিমতো যুদ্ধ শুরু হয়। হু হু করে বাড়তে থাকে ফুলদানির দাম। শেষ পর্যন্ত ফুলদানির দাম ৭.৭ মিলিয়ন ইউরোতে গিয়ে পৌঁছে যা এর ধরা দামের প্রায় চার হাজার গুণ। তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতার পর এক চীনা ক্রেতা তা কিনতে সক্ষম হন। বিক্রেতাকে দেওয়া ফি বাবদ শেষ পর্যন্ত ফুলদানির দাম দাঁড়িয়েছে ৯.১২ মিলিয়ন ইউরো।
জানা গেছে ওয়েবসাইটে ফুলদানিটির ছবি দেওয়ার পর থেকেই ক্রেতাদের মধ্যে তা নিয়ে তুমুল আগ্রহের সৃষ্টি হয়। নিলামকারীরা একে বিংশ শতাব্দীর ফুলদানি বললেও আগ্রহী ক্রেতাদের দাবি এই ফুলদানিটি ১৮ শতকের। আর সেজন্যই তা কিনতে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়।
অন্তত ৩০ জন অংশগ্রহণকারী নিলামে অংশ নিয়ে দরদাম করেন।
নিলামকারী প্রতিষ্ঠান ওজেনাট অকশন হাউজের সত্ত্বাধিকারী জ্য পিয়ের ওজেনাট বিষয়টিকে বিস্ময়কর বলে উল্লেখ করেন। তিনি জানান, নিলামকারী প্রতিষ্ঠানটির মতে এটি বিংশ শতাব্দীর একটি ফুলদানি। এর অ্যান্টিক মূল্যও খুব বেশি নয়। এমনকি যিনি এটি বিক্রি করছেন তিনি নিজেও কখনো ফুলদানিটি দেখেননি। বিক্রেতা এই ফুলদানিটি তার মায়ের কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছিলেন। অন্যদিকে তাঁর মাও এটি নিজের মায়ের কাছ থেকে পান, যিনি গত শতাব্দীতে ফ্রান্সের অন্যতম বিখ্যাত একজন সংগ্রহকারী ছিলেন।
বিশেষ আকৃতির এ ধরনের ফুলদানিগুলো তিয়ানকুইপিং নামে পরিচিত যার অর্থ 'স্বর্গীয় গোলক'। ৫৪ সেন্টিমিটার লম্বা নীল ও সাদা রঙের চীনামাটির এই ফুলদানিতে এনামেলের নকশায় আছে ড্রাগন আর মেঘের ছবি।
ওজেনাটের ডিরেক্টর সেড্রিক ল্যাবোরদে বলেন, 'ক্যাটালগ প্রকাশের পর থেকেই আমরা দেখি যে অসংখ্য চীনা ক্রেতা ফুলদানিটি দেখতে আসছেন। তাদের মধ্যে এই ফুলদানি ঘিরে ব্যাপক আগ্রহ দেখা দিয়েছে। তবে আমাদের বিশেষজ্ঞদের মতে ফুলদানিটি তেমন বেশি পুরোনো নয়'।
তবে তিনি চীনাদের ঐতিহ্য প্রীতির প্রশংসা করে বলেন, চীনারা নিজেদের ইতিহাস ধরে রাখার বিষয়ে অনেক বেশি আবেগী। তারা তাদের ইতিহাস নিয়ে গর্ববোধ করে। যিনি শেষ পর্যন্ত এটি কিনেছেন তিনিও একজন চীনা নাগরিক। ফুলদানিটি প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান