হেলানো টাওয়ারের ধসে পড়া ঠেকাতে ইতালির প্রাণপণ চেষ্টা

আন্তর্জাতিক

সিএনএন
29 March, 2024, 12:50 pm
Last modified: 24 April, 2024, 05:37 pm
ইতালির বোলোনিয়ার তোরে গ্যারিসেন্ডা টাওয়ারটি ৩.৯ ডিগ্রি কোণে হেলে পড়ায় বিশেষজ্ঞরা টাওয়ারটির পতন ঠেকাতে সেসব যন্ত্রপাতি ব্যবহার করবেন যা পিসার টাওয়ারের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়েছিল।

ইতালির বোলোনিয়ার তোরে গ্যারিসেন্ডা টাওয়ারটি পিসার বিখ্যাত টাওয়ারের মতো হেলে পড়েছে। এটি ১২ শতকে নির্মাণ করা হলেও কয়েক শতাব্দী পরে এটি কাত হতে শুরু করে।

বর্তমানে টাওয়ারটি ৩.৯ ডিগ্রি কোণে হেলে পড়েছে যা পিসার টাওয়ারের থেকে সামান্য বেশি। এটির পতন ঠেকাতে বিশেষজ্ঞরা সেসব যন্ত্রপাতি ব্যবহার করবেন যা পিসার টাওয়ারের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়েছিল। গত বছর টাওয়ারের আশেপাশের এলাকা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল কারণ বিজ্ঞানীরা নড়াচড়া এবং ফাটলের লক্ষণগুলো পরীক্ষা করে দেখেছেন। তারা জানিয়েছেন, এটি ভেঙে পড়ার উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে।

বোলোনিয়ার মেয়র মাত্তেও লাপোর বুধবার (২৭ মার্চ) ঘোষণা করেছেন, পিসার টাওয়ারটিকে সংরক্ষণ করার জন্য আগে ব্যবহৃত তোরণ এবং তার সহ স্টিলের মাচা টোরে গ্যারিসেন্ডা টাওয়ারটি রক্ষা করতে ব্যবহার করা হবে।

লাপোর একটি সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, "এতে টাওয়ারটিকে সুরক্ষিত করা সম্ভব হবে।" ফলে গ্যারিসেন্ডা টাওয়ারের পাশে অবস্থিত অ্যাসিনেলি টাওয়ারটি আবারো জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া যাবে

মেয়র জানিয়েছেন, পিসার টাওয়ারের জন্য ব্যবহৃত সরঞ্জামগুলো তোরে গ্যারিসেন্ডায় ফিট করতে প্রায় ছয় মাস সময় লাগবে। পুরো পরিকল্পনাটি বাস্তবায়ন করতে প্রায় ১৯ মিলিয়ন ইউরো (প্রায় ২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) খরচ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

পিসার টাওয়ারের সরঞ্জামগুলো গ্যারিসেন্ডা টাওয়ারে কীভাবে ব্যবহার করা হবে তার একটি রেন্ডারিং। ছবি: কমিউন ডি বোলোনিয়া

প্রথমে পিসাতে ব্যবহৃত দুটো ইস্পাতের তোরণ গ্যারিসেন্ডার জন্য বসানো হবে এবং সমন্বয় করা হবে। তারপরে টাওয়ারের রাজমিস্ত্রিরা মূল নির্মাণ সামগ্রীর মতো চুন জাতীয় মর্টারের ইনজেকশন ব্যবহার করে এটিকে শক্তিশালী করবেন। এর পরে টাওয়ারের সাথে সংযুক্ত তোরণ এবং মাচায় থাকা তারগুলো শক্ত করা হবে। এতে টাওয়ারের ভিত্তির উপর চাপ কমে আসবে।

পিসার তুলনায় কম পরিচিত হলেও তোরে গ্যারিসেন্ডা দীর্ঘকাল ধরে বোলোনিয়ার একটি পর্যটন আকর্ষণ। টাওয়ারটির অস্বাভাবিক ভাবে হেলে পড়ার জন্য দান্তে আলিগিয়েরি তার ১৪ শতকের বিখ্যাত মহাকাব্য 'ডিভাইন কমেডি'-তে এর উল্লেখ করেছেন। এটির পাশে অবস্থিত অ্যাসিনেলি টাওয়ারটিও অন্যতম পর্যটন আকর্ষণ যা ১.৩ ডিগ্রি কোনে হেলে আছে।

পিসার টাওয়ারটি ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের স্বীকৃতিপ্রাপ্ত। ১৯৯০-এর দশকের গোড়ার দিকে এটি ৪.৫ ডিগ্রি হেলে পড়েছিল। এর পতন ঠেকাতে আন্তর্জাতিকভাবে প্রচেষ্টা শুরু হয়েছিল যা ১৯৯৩ সালে শুরু হয়ে আট বছর ধরে চলেছিল।

বর্তমানে পিসার হেলানো টাওয়ার স্টিলের তোরণগুলোর জন্য টিকে আছে এবং আশা করা হচ্ছে গ্যারিসেন্ডা টাওয়ারটিকেও একই ভাবে রক্ষা করা যাবে।

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.