পাশ্চাত্য বনাম বাকি বিশ্ব: ২১ শতকের স্নায়ুযুদ্ধে স্বাগতম

আন্তর্জাতিক

অ্যাঞ্জেলা স্টেন্ট, ফরেন পলিসি
23 June, 2022, 07:15 pm
Last modified: 23 June, 2022, 07:24 pm
পাশ্চাত্য ও বাকি দেশগুলোর মাঝে যে বিভাজন দেখা গেল তা যুদ্ধ শেষ হলেও থেকে যাবে। ভারত ও চীন গুরুত্বপূর্ণ দুই দেশ যারা পুতিনকে ব্রাত্য ঘোষণা করবে না, এমনকি যুদ্ধ শেষ হলেও।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেন আক্রমণের আগে চারটি ভুল ধারণা করেছিলেন। তিনি রাশিয়ান সেনাবাহিনীকে অনেক শক্তিশালী কল্পনা করেছিলেন। ইউক্রেনের সেনাবাহিনী ও তাদের মানসিক মনোবলকে তুচ্ছজ্ঞান করেছিলেন। ইউরোপের রাজনৈতিকভাবে বিচ্ছিন্ন দেশগুলো যে একসাথে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে সেটাও তার ধারণার বাইরে ছিল। ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার বিরুদ্ধে তেল-গ্যাস ও আর্থিকভাবে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে বেশিদিন থাকতে পারবে না এমন একটা ভুল ধারণাও তিনি পোষণ করেছিলেন।

তবে পুতিন একটা ব্যাপার ঠিকই আঁচ করেছিলেন আর তা হলো ইউরোপ বাদে অন্যান্য দেশগুলো রাশিয়ার বিরুদ্ধে এই নিষেধাজ্ঞা সমর্থন করবে না। যেদিন যুদ্ধ শুরু হলো সেদিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছিলেন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় পুতিনকে ব্রাত্য ঘোষণা করবে। কিন্তু সত্য হলো এই যে পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশের কাছেই পুতিন ব্রাত্য নন। 

বিগত দশক থেকেই রাশিয়া ক্রমশ মধ্যপ্রাচ্য, এশিয়া, লাতিন আমেরিকা, ও আফ্রিকাতে সম্পর্কোন্নয়নের চেষ্টা করে যাচ্ছিল। ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া দখলের পরে ক্রেমলিন আর বেইজিং-এর সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে। ইউরোপিয়ান রাষ্ট্রগুলো যখন রাশিয়াকে একঘরে রাখার চেষ্টা করছে, বেইজিং বরঞ্চ রাশিয়াকে আরও সাহায্য করছে, পাওয়ার অভ সাইবেরিয়া চুক্তি তারই প্রমাণ।

যুদ্ধ শুরু হবার পর জাতিসংঘ তিনবার ভোটের আয়োজন করে। দুইবার রাশিয়াকে নিন্দা জানিয়ে আরেকবার রাশিয়াকে মানবাধিকার কমিশন থেকে বাদ দেওয়া নিয়ে। এসব দাবি যদিও পাশ হয়ে গেছে। কিন্তু পৃথিবীর অর্ধেকেরও বেশি দেশের প্রতিনিধিত্বকারী দেশগুলো এসব দাবিতে ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল।

মোদ্দা কথা রাশিয়ার এই ইউক্রেন আক্রমণ যে অন্যায় সে বিষয়ে পুরো বিশ্ব একমত নয়, রাশিয়াকে শাস্তি দেওয়ার ব্যাপারেও তারা উদাসীন। বস্তুত, কিছু রাষ্ট্র রাশিয়ার এই অবস্থা থেকে সুবিধা খোঁজার তালে আছে। রাশিয়া ইস্যুতে অ-পাশ্চাত্য দেশগুলোর এই নীরবতা পাশ্চাত্য ও তার সাথীদের ভাবাচ্ছে তা শুধু এখনকার জন্য নয়, ভবিষ্যতের জন্যও।

রাশিয়াকে নিন্দাজ্ঞাপনে অস্বীকৃতি দানকারী দেশগুলোকে নেতৃত্ব দিচ্ছে চীন। চীনের সমর্থন ছাড়া পুতিন ইউক্রেন আক্রমণ করতেন বলে মনে হয়না। ৪ঠা ফেব্রুয়ারি বেইজিং-এ শীতকালীন অলিম্পিক শুরুর প্রাক্কালে রাশিয়া-চীন যৌথ চুক্তি সাক্ষরিত হয়। পাশ্চাত্য দেশগুলোর দখলদারির বিরুদ্ধে 'সীমাহীন' চুক্তি সাক্ষরিত হয় বেইজিং ও মস্কোর মাঝে। যুক্তরাষ্ট্রে নিয়োজিত চাইনিজ অ্যাম্বাসেডরের মতে, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং পুতিনের এই আক্রমণ সম্পর্কে অবগত ছিলেন না। পুতিন শি-কে চোখ টিপে ইশারা করেছিলেন নাকি বিস্তারিত বলেছেন তা আমরা কখনোই জানতে পারব না।

