শুধু ভারতেই নয়, বিশ্বের সবচেয়ে বড় জালিয়াতি নির্বাচনী বন্ড: ভারতের অর্থমন্ত্রীর স্বামী

আন্তর্জাতিক

ইন্ডিয়া ডটকম 
28 March, 2024, 09:05 pm
Last modified: 28 March, 2024, 09:34 pm
পারাকলা প্রভাকর নির্বাচনী বন্ডের সমালোচনায় বলেন, বর্তমানে এনিয়ে যে আলোড়ন তৈরি হয়েছে, তা আগামীতে আরো বাড়বে। সবাই বুঝতে পারছে এখানেই শেষ নয়, একারণে ভোটের ময়দানেও (কেন্দ্রে) ক্ষমতাসীন দল জনগণের দেওয়া সাজা পাবে।

নির্বাচনী বন্ড বিশ্বের সবচেয়ে বড় দুর্নীতি, ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)-কে যার চরম খেসারত দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন সেদেশের একজন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ পারাকলা প্রভাকর। ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন তাঁর স্ত্রী। 

এর আগে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ভারতে রাজনৈতিক দলগুলোকে বেনামে আর্থিক অনুদান দেয়ার জন্য জারিকৃত 'নির্বাচনী বন্ড' বাতিল করতে বলেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। এই বন্ডের বৈধতা প্রশ্নে দায়ের করা মামলার রায়ে এটিকে অসাংবিধানিক আখ্যা দেন আদালত। 

পারাকলা প্রভাকর অন্ধপ্রদেশ বিজেপির সাবেক মুখপাত্রও। নির্বাচনী বন্ডের সমালোচনায় তিনি বলেন, বর্তমানে এনিয়ে যে আলোড়ন তৈরি হয়েছে, তা আগামীতে আরো বাড়বে। সবাই বুঝতে পারছে এখানেই শেষ নয়, একারণে ভোটের ময়দানেও (কেন্দ্রে) ক্ষমতাসীন দল জনগণের দেওয়া সাজা পাবে।  

গত ১৮ মার্চ ভারতে নির্বাচনী বন্ডের সব তথ্য আগামী ২১ মার্চের মধ্যে প্রকাশ করার নির্দেশ দেন সুপ্রিম কোর্ট। নির্দেশ মেনে এরমধ্যেই নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত তথ্য নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে ভারতের নির্বাচন কমিশন (ইসিআই)। এতে দেখা যাচ্ছে, এই বন্ডের সবচেয়ে বড় সুবিধা পেয়েছে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি। 

ইসিআই এর তথ্যমতে, নির্বাচনী বন্ড বিক্রি থেকে সর্বোচ্চ ৬ হাজার ৯৮৬ কোটি ৫০ লাখ রুপির তহবিল পেয়েছে বিজেপি। ২০১৯ সালের ১২ এপ্রিল থেকে ২০২৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দলটি এসব তহবিল পায়। দ্বিতীয় স্থানে আছে, পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারে ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেস (টিএমসি)। নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে দলটি এক হাজার ৩৯৭ কোটি রুপির তহবিল পেয়েছে। তারপরেই আছে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস। দেশটির প্রধান এই বিরোধী দল পেয়েছে এক হাজার ৩৩৪ কোটি রুপি। ভারত রাষ্ট্র সমিতি (বিআরএস) নামক আরেকটি দল পেয়েছে এক হাজার ৩২২ কোটি রুপির তহবিল। 

ফেব্রুয়ারি মাসে দেওয়া রায়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট নির্বাচনী বন্ড কর্মসূচি বাতিল ঘোষণা করেন, এবং অবিলম্বে স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া (এসবিআই)-কে এই বন্ড জারি বন্ধ করার নির্দেশ দেন। 

লাইভমিন্টের এক প্রতিবেদন ভারতের নাগরিক অধিকার কর্মীদের বরাতে জানায়, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই, এনফোর্সমেন্ট অধিদপ্তর ও আইটি বিভাগ ৪১টি কোম্পানির বিরুদ্ধে তদন্ত করছে। এসব প্রতিষ্ঠান নির্বাচনী বন্ড কিনে বিজেপিকে দুই হাজার ৭৪১ কোটি রুপি দেয়। এরমধ্যে এক হাজার ৬৯৮ কোটি রুপি দেওয়া হয় সরকারি এসব সংস্থার অভিযানের পর। 

দিনকয়েক আগে সিনিয়র একজন আইনজীবী অ্যাডভোকেট প্রশান্ত ভূষণ বলেন, "২০২৩ সালের নভেম্বরে আইটি দপ্তরের অভিযানের তিন মাসের মধ্যে বিজেপিকে ৬০ কোটি রুপি দেয় ফিউচার গেমিং নামের একটি কোম্পানি। একইভাবে ইডি'র অভিযানের তিন মাসের মধ্যেই বিজেপিকে পাঁচ কোটি রুপি অরবিন্দ ফার্মা।"

এসব ঘটনা সামনে আসার পরে ভারতের বিরোধী দলগুলো নির্বাচনী বন্ডকে 'দুর্নীতির বৈধকরণ' বলে সমালোচনা করছে। অন্যদিকে, বিজেপির দাবি, বন্ড বাতিলের ফলে রাজনীতিতে ফের কালো টাকার দৌরাত্ম্য দেখা দেবে।  

 

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.