৩০০০ কোটি টাকার বীমা দাবী আদায়ে ১৯০০০ মামলা
সুইডেনে উন্নতমানের বাঁশ রপ্তানীর জন্য চট্টগ্রামের হালিশহরের ব্যবসায়ী মুহাম্মদ মোহসীন খান ১৯৭৯ সালের জুন মাসে সাধারন বীমা করপোরেশনে দুই লাখ টাকার দুই বছর মেয়াদী 'ঝুঁকি' বীমা করেন।
এলসির মাধ্যমে একটি লটে দুই লাখ টাকার বাঁশ রপ্তানীর জন্য ১৮৮০ সালের মাঝামাঝি চট্টগ্রামের শেখ মুজিব সড়ক জনতা ব্যাংক শাখার তত্ত্বাধানে ঢাকা ট্রাঙ্ক রোডের ছায়াবীথী নামক একটি গুদামে রাখা হয়। ওই বছরের ৫ ও ৬ জুন ব্যাপক ঝড় ও বন্যায় পুরো গুদাম প্লাবিত হয়। গুদামে রাখা সকল মালামালের সাথে মোহসীন খানের বাঁশগুলোও ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
বীমা আইন অনুযায়ী মোহসীন খান সাধারন বীমা করপোরেশনের কাছে দুই লাখ টাকা দাবী করেন। জরিপ সম্পন্ন করে তার ক্ষতির পরিমান নির্ধারন করা হলেও বীমা প্রতিষ্ঠানটি দাবীর টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। ওই বছরই চট্টগ্রামের আদালতে মামলা করেন মোহসীন খান।
মামলা করা হলে বীমা প্রতিষ্ঠানটির আবেদনের প্রেক্ষিতে আরবিট্রেশনের মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তি করতে ১৯৮১ সালে আদেশ দেন আদালত। আদালতের আদেশ অনুযায়ী আরবিট্রেশন বোর্ড দুই লাখ টাকা বীমার দাবী সাথে সুদসহ পরিশোধের অ্যওয়ার্ড দেয়।
এই অ্যাওয়ার্ডের বিরুদ্ধে সাধারন বীমা ১৯৮২ সালে হাইকোর্টে রিভিশন মামলা দায়ের করলে হাইকোর্ট আরবিট্রেশন বোর্ডের সিদ্ধান্ত বহাল রাখেন, একইসাথে হাইকোর্টের আদেশ দেওয়ার সময় পর্যন্ত ক্রমবর্ধমান সুদসহ দুই লাখ টাকা মোহসীন খানকে দিতে আদেশ দেন।
হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করলে ১৯৮৮ সালে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন, একইসাথে ১৯৮০ সাল থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত দুই লাখ টাকার সাথে ক্রমবর্ধমান সুদ যোগ করে কি পরিমান টাকা হয় তা নিরূপনের দায়িত্ব দেওয়া হয় চট্টগ্রামের শেখ মুজিব সড়ক জনতা ব্যাংক শাখাকে। ওই হিসাব চট্টগ্রামের আদালতে উপস্থাপনের মাধ্যমে তা বাস্তবায়নেরও আদেশ দেন আপিল বিভাগ।
মোহসীন খান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, ১৯৯২ সালে জনতা ব্যাংক একটি প্রতিবেদন দিলেও গ্রহণ না করে পুনরায় আরবিট্রেশনের আদেশ দেন।
এরপর আবার নতুন করে লড়াই শুরু হয় মোহসীন খানের। জজ আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে আবার রিভিশন মামলা করেন হাইকোর্টে। ২০০৩ সালে হাইকোর্ট রায় দেন তার পক্ষে।
ওই রায়ের বিরুদ্ধে বীমা প্রতিষ্ঠানটি আপিল করে আপিল বিভাগে। দীর্ঘ ১৩ বছর আপিল ঝুলে থাকার পর হাইকোর্টের আদেশ বহাল রেখে ২০১৬ সালে রায় দেন আপিল বিভাগ। রায়ে জনতা ব্যাংকে পুনরায় বীমা দাবীর টাকা সুদসহ নিরুপনে জনতা ব্যাংককে আদেশ দেওয়া হয়।
মোহসীন খান বলেন, 'এখন আমার বয়স প্রায় ৮০ বছর। এই মামলা চালাতে গিয়ে আমি সর্বশান্ত হয়ে গেছি। ৪০ বছর আদালতের বারান্দায় ঘুরতে ঘুরতে এখন অচল প্রায়। সুদসহ এই টাকার পরিমান এখন ৩০ লাখের বেশী হবে। ব্যাংকগুলো সিসি লোনের জন্য যে সুদ হারে ঋণ দেয়, সে হারে বীমার দাবীর টাকার সাথে সুদ যুক্ত করতে জজ আদালত, আরবিট্রেশন বোর্ড, দুই দফা হাইকোর্ট, দুই দফা আপিল বিভাগ রায় দিলেও অজানা কারণে সাধারন বীমা করপোরেশন টাকা দিচ্ছে না। যদিও আমি বীমার প্রিমিয়াম নিয়মিত পরিশোধ করেছি।'