কিন্তু একটা বিষয় তো সত্য আর চীন তা প্রত্যাখ্যান করতে পারবে না। তা হলো যুদ্ধ শুরু হবার পর থেকেই রাশিয়াকে অকুণ্ঠ সমর্থন; বেইজিং জাতিসংঘে রাশিয়াকে নিন্দাজ্ঞাপনে ক্ষান্ত ছিল, আবার রাশিয়াকে মানবাধিকার পরিষদ থেকে বাদ দেওয়ার ব্যাপারেও বিরুদ্ধে অবস্থান করে। চীনের সংবাদমাধ্যমগুলো রাশিয়ান প্রোপাগান্ডা, ইউক্রেনের সামরিক শক্তিক্ষয় এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর কারণেই যুদ্ধ হয়েছে এমনটাই ফলাও করে প্রচার করছে। রাশিয়ান সৈন্যদের করা বুচা হত্যাকাণ্ডকে চীনের গষমাধ্যম স্বাধীন তদন্ত বলেই প্রচার করছে। 

কিছু কিছু ক্ষেত্রে চীনের অবস্থান পরস্পরবিরোধী। প্রত্যেকটা দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতায় বিশ্বাসী চীন, এমনকি ইউক্রেনেরও। চীন খুব শীঘ্রই এই যুদ্ধের অবসান চায়। এদিকে ইউক্রেন চীনের বড় বাণিজ্য সহযোগী, চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ প্রক্রিয়ার অংশ ইউক্রেন। তাই চীন চাইবে না ইউক্রেন আর্থিক সংকটে পড়ুক, যা ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে।

এসব স্বত্ত্বেও শি পুতিনকেই সমর্থন করছেন। পুতিন আর শি দুজনেই যুক্তরাষ্ট্রকেন্দ্রিক বিশ্বব্যবস্থার ঘোরবিরোধী। তাই তারা দুজনেই প্রতিজ্ঞাবদ্ধ যুক্তরাষ্ট্র কেন্দ্রিক বিশ্বব্যবস্থা ভেঙে নতুন বিশ্বব্যবস্থা তৈরি করতে।

চীনের জন্য এই নতুন বিশ্বব্যবস্থা হবে নিয়মতান্ত্রিক। অন্যদিকে পুতিনের বিশ্বব্যবস্থায় নিয়ম-নীতির বালাই থাকবে না। দুই দেশেরই অভ্যন্তরীণ ও মানবাধিকার বিষয়ে ইউরোপিয়ান দেশগুলোর নাক গলানো ভালো ভাবে নেয়না। চীন আর রাশিয়া দুই দেশেরই নিজেদের টিকিয়ে রাখতে কর্তৃত্ববাদী বিশ্বব্যবস্থা দরকার। ফলে ইউক্রেনের ক্ষতি হলেও চীন চুপ থাকবে রাশিয়ার বিরুদ্ধে।

চীনের অনেক অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান ইউরোপে নিষেধাজ্ঞা পেয়েছে। রাশিয়ার চাইতেও চীন অর্থনৈতিক ঝুঁকিতে বেশি পড়বে যদি আমেরিকা চীনের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়। তাইওয়ানের উপর যদি চীন এই আগ্রাসন চালাতো তাহলে কি হতো চীন এটা নিয়ে ভাবছে। চীন খুব ভালোভাবে এই নিষেধাজ্ঞা থেকে শিক্ষা নিচ্ছে। 

রাশিয়ার পক্ষের শক্তিশালী দেশগুলোর মধ্যে ভারত অন্যতম। বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক এ দেশ কোয়াডের সদস্য। জাতিসংঘের তিন দাবির বিপক্ষে ভারত ছিল ও রাশিয়ার বিরুদ্ধে যে নিষেধাজ্ঞা জানানো হয় ভারত এখানেও ভোট দানে বিরত ছিল। বুচায় ঘটে যাওয়া সাধারণ মানুষের হত্যাকাণ্ডকেও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি 'উদ্বেগজনক' বলেছেন এবং জাতিসংঘে নিযুক্ত ভারতীয় অ্যাম্বাসেডর ফের বলেছেন তারা একটি 'স্বাধীন তদন্তের' আহ্বান জানান। তবে কেউই এর জন্য রাশিয়াকে দোষারোপ করেননি।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর রাশিয়াকে বিভিন্ন কারণে ভালো বন্ধু বলে স্বীকার করেছেন। আর ভারত রাশিয়া থেকে ক্রমাগত অস্ত্র ও তেল আমদানি অব্যাহত রেখেছে। বস্তুত ভারত মস্কোর অস্ত্র কেনাবেচায় অন্যতম গ্রাহক, ভারতের দুই তৃতীয়াংশ অস্ত্র তাদের থেকেই কেনা। যুক্তরাষ্ট্রের উপ স্টেট সেক্রেটারি ভিক্টোরিয়া নালান্ড মনে করেন, ভারতের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রি অনিচ্ছায় রাশিয়ার প্রতি অস্ত্র নির্ভরতা বাড়িয়েছে ভারতের। স্নায়ুযুদ্ধকালীন জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিল এই ভারতই।

