দক্ষিণপূর্ব এশীয়দের কাছে এখন যুক্তরাষ্ট্র নয়, সেরা মিত্র হচ্ছে চীন: জরিপ

আন্তর্জাতিক

সিএনবিসি
03 April, 2024, 10:30 pm
Last modified: 05 April, 2024, 01:29 pm
২০২০ সাল থেকে প্রতিবছর এই জরিপ করা হচ্ছে। সেখানে এবছর প্রথমবারের মতো সেরা মিত্র হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের জায়গা দখল করেছে চীন। আগে দক্ষিণপূর্ব এশীয়দের ৬১ দশমিক ১০ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্রকে পছন্দের মিত্র হিসেবে দেখতেন, যা এবার নেমে এসেছে ৪৯ দশমিক ৫০ শতাংশে। 

প্রতীকী ছবি: সংগৃহীত

মিত্র হিসেবে কোনো একটি পক্ষকেই বেঁছে নিতে হলে– দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার অধিকাংশ মানুষ চীনের মিত্রতাই চাইবেন। তবে এই অঞ্চলের কিছু দেশ, যাদের সাথে বেইজিংয়ের দক্ষিণ চীন সাগরের সীমা নিয়ে বিরোধ উত্তেজনাপূর্ণ অবস্থায় আছে– তাঁরা এখনও ওয়াশিংটনের মিত্রতাই চান। আঞ্চলিক এক জনমত জরিপে এমন চিত্রই উঠে এসেছে। 

জরিপটি করেছে সিঙ্গাপুরের চিন্তক সংস্থা– আইএসইএএস-ইউসুফ ইশাক ইনস্টিটিউটের আসিয়ান স্টাডিজ সেন্টার। চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত যা দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশের একাডেমিশিয়ান, ব্যবসায়ী, সরকারি কর্মী, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বের মধ্যে পরিচালিত হয়। 

জরিপে অংশগ্রহণ করেন মোট এক হাজার ৯৯৪ জন। দক্ষিণপূর্ব এশীয় দেশগুলোর জোট- আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক অংশগ্রহণকারী ছিলেন সিঙ্গাপুর ও ইন্দোনেশিয়ার নাগরিক। 

২০২০ সাল থেকে প্রতিবছর এই জরিপ করা হচ্ছে। সেখানে এবছর প্রথমবারের মতো সেরা মিত্র হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের জায়গা দখল করেছে চীন। আগে দক্ষিণপূর্ব এশীয়দের ৬১ দশমিক ১০ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্রকে পছন্দের মিত্র হিসেবে দেখতেন, যা এবার নেমে এসেছে ৪৯ দশমিক ৫০ শতাংশে। 

অন্যদিকে, আসিয়ান দেশগুলোর জন্য কৌশলগত প্রাসঙ্গিকতার দিক থেকে শীর্ষে উঠে এসেছে চীন; জরিপে অংশ নেওয়াদের ৫০ শতাংশ এই মত দেন। আর এই অঞ্চলের জন্য সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য অংশীদার মনে করা হচ্ছে জাপানকে। 

টানা চতুর্থ বছরের মতো আসিয়ান ও চীন পরস্পরের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদারের স্থান ধরে রেখেছে। ২০২৩ সালে এই বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল প্রায় ৯১ হাজার কোটি ডলার। 

তবে বেশিরভাগ উত্তরদাতা এটাও জানান যে, চীনের ওপর তাঁদের আস্থা কম। ৪৫ দশমিক ৫০ শতাংশ অংশগ্রহণকারী আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, চীন তাঁর অর্থনৈতিক প্রভাব খাঁটিয়ে বা সামরিক শক্তির জোরে তাঁদের দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করতে পারে। 

এই মতবাদ বেশি জোরালো ফিলিপাইন ও ভিয়েতনামে। যাদের সাথে দক্ষিণ চীন সাগরের সীমানা নিয়ে বেইজিংয়ের বিরোধ রয়েছে। প্রায় ৯০ দশমিক ২০ শতাংশ ফিলিপিনো এবং ৭২ দশমিক ৫০ শতাংশ ভিয়েতনামের অংশগ্রহণকারী তাই চীনকে হুমকি হিসেবে দেখেই বলেই জানান।

উভয় দেশে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি সমর্থনও বেশি। জরিপে ফিলিপাইন থেকে অংশগ্রহণকারীদের ৮৩ দশমিক ৩০ শতাংশ এবং ভিয়েতনামের অংশগ্রহণকারীদের ৭৯ শতাংশ চীনের চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে মিত্রতা বজায় রাখার পক্ষে।

লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্স অ্যান্ড পলিটিক্যাল সায়েন্সের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক এলএসই আইডিয়াস এর বিশেষজ্ঞ কেনড্রিক চ্যান বলেন, "জনগণের ইতিবাচক ধ্যানধারণার ভিত্তিতে চীন দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় কিছুটা এগিয়েছে ঠিকই– কিন্তু এটাও মনে রাখতে হবে, বেইজিংয়ের বেশিরভাগ সমুদ্রসীমা বিরোধই এই অঞ্চলের দেশগুলোর সাথে।" 

এই বাস্তবতায়, জরিপের প্রায় অর্ধেক উত্তরদাতাই মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মতো বাহ্যিক শক্তির চাপ ঠেকানোর জন্য আসিয়ান দেশগুলোকে যথেষ্ট ঐক্য ও অদম্যতা গড়ে তুলতে হবে।   


অনুবাদ: নূর মাজিদ


 

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.