গয়নার ল্যাবে তৈরি হলো ‘বিশ্বের প্রথম’ কৃত্রিম রুবি!
ব্রিস্টলের ইউনিভার্সিটি অব দ্য ওয়েস্ট অব ইংল্যান্ডের (ইউডব্লিউই) জুয়েলারি ডিজাইনের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক সোফি বুনস গয়নার ল্যাবে একটি পূর্ণ আকারের রুবি তৈরি করেছেন। এটিকে বিশ্বের প্রথম ল্যাবে তৈরি রুবি বলে মনে করা হচ্ছে। খবর বিবিসি'র।
এই প্রথম কোনো প্লাটিনাম গহনার ভেতর বসিয়ে রুবি তৈরি করা হয়েছে, যা এর আগে কখনো সম্ভব হয়নি। সোফি বুনস একটি ছোট রুবির টুকরো নিয়ে সেটিকে প্লাটিনামের গহনার মধ্যে বসিয়ে 'ফ্লাক্স' নামক একটি রাসায়নিক ব্যবহার করেন, যা তাপমাত্রা কমিয়ে রুবিটিকে বড় হতে সাহায্য করে। এই পদ্ধতিতে রুবি ল্যাবে খুব কম শক্তি খরচ করে তৈরি করা সম্ভব।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি, তাদের এই 'ইন সিচু প্রসেস' বিশ্বে প্রথম, যা আগে কোনো গবেষক সফলভাবে করতে পারেননি।
বুনস জানান, রুবি তৈরির এই প্রক্রিয়াটি একটি ছোট 'রুবি বীজ' থেকে শুরু হয়, যা সাধারণত ফেলে দেওয়া রত্নের অংশ থেকে নেওয়া হয়। এই পদ্ধতিতে রুবির ছোট টুকরোগুলোকে নতুন করে তৈরি করা সম্ভব, যা পূর্বে সাধারণত অপচয় হিসেবেই ফেলে দেওয়া হতো।
এই প্রক্রিয়াটি ল্যাবে তৈরি কৃত্রিম রত্নের ধারণাকে নতুনভাবে ভাবতে বাধ্য করবে। কারণ এতে প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ায় রত্নের বৃদ্ধি নকল করা হয়, যা পরিবেশবান্ধব ও কম শক্তি ব্যবহার করে সম্পন্ন করা যায়।
এ বিষয়ে ব্রিস্টলের সমসাময়িক গহনা ডিজাইনার রেবেকা এন্ডারবি বলেন, "ল্যাবে তৈরি রত্ন মানে এটি কৃত্রিম নয়। এটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ারই একটি বিকল্প, যা কম খরচে এবং কম সময়ে তৈরি করা সম্ভব।"
এই প্রকল্পটি সোফি বুনসের পিএইচডি গবেষণার অংশ হিসেবে শুরু হয়েছিল এবং প্রাথমিক সাফল্যের পর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দ্বিতীয় দফায় তহবিল পেয়েছে। এছাড়াও ইউনিভার্সিটি অব ব্রিস্টল অন্যান্য রত্নগুলোর ক্ষেত্রে এই প্রক্রিয়া পরীক্ষা করার জন্য গবেষণা চালু করেছে।
এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রুবি তৈরি করতে মাত্র পাঁচ ঘণ্টার জ্বালানি খরচ হয়, যা পরিবেশবান্ধব এবং খনিতে রত্ন খোঁড়ার চেয়ে অনেক বেশি টেকসই বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
অনুবাদ: সাকাব নাহিয়ান শ্রাবন