রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কিয়েভের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎ কেন্দ্র ধ্বংস

আন্তর্জাতিক

বিবিসি
12 April, 2024, 11:15 am
Last modified: 12 April, 2024, 11:16 am
বৃহস্পতিবার সকালে ইউক্রেনের বিভিন্ন স্থানে ৮০টির বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে যার অধিকাংশ বিদ্যুৎ ও জ্বালানী কেন্দ্রকে লক্ষ্য করে চালানো হয়েছে। ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার এক তৃতীয়াংশ ইউক্রেনের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করে বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে।

রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎ কেন্দ্র সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ট্রিপিলিয়া বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি কিয়েভ সহ তিনটি অঞ্চলে সর্বাধিক পরিমানে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতো।

রাশিয়া দীর্ঘদিন ধরে পরিকল্পিতভাবে ইউক্রেনের জ্বালানি ব্যবস্থাকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়ে আসছে।

বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির দায়িত্বে থাকা জ্বালানী প্রতিষ্ঠান সেন্ট্রানারগোর চেয়ারম্যান আন্দ্রি হোতা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবারের হামলায় বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির ট্রান্সফরমার, টারবাইন এবং জেনারেটরসহ শতভাগ অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে।

হোতা বলেছেন, বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি লক্ষ্য করে একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হলেও কর্তব্যরত কর্মচারীরা প্রথম ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরেই নিরাপদে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে। ঐ অঞ্চলের বাসিন্দাদের ঘরের জানালা বন্ধ রাখতে, বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি চার্জ দিয়ে রাখতে ও পানি সঞ্চয় করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকালে ইউক্রেনের বিভিন্ন স্থানে ৮০টির বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে যার অধিকাংশ বিদ্যুৎ ও জ্বালানী কেন্দ্রকে লক্ষ্য করে চালানো হয়েছে। ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার এক তৃতীয়াংশ ইউক্রেনের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করে বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে।

হোতা বলেছেন, ট্রিপিলিয়া বিদ্যুৎ কেন্দ্র ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় গ্রীষ্মে ইউক্রেন খুব একটা সমস্যা না হলেও শীতকালে এটি একটি বিশাল সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে। ইউরোপ থেকে খুচরা যন্ত্রাংশ দিয়ে এটি আবারো র্নির্মাণ করা সম্ভব হলেও, ইউক্রেনের মিত্রদের কাছ থেকে শক্তিশালী বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছাড়া ভবিষ্যতেও এতে হামলা হওয়ার ঝুঁকি থাকবে।

ইউক্রেনের পশ্চিমে বৃহস্পতিবার অন্তত আরো দুটো তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের 'উল্লেখযোগ্য ক্ষতি' হয়েছে যা দেশব্যাপী বিদ্যুৎ সরবরাহের ওপর আরো বেশি চাপ সৃষ্টি করেছে। এর আগে মার্চ মাসে টানা ক্ষেপনাস্ত্র হামলার পর ইউক্রেনের ডিটিইকে পাওয়ার কোম্পানির বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ইতোমধ্যেই ২০ শতাংশ কমে এসেছে।

ডিটিইকে বিবিসিকে জানিয়েছে, বেসামরিক পাওয়ার স্টেশনগুলোতে সাম্প্রতিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন হামলায় গ্রিডে প্রয়োজনীয় শক্তি সরবরাহ করা কঠিন হয়ে উঠবে। রাশিয়ার বারবার হামলাকে প্রতিষ্ঠানটি ইউক্রেনের জ্বালানি ব্যবস্থা এবং এর কঠোর অর্জিত স্বাধীনতাকে দুর্বল করার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখছে।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বৃহস্পতিবার বলেছেন, রুশ লক্ষ্যবস্তুতে কিয়েভের হামলার পরেই প্রতিক্রিয়া হিসেবে ইউক্রেনের বিদ্যুৎ কেন্দ্র লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে।

তিনি বলেন, "আমি জোর দিয়ে বলতে চাই যে মানবিক কারণে আমরা শীতকালে এমন হামলা চালাইনি কারণ আমরা হাসপাতালের মতো স্থানে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করতে চাইনি। কিন্তু ইউক্রেনের ধারাবাহিক হামলার পর আমাদের বিদ্যুৎ কেন্দ্রে হামলা চালিয়ে প্রতিক্রিয়া দেখাতে হয়েছে।"

 


অনুবাদ: তাসবিবুল গনি নিলয়


 

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.