তিনি বলেন, '২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করলেও কোনো কাজে আসেনি। এই দাবীর টাকা পরিশোধে চট্টগ্রাম কমারস অ্যান্ড চেম্বার, কয়েকজন মন্ত্রী সুপারিশ করলে আদালতের রায় অনুযায়ী টাকা দেওয়া দুরের কথা, সাধারন বীমা করপোরেশন কোনো কিছুই পাত্তা দিচ্ছে না। এখন আদালত অবমাননার মামলা করবো, সেই অবস্থাও নেই। একদিকে অর্থ সংকটে আরেকদিকে বয়সের কারণে চলাফেরা করতে পারছি না।'
মোহসীন খানের মামলার রায় হওয়ার পরও তার দাবীর টাকা না পাওয়ার ঘটনাই শুধু নয়, দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের অনুসন্ধানে সুপ্রিম কোর্ট ও ঢাকার আদালত সূত্রে জানা যায় বীমা দাবী না পেয়ে এখন পর্যন্ত সারাদেশে প্রায় ১৯০০০ মামলা রয়েছে বিভিন্ন বীমা কোম্পানীর বিরুদ্ধে। যে মামলাগুলোতে প্রায় ৩০০০ কোটি টাকা দাবী রয়েছে গ্রাহকদের।
এই মামলাগুলোতে দেশের অনেক নামকরা বীমা কোম্পানির নামও রয়েছে।
দাবী আদায়ে প্রায় ১০ হাজার মামলা রয়েছে অর্থ ঋন আদালতে, ৮ হাজার মামলা করা হয়েছে প্রতারণার অভিযোগে আর দাবী আদায়ে ১০০০ রিট মামলা রয়েছে হাইকোর্টে।
সুপ্রিম কোর্ট সূত্র বলেছে, ১৯০০০ মামলার ৮৪০০টিই ৫ বছরের বেশী সময় ধরে বিচারাধীন।
বীমা আইন বিশেষজ্ঞ ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ইমরান আহমেদ ভূঁইয়া টিবিএসকে বলেন, আমদানি রপ্তানীর লক্ষ্যে কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান বা ব্যবসা করতে হলে সাধারন বীমার আওতায় ঝুঁকি বীমা, অগ্নি বীমা, অনাকাংখিত দুর্ঘটনা বীমা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, চুরি যাওয়া জন্য বীমা করা বাধ্যতামূলক। বেশ কিছু বীমা কোম্পানী সঠিকভাবে আইন মানছে না। গ্রাহকের কাছ থেকে নিয়মিত প্রিমিয়াম আদায় করলেও, দেখা যায় তারা বীমা দাবীর টাকা পরিশোধ করছে না।
তিনি বলেন, বীমা আইন অনুসারে পলিসির মেয়াদ শেষে বা ক্ষতিগ্রস্ত হলে ৯০ দিনের মধ্যে গ্রাহকদের পাওনা পরিশোধের নির্দেশ দেয়া আছে। এই সময়ের মধ্যে টাকা ফেরত না দিলে সুদসহ টাকা ফেরত দিতে হবে। কিন্ত সেটি করা হচ্ছে না। ফলে গ্রাহকরা আদালতের আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছে। আদালতের রায়ের পরও বীমা কোম্পানিগুলো দাবীর টাকা পরিশোধ না করারও নজির রয়েছে।
সাধারণ বীমা কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ শাহরিয়ার আহসান টিবিএসকে বলেন, বীমা দাবীর টাকা পলিসির মেয়াদ শেষ হলে বা চুক্তি অনুযায়ী পরিশোধ করা হয়। তবে ব্যবসায়ী মোহসীন খানের বিষয়ে তার জানা নেই।
রাজধানীর বিজয়নগর এলাকার 'মের্সাস আশা এক্সেসরিজ' নামে গাড়ির পার্টস হোলসেল ও খুচরা বিক্রয় কেন্দ্রের মালিক আলমগীর কবির ২০১৪ সালে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে রক্ষিত মালামালের বিপরীতে ১ কোটি ৫৯ লাখ টাকার ঝুঁকি বীমা পলিসি গ্রহণ করেন মেঘনা লাইফ ইন্সুরেন্সে। তিনি সে অনুযায়ী নিয়মিত মাসিক বীমা প্রিমিয়ামও জমা দেন।
এরপর অইএফআইসি ব্যাংক থেকে ৭০ লাখ টাকার ঋণ নেন আলমগীর কবির।
২০১৫ সালের ২৭ এপ্রিল রাতে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটের মাধ্যমে আগুন ধরে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটিতে রক্ষিত সকল মালামাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ বিষয়ে থানায় সাধারন ডায়েরি (জিডি) করেন এবং তাৎক্ষণিকভাবে মেঘনা লাইফ ইন্সুরেন্সকে জানান আলমগীর কবির।