রাশিয়ার প্রতি নিন্দাজ্ঞাপনে অস্বীকৃতি জানানোর কিছু কারণ তো মোদির অবশ্যই আছে। চীন এখানে বড় খেলোয়াড়। ভারত রাশিয়াকে নির্ভরযোগ্য সমতারক্ষাকারী মিত্র ভাবছে চীনের বিপক্ষে। ২০২০ সালে সীমানাযুদ্ধে রাশিয়া মধ্যস্থতাকারী ছিল। তার ওপর স্নায়ুযুদ্ধকালীন নিরপেক্ষতা নীতি ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি সন্দেহবাতিকতা রাশিয়ার প্রতি সহমর্মিতা বাড়িয়েছে। এছাড়া ভারতকে এখন সমন্বয় করে চলা লাগবে কোয়াডের সদস্য যুক্তরাষ্ট্রের সাথেও। 

বিগত দশকে পুতিনের কূটনৈতিক সাফল্যের একটা হলো মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সাথে পুনরায় সম্পর্কোন্নয়ন। সোভিয়েত ইউনিয়ন থাকার সময় যে রাষ্ট্রগুলোর সাথে সম্পর্ক ছিলনা সেসব রাষ্ট্রগুলোর দিকেও নজর দিয়েছে পুতিন। রাশিয়াই একমাত্র ক্ষমতাশালী দেশ যে মধ্যপ্রাচ্যের সব দেশের সাথে সুসম্পর্ক রাখার চেষ্টা করেছে। সৌদি আরব তো বটেই, ইরান, সিরিয়া ও ইসরায়েলের সাথেও সুসম্পর্ক রয়েছে রাশিয়ার। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে খাদ্য সরবরাহ সেটারই ইঙ্গিত দিচ্ছে।

যদিও বেশিরভাগ আরব দেশগুলো রাশিয়াকে নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘের প্রথম ভোটে। আরব লীগের ২২টি রাষ্ট্র নিজেদের বিরত রেখেছিল নিন্দাজ্ঞাপনে। কিছু রাষ্ট্র মানবাধিকার কমিশন থেকে রাশিয়াকে বাদ দেওয়ার ব্যাপারেও অপারগ ছিল। আমেরিকার কথিত অন্ধ অনুগত রাষ্ট্র যেমন সৌদি আরব, আরব আমিরাত, মিশর ও ইসরায়েল এখনো রাশিয়ার বিপক্ষে কোন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেনি। উপরন্তু পুতিন ও সৌদি প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান দুইবার ফোনে কথা বলেছেন যুদ্ধ শুরুর পর।

ইসরায়েলের অবস্থান নির্ভর করছে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের ওপর রাশিয়ার সমর্থনের প্রতি। এখানে শুধু রাশিয়া নয়, ইরানেরও উপস্থিতি আছে। সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানি সৈন্যদের নিয়ে দ্বন্দ্ব নিরসনে চুক্তি হয় ইসরায়েলের সাথে। এ চুক্তি সফল হতে সাহায্য করে রাশিয়া। ইসরায়েলের ভয় এই যে রাশিয়াকে চটানোর ফলে উত্তর সীমান্ত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। ইসরায়েল ইউক্রেনে মেডিকেল ও মানবিক সাহায্য পাঠালেও অস্ত্র দেয়নি। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নাফাতালি বেনেট রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করেন, যদিও তা ফলপ্রসূ হয়নি।

মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশের রাশিয়া সমর্থনের পেছনে কারণ হলো যুক্তরাষ্ট্রের ওপর সন্দেহ ও এসব অঞ্চলের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে সমালোচনা করার জন্য। এই অঞ্চলে একমাত্র সিরিয়া শক্ত রাশিয়াপন্থী কেননা রাশিয়ার সেনাসমর্থন ছাড়া আসাদের মসনদ বেশিদিন টিকত না। 

