এশীয় বিলিয়নিয়ারদের রাজধানী এখন মুম্বাই, সেরা ধনী মুকেশ আম্বানি

আন্তর্জাতিক

নিক্কেই এশিয়া 
26 March, 2024, 07:55 pm
Last modified: 27 March, 2024, 09:04 pm
অর্থনীতির দৃঢ় বিকাশের ফলে বিলিয়নিয়ারের সংখ্যাও বেড়েছে দেশটিতে। এবারের তালিকায় ভারতের আরো ৯৪ জন অতিধনী যুক্ত হয়ে দেশটির মোট বিলিয়নিয়ারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৭১ জনে। ২০১৩ সালের পরে যা সর্বোচ্চ।    

প্রথমবারের মতো বেইজিংকে টপকে এশীয় বিলিয়নিয়ারদের রাজধানী হয়ে উঠেছে ভারতের বাণিজ্যিক রাজধানী মুম্বাই। অর্থাৎ, এ শহরেই এশিয়ার সবচেয়ে বেশি বিলিয়নিয়ারদের বসবাস। 

"হুরুন গ্লোবাল রিচ লিস্ট ২০২৪" শীর্ষক তালিকাটি গতকাল সোমবার (২৬ মার্চ) চীনের সাংহাই-ভিত্তিক হুরুন রিসার্চ ইনস্টিটিউট প্রকাশ করেছে। সেখানেই এ তথ্য জানানো হয়েছে।

হুরুনের তালিকা অনুযায়ী, বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বিলিয়নিয়ার বসবাস করেন নিউইয়র্কে (১১৯ জন), এরপরেই রয়েছে লন্ডন (৯৭), আর এশিয়ার ভেতরে শীর্ষে রয়েছে মুম্বাই। যেখানে বাস করছেন ৯২ জন বিলিয়নিয়ার।

ভারতে এই অতি-ধনীদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছেন রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান মুকেশ আম্বানি এবং আদানি গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা গৌতম আদানি। ভারতের সাড়ে ৭ শতাংশের মতো উচ্চ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির বিশাল সুবিধাভোগী হয়েছেন দেশটির ধনকুবেররা।  

অর্থনীতির দৃঢ় বিকাশের ফলে বিলিয়নিয়ারের সংখ্যাও বেড়েছে দেশটিতে। এবারের তালিকায় ভারতের আরো ৯৪ জন অতিধনী যুক্ত হয়ে দেশটির মোট বিলিয়নিয়ারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৭১ জনে। ২০১৩ সালের পরে এই বৃদ্ধিই সর্বোচ্চ।    

এর ব্যাখ্যায় হুরুন ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান এবং প্রতিবেদনের প্রধান গবেষক রুপার্ট হগওয়ার্ফ বলেন, "ভারতের অর্থনীতির ওপর (বিনিয়োগকারীদের) আস্থা রেকর্ড স্তরে পৌঁছেছে।" অর্থাৎ, এতে পুঁজিবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ আসছে। ভারতের বড় বড় কোম্পানিগুলো যার বড় অংশ পাচ্ছে, এতে কোম্পানিগুলোর স্বত্বাধিকারীদের সম্পদমূল্যও বাড়ছে দিনকে দিন। 

অবশ্য এশিয়ার মধ্যে নির্দিষ্ট একটি শহরের হিসাব বাদ দিলে, বৈশ্বিকভাবে মোট বিলিয়নিয়ারের সংখ্যায় সবার উপরে আছে চীন। চীনে মোট ৮৪৪ জন বিলিয়নিয়ার থাকার কথা জানিয়েছে হুরুন। তবে দেশটির আবাসন ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাত প্রবৃদ্ধি অর্জনে হিমশিম খাচ্ছে, পুঁজিবাজারের অবস্থাও দুর্বল– ফলে ২০২২ সালের চেয়ে ১৫৫ জন বিলিয়নিয়ার কমেছে চীনে।     

২০২৩ সালে বিলিয়নিয়ার সংখ্যায় চীনের কাছাকাছি এগিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের আরো ১০৯ অতি-ধনী এসময় বিলিয়নিয়ারদের তালিকায় যুক্ত হয়েছেন। এতে যুক্তরাষ্ট্রের মোট বিলিয়নিয়ারের সংখ্যা পৌঁছেছে ৮০০ জনে। 

ভারতের নতুন বিলিয়নিয়ারদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিরা হচ্ছেন– আর্থিক প্রতিষ্ঠান স্টারলিংক ইনভেস্টমেন্টকে নেতৃত্বদানকারী রোহিকা সাইরাস মিস্ত্রি এবং এশিয়ান পেইন্টের ইনা অশ্বিন দানি।

প্রতিবেদন তৈরির সময়, ভারতের সেরা ধনী মুকেশ আম্বানির মোট সম্পদমূল্য ছিল ১১৫ বিলিয়ন ডলার। আর গৌতম আদানির ক্ষেত্রে তা ছিল ৮৬ বিলিয়ন ডলার।

চীনের অতি-ধনীদের মধ্যে তালিকায় শীর্ষস্থান অধিকার করেন, বোতলজাত পানির পরিবেশক নংফু স্প্রিং- এর চেয়ারম্যান ঝং শানশান। ৬৩ বিলিয়ন ডলারের সম্পদমূল্য নিয়ে তিনি টানা চতুর্থবারের মতো শীর্ষস্থান ধরে রেখেছেন।  

তবে দ্বিতীয় স্থান উঠে এসে চমক দেখিয়েছেন কলিন হুয়াং। তিনি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান পিন্ডুয়োডো'র প্রতিষ্ঠাতা। কলিন টেনসেট হোল্ডিং এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও পোনি মা'কে ছাড়িয়ে গেছেন সম্পদমূল্যে। ফলে তৃতীয় স্থানে নেমে এসেছেন পোনি মা।  

কলিন হুয়াংয়ের সম্পদমূল্য ৭১ শতাংশ বেড়ে ৫৩ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, তাঁর কোম্পানির ব্যবসা ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রেও ভালো অগ্রগতি করায়।  

তবে চীনা বিলিয়নিয়ারদের নিয়ন্ত্রণে থাকা সম্পদ সার্বিকভাবে ১৫ শতাংশ কমেছে। হগওয়ার্ফ জানান, দুই বছর আগের হুরুনের তালিকায় থাকাদের মধ্যে অনেকেরই অবস্থান পরিবর্তন হয়েছে। 
 
তিনি বলেন, "গত কয়েক বছরে চীনে সম্পদ তৈরির ক্ষেত্রে গভীর পরিবর্তন এসেছে, এই সময়ে আবাসন ও নবায়নযোগ্য খাত থেকে বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ অর্জন কমেছে।"

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.