নিয়ম অনুযায়ী বীমা কোম্পানিটি জরিপ করে দেখে অগ্নিকান্ডের ঘটনাটি। কিন্তু এরপর প্রায় একবছর অতিক্রম করলেও মেঘনা লাইফ ইন্সুরেন্স নানা তালবাহানা করে আলমগীর কবিরের দাবী আদায় করেনি।
এদিকে সর্বস্ব হারানো আলমগীর কবির আইএফসি ব্যংক থেকে যে ঋণ নেন, তা পরিশোধ করতে না পারায় তাকে লোন ডিফল্টার ঘোষণা করে ঢাকার আদালতে ২০১৬ সালে মামলা করে ব্যাংকটি।
এই ব্যবসায়ী বাধ্য হয়ে ২০১৬ সালের মে মাসে মেঘনা লাইফের বিরুদ্ধে বীমা আদায়ে ঢাকার আদালতে মামলা করেন। এই মামলার শুনানিত বীমা কোম্পানীটি নানা টালবাহানা করে বিলম্ব করাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন আলমগীর।
তিনি বলেন, 'বীমা দাবীর টাকা না পাওয়ায় ব্যাংকের টাকা পরিশোধ করতে পারিনি। তারা ডিফল্ট ঘোষণা করেছে আমাকে। তাই ব্যাংক ঋণ নিয়ে ব্যবসা করারও সুযোগ নেই। তবে অইএফসি ব্যাংকে বিষয়টি জানালে তারা মেঘনা লাইফ ইন্সুরেন্সকে তাদের কালো তালিকাভুক্ত করেছে। এখন পর্যন্ত মামলার রায় না হওয়ায় পথে পথে ঘুরছি, ব্যবসা শুরু করতে পারিনি।'
মেঘনা লাইফ ইন্সুরেন্সের উর্ধ্বতন মহাব্যবস্থাপক (দাবী আদায়) মো. কবির আহমেদ টিবিএসকে বলেন, 'আলোচনা করে ৩০ লাখ টাকা আলমগীর কবিরকে দেওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি তা নেননি। আদালতে গিয়ে মামলা করেছে।'
কোম্পানি আইন বিশেষজ্ঞ ব্যারিস্টার তানজীব-উল আলম টিবিএসকে বলেন, 'বীমা শিল্প ব্যবসার তত্ত্বাবধান, বীমা পলিসি গ্রাহক, পলিসির অধীনে উপকারভোগীদের স্বার্থ সংরক্ষণ এবং বীমা শিল্পের নিয়মতান্ত্রিক উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণের জন্য আইন অনুযায়ী 'বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) রয়েছে। এসব বিষয় তারাই দেখভাল করার কথা।
তিনি বলেন, আইডিআরএ নামের এই প্রতিষ্টানটি আসলে কার্যকরী প্রতিষ্ঠান না হওয়ায় পলিসি গ্রাহকদের বেকায়দায় পড়তে হয়। এছাড়াও বীমা কোস্পানীগুলোর মালিকরা প্রভাবশালী হওয়ায় তারা তাদের দায়িত্ব যথাযথ পালন করেন না বা করতে পারে না।
গ্রাহকের দাবি পরিশোধে কোম্পানিগুলোর অ-ব্যবসায়িক এবং অনৈতিক অবস্থান সম্পর্কে নানান অভিযোগ থাকলেও এ নিয়ে একেবারেই নির্বিকার আইডিআরএ। নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে লিখিত অভিযোগ করলেও কোন সাড়া পাওয়া যায় না। গ্রাহকরা আইডিআএ'র কাছে অভিযোগ করে সমাধান পেলে আদালতে যেতো না। আইডিআরএ নিষ্ক্রিয় থাকায় আদালতে যেতে বাধ্য হচ্ছে সংক্ষুদ্ধ গ্রাহকরা। এতে দেশের বীমাখাতের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
তিনি বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্র যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের প্রায় সকল দেশে বীমা দাবী নিয়ে বাংলাদেশের মতো ঝামেলা পোহাতে হয় না। বাংলাদেশের দুই-চারটি বীমা কোম্পানি দাবীর টাকা পরিশোধ করলেও, সেজন্য গ্রাহককে অসীম ভোগান্তি পোহাতে হয়।'
জানা যায়, দুই বছর আগে গ্রাহকের জীবন বীমার পলিসির মেয়াদ শেষ হলেও দাবী পরিশোধ না করায় ২০১৪ সালে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের কাছে ৪ দফা অভিযোগ করেছেন পদ্মা ইসলামী লাইফের মৌলভীবাজারের ৬৭ জন গ্রাহক।