সাম্প্রতিক সময়ে রাশিয়ার চোখ আফ্রিকাতেও নিবন্ধ ছিল। রাশিয়ান ভাড়াটে ওয়াগনার গ্রুপ আফ্রিকাতে অনেক সচল। বেশিরভাগ আফ্রিকান দেশ রশিয়ান আগ্রাসনের নিন্দাজ্ঞাপনে ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকে, আবার মানবাধিকার কমিশন থেকে রাশিয়াকে বাদ দেওয়ার বিপক্ষে অবস্থান নেয়। এমনকি ব্রিকস-এর সদস্য দক্ষিণ আফ্রিকাও নীরব।

অনেক আফ্রিকান রাষ্ট্র রাশিয়াকে সোভিয়েত ইউনিয়নের উত্তরসূরি ভাবে। সোভিয়েত ইউনিয়ন উপনিবেশবিদ্বেষী ছিল। বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনে সোভিয়েত ইউনিয়ন আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসের বড় সমর্থক ছিল। যে কারনে বর্তমান আফ্রিকান নেতারা এখনো কৃতজ্ঞবোধ করেন। আমেরিকা-বিদ্বেষী মনোভাব এখানেও কাজ করেছে, মধ্যপ্রাচ্যের মতো।

শুধু আমেরিকা নয় রাশিয়ারও কিছু অনুগত রাষ্ট্র আছে। নিশ্চিতভাবে কিউবা, ভেনিজুয়েল ও নিকারুগুয়া মস্কো সমর্থন করছে, কিন্তু আরও কিছু লাতিন আমেরিকার দেশ রাশিয়াকে সমর্থন করছে। ব্রিকস-এর সদস্যরাষ্ট্র ব্রাজিলও নিজেকে নিরপেক্ষ দাবি করছে এবং প্রেসিডেন্ট জাইর বলসনারি রাশিয়া সফর করে গিয়েছেন আক্রমণের কিছুদিন আগে। ব্রাজিল রাশিয়ার ‌ওপর কৃষি স্যারের জন্য অনেক নির্ভরশীল।

উত্তর আমেরিকার দেশ মেক্সিকোও নিন্দাজ্ঞাপনে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। এমনকি প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস ম্যানুয়েল একটি পার্টিরও আয়োজন করেন মেক্সিকোতে নিযুক্ত রাশিয়ান অ্যাম্বাসেডরকে আমন্ত্রণ জানিয়ে। ১৯৭০ সালের দিকের ঐতিহ্যবাহী বাম আন্দোলনের বীজই একমাত্র ব্যাখ্যা করতে পারে মেক্সিকোর এই আমেরিকাবিদ্বেষী মনোভাব আর সেই সঙ্গে রাশিয়াকে সমর্থনের মাধ্যমে পাশ্চাত্যকে চ্যালেঞ্জ জানানো।

বাকি দেশগুলো পৃথিবীর অর্ধেক জনসংখ্যারও বেশি অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করে। কিন্তু বাকি নিন্দা না জানানো বা রাশিয়াকে নিষেধাজ্ঞা না দেওয়া দেশগুলোর চাইতে পাশ্চাত্যের মিলিত জিডিপি, অর্থনৈতিক ক্ষমতা, ভূরাজনৈতিক শক্তিমত্তা বেশি।

তবুও পাশ্চাত্য ও বাকি দেশগুলোর মাঝে যে বিভাজন দেখা গেল তা যুদ্ধ শেষ হলেও থেকে যাবে। ভারত ও চীন গুরুত্বপূর্ণ দুই দেশ যারা পুতিনকে ব্রাত্য ঘোষণা করবে না, এমনকি যুদ্ধ শেষ হলেও। নভেম্বরে হতে যাওয়া পরবর্তী জি-২০ সম্মেলনের স্বাগতিক দেশ ইন্দোনেশিয়া জানিয়েছে তারা পুতিনের উপস্থিতি কামনা করছে।

প্রাণঘাতী এ যুদ্ধ শেষে পূর্ব ইউরোপে ন্যাটোর মাধ্যমে আমেরিকা তার সামরিক শক্তি আরও বাড়াবে। পুতিনের স্বপ্ন যদি ন্যাটোর ক্ষমতা কমানো হয়, তাহলে পুতিন সম্পূর্ণ ভিন্ন এক অভিজ্ঞতা লাভ করলেন বলা যায়। ইউক্রেন আক্রমণের ফলে ন্যাটোর মিত্রদের মাঝে সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত তো হলোই, সেই সঙ্গে সুইডেন ও ফিনল্যান্ড ন্যাটোতে যুক্ত হয়ে ন্যাটোর সদস্যরাষ্ট্র বাড়াল। পুতিন যতদিন ক্ষমতায় থাকবেন বা পুতিনের পর যিনি থাকবেন, ততদিন ন্যাটো আরও শক্তিশালী পদক্ষেপ নেওয়ার চেষ্টা করবে।


অনুবাদ: আতিকুর রহমান

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.