পর্তুগালে নিলামে উঠছে চকোলেট নিয়ে লেখা ৪০০ বছরের পুরোনো বই! 

আন্তর্জাতিক

ইউরো নিউজ
11 April, 2024, 11:40 am
Last modified: 11 April, 2024, 11:43 am
বইটির মাত্র তিনটি কপির অস্তিত্ব আছে, যার মধ্যে একটি নিলামে উঠছে। নিলাম শুরু হবে ২ হাজার ইউরো থেকে। 

পর্তুগালে নিলামে উঠছে ৪০০ বছরের পুরোনো একটি দুর্লভ বই 'আন ডিসকার্সো ডেল চকোলেট'। ধারণা করা হয় বইটি শুধু চকোলেট নিয়ে লেখা পৃথিবীর সবচেয়ে পুরোনো বই! 

১৬২৪ সালে সেভিলে মুদ্রিত এই মূল্যবান বইটি লিখেছেন স্প্যানিশ ডাক্তার এবং অ্যাকাডেমিক সান্তিয়াগো ডি ভালভার্দে টুরিসেস। বইটির মাত্র তিনটি কপির অস্তিত্ব আছে, যার মধ্যে একটি নিলামে উঠছে। নিলাম শুরু হবে ২ হাজার ইউরো থেকে। 

পর্তুগালের পাবলিকো সংবাদপত্রের বরাত দিয়ে অ্যানো অকশন হাউসের পরামর্শক ফ্রান্সিসকো ব্রিটো জানান, এই বইয়ের বাকি দুটি কপির একটি মাদ্রিদের জাতীয় গ্রন্থাগারে এবং অন্যটি ক্যালিফোর্নিয়ার সান দিয়েগো বিশ্ববিদ্যালয়ে রাখা আছে। 

'আন ডিসকার্সো ডেল চকোলেট'-এ চকোলেট নিয়ে বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান, ব্যবহারিক পরামর্শ, রেসিপি এবং সাংস্কৃতিক ভাষ্যের সংমিশ্রণ রয়েছে। পাঁচটি অংশে বিভক্ত, বইটি চকোলেটের বহুমুখী প্রকৃতি এবং মানবদেহে এর প্রভাবগুলোও আলোচনা করে। 

টুরিস চকোলেটের 'গরম, আর্দ্র এবং চিটচিটে' প্রকৃতি সম্পর্কে সতর্ক করেছেন, তার মতে এটি বিরক্তি এবং ক্রোধের কারণ হতে পারে। 

চকো-লোর: চকোলেটের একটি তিক্ত-মিষ্টি ইতিহাস

প্রায় ৫,৩০০ বছর আগে বর্তমান দক্ষিণ-পূর্ব ইকুয়েডরের জামোরা-চিনচিপ প্রদেশে মায়ো-চিনচিপ সংস্কৃতি দ্বারা কোকো বীজ চাষ করা শুরু হয়েছিল। পরে এই প্রথা মেসো-আমেরিকায় ছড়িয়ে পড়ে। ওলমেকস, মায়া এবং অ্যাজটেকদের মতো মধ্য আমেরিকার আদিবাসীরা কোকো গাছকে পবিত্র হিসেবে শ্রদ্ধা করত। তারা এর বীজ দিয়ে 'জোকোলাটল' নামে একটি তিক্ত, ফেনাযুক্ত পানীয় তৈরি করতে ব্যবহার করত। নাহুয়াতল ভাষায় যার অর্থ 'তিক্ত জল'।

স্থানীয় আমেরিকানরা কোকো বীজ পিষে একটি ঝাঁকুনির সাহায্যে জগে চকোলেট মিশ্রিত করছে। সৌজন্যে: উইকিমিডিয়া কমন্স

অভিজ্ঞরা জানান, যখন হার্নান কর্টেসের নেতৃত্বে স্প্যানিশ এক্সপ্লোরাররা ষোড়শ শতাব্দীর গোড়ার দিকে সোনা এবং ধনসম্পদের সন্ধানে আমেরিকাতে পৌঁছায়, তখন তারা এ পানীয়টি আবিষ্কার করে। 

অ্যাজটেক সাম্রাজ্যের স্প্যানিশ বিজয়ের পরে, জোকোলাটল ধীরে ধীরে ইউরোপের মানুষদের কাছে পৌঁছায়। স্প্যানিশরা দারুচিনি এবং ভ্যানিলার মতো মশলার পাশাপাশি তিক্ত পানীয়টি মিষ্টি করার জন্য চিনি বা মধু যোগ করেন। 

সান্তিয়াগো দে ভালভার্দে টুরিসেসের 'আন ডিসকার্সো ডেল চকোলেট' থেকে একটি পৃষ্ঠা। সৌজন্যে: ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়

শুরুর দিকে পানীয় হিসাবে খাওয়া হলেও, ১৭তম শতাব্দীতে ইউরোপ জুড়ে বিশেষত স্পেন, ইতালি এবং ফ্রান্সে চকোলেট জনপ্রিয় হতে শুরু করে। 

টুরিসের বইটিতে স্পেন এবং নতুন বিশ্ব উভয়ের বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে চকোলেট তৈরি ও ব্যবহারের নানা রেসিপি রয়েছে। 

তিনি চকোলেটের স্বাদ, রং এবং স্বাদ উন্নত করতে বিশেষত কলেরিক এবং স্যাঙ্গুইন মেজাজযুক্ত ব্যক্তিদের জন্য অ্যানাটো বীজ যুক্ত করার পরামর্শ দেন, যা আচিওট নামেও পরিচিত। 

বইটি ১৯৭৭ সালে মারা যাওয়া পর্তুগিজ সামরিক কর্মকর্তা, লেখক ও প্রত্নতাত্ত্বিক হোসে অগাস্টো কোরেইয়া দে ক্যাম্পোসের থেকে সংগ্রহ করে নিলামে তোলা হয়েছে। 


অনুবাদ: সাকাব নাহিয়ান শ্রাবন
 

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.