কর্তৃপক্ষ কোনো প্রতিকার না দেওয়ায় তারা ২০১৫ সালে প্রায় দশ কোটি বীমা দাবী আদায়ে মামলা করে। এখন পর্যন্ত সেই মামলা নিষ্পত্তি হয়নি।
২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে কুমিল্লায় রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকায় আরএন স্পিনিং মিল আগুনে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার পর বীমা পলিসি অনুযায়ী ইউনিয়ন ইন্সুরেন্স কোম্পানির কাছে ২৩২ কোটি টাকা দাবী করে স্পিনিং মিলটি। জরিপ প্রতিবেদন পাওয়ার পর ইউনিয়ন ইসন্সুরেন্স তাদের দাবী পরিশোধ না করলে স্পিনিং মিলটি গত বছরের শুরুতে হাইকোর্টে রিট করে। এখন পর্যন্ত রিটটি নিষ্পত্তি হয়নি।
আরএন স্পিনিংয়ের কোম্পানি সেক্রেটারি রাকিবুল ইসলাম টিবিএসকে বলেন, 'সার্ভে প্রতিবেদন দেওয়ার পর ইন্সুরেন্স প্রতিষ্ঠানটি কোনো কারণ ছাড়াই বীমার টাকা দিতে বিলম্ব করে। বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের কাছেও আবেদন করে কোনো সাড়া না পাওয়ায় রিট করা হয়েছে।'
আইডিআরএ'র সদস্য (আইন অনু বিভাগ) মো. দলিল উদ্দিন টিবিএসকে বলেন, 'গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষায় সকল ধরনের কাজ করা হচ্ছে। অনেক গ্রাহকের অভিযোগ নিষ্পত্তি করে দাবী পরিশোধের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। এছাড়া বীমা কোম্পানিগুলো যাতে গ্রাহকদের স্বর্থ রক্ষাতে আন্তরিক হয় সে বিষয়ে নজরদারি করা হচ্ছে।'
বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট শেখ কবির হোসেন টিবিএসকে বলেন, বীমা প্রতিষ্ঠানগুলো আইন মেনেই বীমা পলিসির টাকার গ্রাহকদের কাছে যথাযথভাবে দিচ্ছে। তবে দুই একটি ব্যতিক্রম ঘটনা থাকতে পারে, সেক্ষেত্রে দেখা যায় অনেকসময় বীমার স্থানীয় এজেন্টরা গ্রাহকদের সাথে প্রতারণা করার কারণে গ্রাহক পলিসির টাকা সময়মত পাচ্ছে না।
শিল্প ও বাণিজ্যিক ক্ষেত্রেও অনেক প্রতিষ্ঠান বীমা করার পর পলিসির দাবী পায় না, এ বিষয়ে শেখ কবির বলেন, 'অনেক প্রতিষ্ঠান বীমার শর্ত যথাযথ পালন না করার সমস্যা হয়। আবার একটি শিল্প বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান একটি বীমার কাছে একটিই পলিসি করবে। কিন্তু দেখা যায় ক্ষতিগ্রস্থ প্রতিষ্ঠান তার পুরো প্রতিষ্ঠানের নামে একাধিক বীমা প্রতিষ্ঠানের কাছে বীমা করে। যখন পলিসি গ্রহণকারী কোনো প্রতিষ্ঠান আগুন, বন্যা বা ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয় তখন তাদের একধিক বীমার কথা প্রকাশ পায়। এ নিয়ে জটিলতা তৈরি হলে, বীমার টাকা সময়মতো পায় না।'
বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারারস এন্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশন (বিকেএমইএ) এর ভাইস-প্রেসিডেন্ট (ফিন্যান্স) মোর্শেদ সারওয়ার টিবিএসকে বলেন, 'বিভিন্ন কারখানায় আগুন লাগা বা ক্ষতিগ্রস্থ বা চুরি হওয়ার পর বীমা দাবী না পাওয়ার অর্ধশতাধিক ফাইল পড়ে আছে কয়েক বছর ধরে। এ নিয়ে আমরা দফায় দফায় সংশ্লিষ্ট বীমা কোম্পানির সাথে কথা বলেছি, বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষেরও সাথে কথা বলেছি, এরপরেও তেমন কোনো কাজ হচ্ছে না। নানা অযুহাতে তারা এই দাবীগুলো আটকে রেখেছে। আর কিছু দিন দেখার পর দাবী পাওনা প্রতিষ্ঠানগুলোকে আইনের আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হবে, এ ক্ষেত্রে বিকেএমইএ সহায়তা করবে।'