চীনের জুনেয়াও এয়ারলাইন্সের বিমানে অবিরাম কান্না থামাতে বাথরুমে শিশুকে আটকে রাখে দুই যাত্রী
বাচ্চা শিশুর কান্না না থামায় তাকে 'শিক্ষা' দেয়ার জন্য বিমানের বাথরুমে আটকে রাখেন দুই যাত্রী, সেটি আবার ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশও করেন। এমন অমানবিক ঘটনা ঘটেছে চীনের একটি ফ্লাইটে।
সিএনএন-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ২৪ আগস্ট জুনেয়াও এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট গুইয়াং থেকে সাংহাই যাওয়ার সময় এই ঘটনাটি ঘটে।
চীনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম 'দৌইনে' ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায় দুই অপরিচিত ব্যক্তি ছোট মেয়েটিকে বাথরুমে আটকে রেখে বলছে, "তুমি কান্না থামাও, না হলে আমরা তোমাকে বের হতে দেব না।"
শিশুটি তখন তাদের কোলে থেকে বেরিয়ে দরজার দিকে হাত বাড়ানোর চেষ্টা করে।
যখন মেয়েটি কান্না থামায়, তখন ভিডিও ধারণকারী নারী তাকে কোলে তুলে বলেন, "তুমি যদি আবার শব্দ করো, তাহলে আমরা আবার (বাথরুমে) আসবো।"
জুনেয়াও এয়ারলাইন্সের বিবৃতি অনুযায়ী, ছোট মেয়েটি তার দাদীর সাথে ভ্রমণ করছিল। তিন ঘণ্টা ধরে অনবরত কাঁদতে থাকায় তার দাদি-ই নাকি এই দুই যাত্রীকে মেয়েটিকে 'শিক্ষা' দেওয়ার জন্য বাথরুমে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছিলেন।
ভিডিওটি অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ার পর দ্রুতই সমালোচনার ঝড় ওঠে। অনেকে মেয়েটির সঙ্গে এই ধরনের আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মন্তব্যকারীরা ওই দুই যাত্রীর আচরণকে 'নির্দয়' এবং 'অমানবিক' বলে উল্লেখ করেন।
তবে সমালোচনা বাড়তে থাকলে, এয়ারলাইনসের গ্রাহক সেবা বিভাগ 'ক্রুদের নজরদারির অভাব'-এর জন্য দুঃখ প্রকাশ করে এবং ওই দুই যাত্রীর আচরণের নিন্দা জানায়।
ভিডিও পোস্টকারী নারী জানান, তার উদ্দেশ্য ছিল অন্য যাত্রীদের জন্য শান্তিপূর্ণ ফ্লাইট নিশ্চিত করা। তবে তার পোস্টটি দ্রুত বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সম্মুখীন হয়, যেখানে অনেকেই তাকে হৃদয়হীন এবং শিশুটিকে নির্যাতনের অভিযোগ তোলেন। পরে ভিডিওটি মুছে ফেলেন তিনি।
চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওয়েইবোতে এক মন্তব্যে বলা হয়েছে, '৩০ বছর বয়সী প্রাপ্তবয়স্কদের আবেগের প্রকাশকে সমাজ স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করে, কিন্তু ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে তা সহ্য করতে চায় না।'
আরেকটি মন্তব্যে বলা হয়েছে, 'আমরাও একসময় শিশু ছিলাম... এমন হৃদয়হীন হবেন না।'
বিমানে শিশুদের আচরণ নিয়ে বিতর্ক চীনা সামাজিক মাধ্যমে নতুন নয়; এ ধরনের বিষয় নিয়মিত আলোচনায় ওঠে আসে।
অনুবাদ: সাকাব নাহিয়ান শ্রাবন